পুরো দেশ এখন নির্বাচন নিয়ে ‘মাতোয়ারা’ বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।
তাই এখন থেকেই নির্বাচন প্রক্রিয়াকে স্বচ্ছতার সঙ্গে দৃশ্যমান করতে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
শুক্রবার নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে প্রশাসন ও পুলিশ কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ কর্মসূচির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, “নির্বাচন নিয়ে পুরো দেশ মাতোয়ারা হয়ে আছে। পক্ষে বিপক্ষে প্রতিদিন বক্তব্য হচ্ছে। একটা ডাইমেনশনও পেয়ে গেছে। ভোট পর্যবেক্ষণে বিভিন্ন দেশও আসছে। পুরো জাতি তাকিয়ে আছে।”
কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে সিইসি বলেন, “নির্বাচন কমিশনের একটা কাজ হচ্ছে নির্বাচন প্রক্রিয়াটাকে যতদূর সম্ভব দৃশ্যমান করে তোলা, স্বচ্ছতা সৃষ্টি করা। স্বচ্ছতা সৃষ্টি করলে সম্ভাব্য অপপ্রচার ঢাকা পড়ে যাবে। স্বচ্ছতা মানে সত্যের স্বচ্ছতা, মিথ্যের স্বচ্ছতা। যদি অনাচার হয় তুলে ধরতে হবে।
“আমরা কমিশন থেকে দেখতে চাই- এমনভাবে দায়িত্ব পালন করবেন আপনাদের প্রজ্ঞা দিয়ে, যাতে সত্যিকার অর্থে নির্বাচনটা অবাধ-নিরপেক্ষ হয়। আমাদের মেসেজটা হচ্ছে নির্বাচনটা শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠু, সুশৃংখল করতে হবে। সুশৃঙ্খলা আমি করাতে পারব না, আপনাদের করাতে হবে।”
তিনি বলেন, “ভোটের মূল কাজ ডিসি ও পুলিশ সুপারদেরকে করতে হবে। সমন্বয় করে নির্বাচনটা তুলে আনতে হবে। ক্ষমতা, শক্তি নয়, দায়িত্ববোধ নিয়ে কাজটা করতে হবে। দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে যদি ক্ষমতা প্রয়োগের প্রয়োজন হয় তাহলে তা করতে হবে।
"আমাদের মূল কাজ হচ্ছে জনগণের ভোটাধিকারের স্বাধীনতা যেন ব্যাহত না হয়। সবাই যেন ভোট দিতে পারে। ভোটের দিনের পুরো জাতি দেখবে, পরিবেশ গণমাধ্যম তুলে ধরবে। ভোটার লাইনে দাঁড়িয়ে আছে, ভোট কক্ষ থেকে বেরিয়ে আসছে। কিন্তু ভোটকক্ষের ভিতরে যদি কেউ সিল মারতে থাকে তাহলে আমাদের নিরপেক্ষতা ও প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে যেতে পারে, কেন এটা হল।”
ভোট কর্মকর্তাদের নির্বাচনে নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালনেরও নির্দেশ দেন তিনি।
নির্বাচনী আইন, বিধিমালা, নির্বাচন পরিচালনা বিধি, আচরণবিধিসহ সার্বিক বিষয় তুলে ধরার পাশাপাশি সংশ্লিষ্টদের দায়িত্ব, কর্তব্য ও নির্বাচন ব্যবস্থাপনায় করণীয় বিষয় তুলে ধরতে এ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছে নির্বাচন কমিশন।
সেপ্টেম্বর থেকে প্রশিক্ষকদের প্রশিক্ষণসূচি শুরু হয়। এ ধারাবাহিকতায় ১৪ ও ১৫ অক্টোবর দেশের ৩২টি জেলার ডিসি, এসপি, চার বিভাগে বিভাগীয় কমিশনার ও মেট্রোপলিট্রন পুলিশ কমিশনারসহ মোট ১১৬ জন নিয়ে প্রথম ধাপে প্রশিক্ষণ কর্মসূচি সম্পন্ন হয়েছে।
বাকি ৩২ জেলার সংশ্লিষ্টদের প্রশিক্ষণ দুর্গা পূজার কারণে ২৮ ও ২৮ অক্টোবর থেকে পিছিয়ে ২ ও ৩ নভেম্বর স্থানান্তর করা হয়। কিন্তু বিএনপির অবরোধ কর্মসূচির কারণে তা স্থগিত করা হয়।
স্থগিত সেই প্রশিক্ষণই হবে শুক্র ও শনিবার। এতে ৩২ জেলার ডিসি ও এসপি, বিভাগীয় কমিশনার, পুলিশ কমিশনারসহ মোট ১১৪ জন অংশ নেবেন।