আদালত কর্তৃক তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার আইনের ক্ষমতাবলে প্রধান বিচারপতি এ ‘প্র্যাকটিস নির্দেশনা’ জারি করেছেন।
Published : 20 Aug 2023, 11:15 PM
আদালতে হাজির না হয়েও দেশ কিংবা বিদেশের যে কোনো স্থান থেকে বিচারিক কাজে অংশ নেওয়া যাবে।
অডিও-ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বিচারিক আদালতে এই বিচার কাজ পরিচালনা করা যাবে। তা সমন্বয়ের দায়িত্বে থাকবেন একজন।
‘আদালত কর্তৃক তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার আইন, ২০২০’ এর ৫ ধারার ক্ষমতাবলে রোববার প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী এ ‘প্র্যাকটিস নির্দেশনা’ দিয়েছেন।
প্রধান বিচারপতি পরবর্তী আদেশ না দেওয়া পর্যন্ত এ নির্দেশনা বলবৎ থাকবে বলে সুপ্রিম কোর্টের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।
‘আদালত কর্তৃক তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার আইন, ২০২০’ এর ৫ ধারায় বলা হয়েছে: “ধারা ৩ ও ৪ এর উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ বা, ক্ষেত্রমত, হাই কোর্ট বিভাগ, প্রয়োজন অনুসারে, সময় সময়, প্র্যাকটিস নির্দেশনা (বিশেষ বা সাধারণ) জারি করিতে পারিবে।”
সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. গোলাম রব্বানী স্বাক্ষরিত প্রধান বিচারপতির এই নির্দেশনায় বিচার পদ্ধতি, অংশগ্রহণকারী ও সমন্বয়কারী সম্পর্কে বিস্তারিত বলা হয়েছে।
আদালত কক্ষ থেকে কোনো স্থানে অবস্থানরত মামলার কোনো পক্ষ, সাক্ষী, অভিযুক্ত ব্যক্তি, আইনজীবী, বিশেষজ্ঞ এবং মামলার সংশ্লিষ্ট কোনো ব্যক্তির তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে অডিও-ভিজুয়াল পদ্ধতিতে মামলায় উপস্থিতি, সাক্ষ্য গ্রহণ ও শুনানিসহ সকল বিচারিক কার্যক্রমে অংশ গ্রহণ করতে পারবে।
নির্দেশনায় কয়েকটি শব্দের অর্থ বর্ণনা করা হয়েছে। বলা হয়েছে সময় সম্পর্কেও।
‘দূরবর্তীপ্রান্ত’ বলতে এমন একটি স্থান বোঝানো হয়েছে, যেখানে মোকদ্দমার কোনো পক্ষ, সাক্ষী, আসামি বা আইনজীবী শারীরিকভাবে উপস্থিত থেকে অডিও-ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আদালতের কার্যক্রমে উপস্থিত থাকবেন।
এই দূরবর্তীপ্রান্ত দেশের বাইরে, কারাগার, হাসপাতাল, সেইফ হোম, প্রত্যায়িত প্রতিষ্ঠান, শিশু উন্নয়ন কেন্দ্র, নিরাপত্তামূলক হেফাজত, সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড অফিস, ফরেনসিক ল্যাবরেটরি ছাড়াও অন্য যে কোনো স্থান হতে পারে।
সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের মনোনীত কোনো ব্যক্তি সমন্বয়কারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। বিদেশে বাংলাদেশের কনস্যুলেট/দূতাবাস/হাই কমিশনের একজন কর্মকর্তা সমন্বয়কারী থাকবেন।
নির্দেশনায় বলা হয়, বিচারকাজে কনফারেন্সের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যক্তিকে নির্ধারিত সময়ের কমপক্ষে ৩০ মিনিট আগে দূরবর্তী প্রান্তে প্রস্তুত থাকতে হবে।
কোনো অননুমোদিত রেকর্ডিং ডিভাইস ব্যবহার করা যাবে না। অডিও-ভিডিও কনফারেন্স চলাকালে কোনো অননুমোদিত ব্যক্তি কনফারেন্স রুমে প্রবেশ করতে পারবে না।
যে ব্যক্তিকে পরীক্ষা করা হচ্ছে, তাকে কোনোভাবে প্ররোচিত করা, টিউটর করা, বাধ্য করা হয়নি এবং কনফারেন্স চলাকালীন সংশ্লিষ্ট আদালতের অনুমতি ছাড়া কোনো নথি, স্ক্রিপ্ট বা ডিভাইস ওই ব্যক্তিকে দেখানো যাবে না।
মামলা সংশ্লিষ্ট পক্ষ, সাক্ষী, অভিযুক্ত ব্যক্তি, আইনজীবী, বিশেষজ্ঞের আবেদনক্রমে বা আদালত স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে যে কোনো মামলার যে কোনো পর্যায়ের কার্যক্রম অডিও-ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের নির্দেশ প্রদান করতে পারবে।
আবেদন পাওয়া এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের শুনানির পর আদালত সিদ্ধান্ত নেবে অডিও-ভিডিও কনফারেন্সিং আবশ্যিক কি না। আবেদন মঞ্জুর করলে আদালত অডিও-ভিডিও কনফারেন্সের সময়সূচি নির্ধারণ করবে।
কনফারেন্সের মাধ্যমে উপস্থিতি শুনানি অথবা সাক্ষ্য গ্রহণের সুনির্দিষ্ট কারণ উল্লেখসহ সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের শনাক্তকরণের জন্য জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর, টেলিফোন নম্বর, ই-মেইল আইডি সংক্রান্ত তথ্য উল্লেখ করতে হবে।
জেলহাজতে আটক অভিযুক্ত বা সাক্ষীর ক্ষেত্রে কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আবেদন করা যাবে। অডিও-ভিডিও কনফারেন্সিং কার্যক্রম শেষ হলে আদালত আদেশনামায় কনফারেন্সের সময় ও স্থায়িত্বকাল উল্লেখ করবে এবং কনফারেন্সিংয়ে ব্যবহৃত সফটওয়্যার/প্ল্যাটফরমের নাম উল্লেখ করবে।
এছাড়া আদালত কনফারেন্সিংকালে এর অডিও, ভিডিও এবং সংযোগের বিষয়ে তার সন্তুষ্টি আদেশে উল্লেখ করবে।