Published : 05 Feb 2024, 01:04 PM
শিক্ষার্থীদের ওপর যাতে মানসিক চাপ তৈরি না হয়, সেজন্য আসন্ন এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার কেন্দ্র পরিদর্শনে যাবেন না শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী।
শিক্ষামন্ত্রীর বরাত দিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা আবুল খায়ের সোমবার এ কথা জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, “শিক্ষামন্ত্রী মনে করেন, কেন্দ্র পরিদর্শনে গেলে শিক্ষার্থীদের উপর এক ধরনের হয়রানিমূলক পরিস্থিতি ও মানসিক চাপ সৃষ্টি হয়। এক ধরনের জনদুর্ভোগও তৈরি হয়।
“তাই আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হতে যাওয়া মাধ্যমিক পরীক্ষার কেন্দ্র পরিদর্শনে না যাওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী।”
আর এর মধ্য দিয়ে পরীক্ষার প্রথম দিন মন্ত্রীদের কেন্দ্র পরিদর্শনে যাওয়ার দীর্ঘদিনের রেওয়াজ থেকে বেরিয়ে আসছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
মহিবুল হাসান চৌধুরীকে উদ্ধৃত করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, “পরীক্ষার সময় শিক্ষার্থীরা এমনিতেই একটা ট্রমার মধ্যে থাকে। কেন্দ্র পরিদর্শনের নামে ব্যাপক জনসমাগম এই মানসিক চাপ আরো বাড়িয়ে দেয়। তাছাড়া শিক্ষার্থীদের কেন্দ্রে প্রবেশে বিঘ্ন ঘটে।"
আগের বছর পর্যন্ত এসএসসি, এইচএসসি পরীক্ষার শুরুর দিন শিক্ষামন্ত্রীরা কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন। গত সরকারের সময় শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনির সঙ্গে শিক্ষা উপমন্ত্রী নওফেলকেও কেন্দ্র পরিদর্শনে দেখা গেছে।
পরিদর্শনের সময় সরকারি কর্মকর্তা, আইনশৃঙ্খলাবাহিনী ও গণমাধ্যমকর্মীরাও থাকেন। এত মানুষের উপস্থিতিতে পরীক্ষা কেন্দ্র এলাকায় জটলা তৈরি হয়। শিক্ষামন্ত্রী ছাড়াও বিভিন্ন জেলায় সংসদ সদস্যদেরও কেন্দ্র পরিদর্শন করতে দেখা গেছে এতদিন।
আইন অনুযায়ী কেন্দ্র পরিদর্শক ছাড়া অন্য কোনো ব্যক্তির যে কেন্দ্রে প্রবেশের অনুমতি নেই, সেটি স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী।
তিনি বলেন, "পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ছাড়া অন্য কোন ব্যক্তি যেন পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশ না করে, সে বিষয়ে সবার সচেতন থাকা উচিত।"
দেশের ২৯ হাজার ৭৩৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৩৭০০টি কেন্দ্রে, ২০ লাখ ২৪ হাজার ১৯২ জন পরীক্ষার্থী এবারের পরীক্ষায় অংশ নেবে।
বরাবরের মতই পরীক্ষা চলাকালে কেন্দ্রের ২০০ গজের মধ্যে শিক্ষক, ছাত্র ও কর্মচারীদের মোবাইল, মোবাইল ফোনের সুবিধাসহ ঘড়ি, কলম এবং পরীক্ষা কেন্দ্রে ব্যবহারের অনুমতিবিহীন যে কোনো ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার নিষিদ্ধ থাকবে, নির্দেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কেন্দ্র সচিবকেও এমন ফোন ব্যবহার করতে হবে, যাতে ছবি তোলা বা ইন্টারনেট ব্যবহারের সুবিধা নেই।
অননুমোদিত ফোন বা ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে মন্ত্রণালয়।
ট্রেজারি-থানা থেকে প্রশ্নপত্র গ্রহণ ও পরিবহন কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তা, শিক্ষক, কর্মচারীরা কোনো ফোন ব্যবহার করতে পারবেন না এবং প্রশ্নপত্র বহন কাজে কালো কাচের মাইক্রোবাস বা এ ধরনের কোন যানবাহন ব্যবহার করা যাবে না।
প্রত্যেক কেন্দ্রের জন্য একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও একজন ট্যাগ অফিসার নিয়োগ দেওয়ারও সিদ্ধান্ত হয় সভায়। ট্যাগ অফিসার ট্রেজারি, থানা হেফাজত থেকে কেন্দ্র সচিবসহ প্রশ্ন বের করে পুলিশ পাহারায় সব সেটের প্রশ্ন কেন্দ্রে নিয়ে যাবেন।
পরীক্ষা শুরু হওয়ার ২৫ মিনিট আগে প্রশ্নের সেট কোড ঘোষণা করা হবে। সে অনুযায়ী কেন্দ্র সচিব, ট্যাগ অফিসার ও পুলিশ কর্মকর্তার স্বাক্ষরে প্রশ্নপত্রের প্যাকেট বিধি অনুযায়ী খুলবেন।