শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান, নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের পক্ষে আংশিক যুক্তি উপস্থাপন শেষে বাকি শুনানির জন্য ২৬ নভেম্বর দিন রেখেছে আদালত।
ঢাকার দৈনিক বাংলা মোড়ে শ্রম ভবনের ছয় তলায় ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে এ মামলার শুনানি চলছে।
সোমবার দুপুরে ইউনূস আদালতে হাজির হলে তার পক্ষে যুক্ত উপস্থাপন শুরু করেন ব্যরিস্টার আবদুল্লাহ মামুন। অন্যদিকে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী সৈয়দ হায়দার আলী।
হায়দার আলী পরে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ইউনূসের আইনজীবী আজ শুনানি শেষ করতে পারেননি। তিনি দুই ঘণ্টা ধরে শুনানি করেছেন।”
পরে অবশিষ্ট যুক্তি উপস্থাপনের জন্য ২৬ নভেম্বর নতুন তারিখ ঠিক করে দেন বিচারক শেখ মেরিনা সুলতানা।
দিনের শুনানি শেষে আদালত থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় ইউনূস সাংবাদিকদের বলেন, “মামলা নিয়ে বিচার বিভাগের ওপর আস্থা রাখছি।”
এর আগে গত ১৬ নভেম্বর কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খুরশীদ আলম খান এবং সৈয়দ হায়দার আলী যুক্তি উপস্থাপন করেন।
কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের শ্রম পরিদর্শক আরিফুজ্জামান ২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে এ মামলা করেন।
শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনে নির্দিষ্ট লভ্যাংশ জমা না দেওয়া, শ্রমিকদের চাকরি স্থায়ী না করা, গণছুটি নগদায়ন না করায় শ্রম আইনের ৪-এর ৭, ৮, ১১৭ ও ২৩৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে আসামিদের বিরুদ্ধে।
ইউনূস ছাড়া মামলার বাকি আসামিরা হলেন– গ্রামীণ টেলিকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আশরাফুল হাসান এবং দুই পরিচালক নুরজাহান বেগম ও মো. শাহজাহান।
গত ৯ নভেম্বর এ আদালতে হাজির হয়ে ইউনূসসহ গ্রামীণ টেলিকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আশরাফুল হাসান এবং দুই পরিচালক নুরজাহান বেগম ও মো. শাহজাহান আত্মপক্ষ সমর্থন করেন।
আদালত চত্বরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে নিজেকে নির্দোষ দাবি করে ইউনূস সেদিন বলেন, “আমি তো নিজে এ প্রতিষ্ঠানের মালিক নই। আমার আদর্শ কর্মসূচিতে কোনো ত্রুটি ছিল না।
“এত বড় কাজ করতে গেলে কিছু ভুল হতে পারে। আমরা তো ফেরেশতা নই। কিন্তু ভুল হলে তা ইচ্ছাকৃত নয়।”
লিখিত বক্তব্যে আসামিরা ওই দিন বলেন, বাংলাদেশে গ্রামীণ ব্যাংকসহ ৫০টির অধিক সামাজিক প্রতিষ্ঠান ইউনূস গড়ে তুলেছেন। কোনো কোম্পানিতে তার নিজস্ব কোনো শেয়ার নেই। সুতরাং কোনো লভ্যাংশ বা লাভের টাকা কারও পকেটে ঢোকে না।
কোম্পানি আইনসহ বিভিন্ন আইনের ব্যাখ্যাসহ এই মামলাটি কেন চলতে পারে না, তার ব্যাখ্যা দেওয়া হয় বক্তব্যে। সেখানে মামলার আসামিদের অব্যাহতির প্রার্থনা জানানো হয়।
মামলাটিতে এরই মধ্যে চারজনের সাক্ষ্য ও জেরা শেষ হয়েছে। গত ১১ অক্টোবর মামলার বাদী এবং প্রথম সাক্ষীর সাক্ষ্য নেওয়া হয়। পর্যায়ক্রমে গত ৬ নভেম্বর চতুর্থ সাক্ষীর সাক্ষ্য নেওয়া শেষ হয়েছে বলে জানান ইউনূসের আইনজীবী মামুন।