উপযুক্ত শাস্তি হয়নি- এমন আবেদনে এ আদেশ এল আদালতের।
Published : 26 Jul 2023, 11:46 PM
নতুন ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থী ফুলপরী খাতুনকে নির্যাতনে জড়িত ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত নেত্রীসহ পাঁচ শিক্ষার্থীর সাজা পুনর্নির্ধারণের আদেশ দিয়েছে হাই কোর্ট।
তাদের উপযুক্ত শাস্তি হয়নি দাবি করে করা একটি রিট আবেদনে বুধবার বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট গাজী মো. মহসীন ও অ্যাডভোকেট আবদুল্লাহ আল মামুন।
গাজী মহসীন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘কোড অব কন্ডাক্ট’র বিধি ১ এর ৪, ৫, ৭ ধারা এবং বিধি ২ এর ৮ ধারা অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে উপাচার্যকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। আগামী ২৩ অগাস্টের মধ্যে আদেশ কার্যকর করে আদালতকে জানাতে বলা হয়েছে।
গত ১৫ জুলাই ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত নেত্রী সানজিদা চৌধুরী অন্তরাসহ পাঁচ শিক্ষার্থীকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করে। এ সময়কালে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস-পরীক্ষাসহ কোনো কার্যক্রমে অংশ নিতে পারবেন না।
বহিষ্কৃত অন্য শিক্ষার্থীরা হলেন- চারুকলার হালিমা আক্তার ঊর্মি, আইন বিভাগের ইসরাত জাহান মিম, ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিংয়ের তাবাসসুম ইসলাম ও একই বিভাগের মুয়াবিয়া জাহান।
সানজিদা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহসভাপতি ছিলেন। অন্যরা ছাত্রলীগের কর্মী। নির্যাতনের ঘটনায় পাঁচজনকেই সংগঠন থেকে বহিষ্কার করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।
ইবি ছাত্রী নির্যাতন: ছাত্রলীগ নেত্রীসহ ৫ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার
তদন্ত কমিটিকে ‘নির্যাতনের’ বর্ণনা দিয়েছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই শিক্ষার্থী
ইবির হলে ছাত্রীকে নির্যাতনের অভিযোগ ছাত্রলীগ নেত্রীর বিরুদ্ধে
চলতি বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি রাতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের গণরুমে নির্যাতিত হওয়ার অভিযোগ করেন ফিন্যান্স বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্রী ফুলপরী খাতুন।
তিনি বলেন, সানজিদা চৌধুরীর নেতৃত্বে ওই ছাত্রীরা তাকে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ ও গালাগাল করেন। ওই ঘটনা কাউকে জানালে মেরে ফেলার হুমকি দেন।
ফুলপরীর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর, হলের প্রাধ্যক্ষ ও ছাত্র উপদেষ্টার কাছে লিখিত অভিযোগ দেন। এনিয়ে রিট আবেদন হলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠনের পাশাপাশি কিছু নির্দেশনা দিয়েছিল হাই কোর্ট।
সেই তদন্তে নির্যাতনের সত্যতা মেলার পর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়। গত ১৫ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শৃঙ্খলা কমিটির সভায় তাদের শাস্তির সিদ্ধান্ত হয়।
এরপর রিট আবেদনের শুনানিতে গত ১৯ জুলাই গাজী মহসিন বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনজীবী বলেছেন, ‘যথোপযুক্ত’ শাস্তি দেওয়া হয়েছে। আমি বলেছি, উপযুক্ত শাস্তি হয়নি।”
বিশ্ববিদ্যালয় আইনের উল্লেখ করে তিনি বলেন, “এতে বলা আছে, উপাচার্য প্রথমে শাস্তি হিসেবে ৫০০ টাকা জরিমানা এবং এক বছরের জন্য বহিষ্কার করবেন। এরপর তিনি যদি মনে করেন শাস্তি অপরাধের তুলনায় কম হয়েছে, তাহলে তিনি এটা ডিসিপ্লিনারি কমিটিতে পাঠাবেন।
“কিন্তু ভিসি নিজে শাস্তি না দিয়ে সরাসরি ডিসিপ্লিনারি কমিটিতে পাঠিয়ে কমিটির মাধ্যমে শাস্তি দিয়েছেন। এতে আইনের ব্যত্যয় হয়েছে।”