সিটিতে না পেলেও জাতীয় নির্বাচনে সবাইকে চাই: রাশেদা

“নির্বাচন কমিশনের ওইভাবে কাউকে আনার সুযোগ নেই। কেউ না আসলেও নির্বাচন করতে হবে,” বলেন এ নির্বাচন কমিশনার।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 May 2023, 01:37 PM
Updated : 29 May 2023, 01:37 PM

সিটি করপোরেশন নির্বাচনে না পেলেও সব দলকে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা।

তিনি বলেছেন, সংসদ নির্বাচনে ব্যালটে ভালো ভোট করার বিষয়ে সর্বোচ্চ পদক্ষেপ নেওয়া হবে। কোথাও অনিয়ম হলে পরিস্থিতি বুঝে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন এই নির্বাচন কমিশনার।

তিনি বলেন, “সবাই ভোটে এলে আমরা অবশ্যই ভালো প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন পাব।… আহ্বান করি যারা নির্বাচনে আসছেন না, তারা আসুক, নির্বাচন করুক।”

নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলনে থাকা বিএনপি ও সমমনা দলগুলো আগামী জাতীয় নির্বাচন বর্জনের হুমকি দিয়ে রেখেছে। একই দাবিতে ২০১৪ সালে তারা ভোট বর্জন করে নির্বাচন ঠেকানোর চেষ্টা করেছিল। তবে ২০১৮ সালে দলীয় সরকারের অধীনেই ভোটে অংশ নেয়। এবার পুরনো দাবিতে ফিরে গেছে তারা।

সবাইকে ভোটে চাইলেও সেটি নিশ্চিত করতে তাদের পক্ষ থেকে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়ার ‘সুযোগ নেই’ বলে এক প্রশ্নে মন্তব্য করেন রাশেদা। তিনি বলেন, নির্বাচনে কে আসবে, কে আসবে না– এটা তাদেরই ব্যাপার।

“যিনি প্রার্থী হবেন বা হতে চান না, এটা একদমই নিজস্ব ব্যাপার। নির্বাচন কমিশনের ওইভাবে কাউকে আনার সুযোগ নেই। কেউ না এলেও নির্বাচন করতে হবে। এজন্য তো আমরা স্টপ হয়ে যেতে পারি না।”

সব নির্বাচনই অবাধ ও সুষ্ঠু হবে বলেও আশ্বাস দেন রাশেদা। তিনি বলেন, “সনাতন পদ্ধতিতে যেটা আগে থেকে হয়ে আসছে, ব্যালটে পেপারে ভোট, এগুলো যেন আমরা আরো সুন্দরভাবে করতে পারি, সেজন্য আমরা পন্থা অবলম্বন করব। যে পদক্ষেপ নেওয়া দরকার সেগুলো আমরা নেব।”

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে তিনি বলেন, “নির্বাচনে কতটুকু কী হয়েছে, জনগণ তার রায় দিয়ে দেবে। কমিশন চায়-যতগুলো নির্বাচন হবে, সবগুলো যেন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়। মানুষ যেন আসে এবং ভোট দিয়ে চলে যেতে পারে এটাই প্রধান উদ্দেশ্য।

“সিটি কেন, জাতীয় নির্বাচনেও আমরা একই নীতিতে থাকব। পরিস্থিতি ডিমান্ড করলে আমরা আরো কঠোর হব। আমাদের একটাই ইচ্ছা– অবাধ, সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন করব।”

গাজীপুরে ভোটপরবর্তী গোলযোগ তদন্তের নির্দেশ

গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ৫৭ নম্বর ওয়ার্ডে ‘নির্বাচন পরবর্তী সংহিসতায় টঙ্গীতে নারী-পুরুষ ঘরছাড়ার’ বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে গাজীপুর পুলিশ প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

কমিশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ দেখে এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সংবাদমাধ্যমে আসা প্রতিবেদনে বলা হয়, নির্বাচন হওয়ার পর থেকে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে টঙ্গী শিল্পাঞ্চল। বিভিন্ন ওয়ার্ডে পরাজিত প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের ওপর দফায় দফায় হামলা ভাঙচুর চলছে। ৫৭ নম্বর ওয়ার্ডের টঙ্গী বাজার হাজীর মাজার বস্তি এলাকায় নির্বাচনের পর দিন সকাল থেকে শনিবার রাত পর্যন্ত পরাজিত কাউন্সিলর প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের ওপর দফায় দফায় হামলা, মারধর, ভাঙচুর ও হুমকির ঘটনা ঘটেছে। হামলার অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। আতঙ্কে ঘরছাড়া হয়েছেন অর্ধশতাধিক নারী-পুরুষ। এসব ঘটনায় নয়টি অভিযোগ করা হয়েছে টঙ্গী পূর্ব ও পশ্চিম থানায়।

গাজীপুর পুলিশ প্রশাসনকে পাঠানো ইসির চিঠিতে বলা হয়-নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার তারিখ থেকে নির্বাচনের ফল গেজেটে প্রকাশের তারিখ পর্যন্ত আচরণ বিধিমালার বিধি ১৮ অনুসারে কোনো ব্যক্তি নির্বাচন উপলক্ষে কোনো নাগরিকের জমি, ভবন বা অন্য কোনো স্থাবর বা অস্থাবর সম্পত্তির কোনোরূপ ক্ষতিসাধন, অনভিপ্রেত গোলযোগ ও উচ্ছৃঙ্খল আচরণে কারও শান্তিভঙ্গ করতে পারবে না। এ ধরনের কার্যক্রম নির্বাচনী আইন, বিধিমালা, আচরণ বিধিমালা ভঙ্গ ছাড়াও প্রচলিত ফৌজদারি আইনের পরিপন্থি।

গত ২৫ মে অনুষ্ঠিত গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আজমত উল্লাহ খানকে হারিয়ে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের মা জায়েদা খাতুন।