সৈয়দ আশফাকুল হক এবং তার স্ত্রী তানিয়া খন্দকারকে তিন দিনের মধ্যে কারা ফটকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছেন বিচারক।
Published : 07 Feb 2024, 05:01 PM
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে ভবন থেকে পড়ে কিশোরী গৃহকর্মীর মৃত্যুর ঘটনায় ডেইলি স্টারের নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ আশফাকুল হক এবং তার স্ত্রী তানিয়া খন্দকারকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
পুলিশের করা রিমান্ড আবেদন এবং আসামিদের জামিন আবেদন নাকচ করে ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম হাসিবুল হক বুধবার এই আদেশ দেন।
আশফাক ও তার স্ত্রীকে এ মামলায় পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি চেয়েছিল পুলিশ। তা নাকচ করে দিয়ে দুই আসামিকে তিন দিনের মধ্যে কারা ফটকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন বিচারক।
সাংবাদিক আশফাক ও তার স্ত্রীর পক্ষে জামিন শুনানি এবং রিমান্ডের বিরোধিতা করেন আইনজীবী আশরাফ উল আলম।
শুনানিতে তিনি বলেন, “দণ্ডবিধির ৩০৪ এর ‘ক’ ধারাটি জামিনযোগ্য, অবহেলায় মৃত্যু সংগঠনের অপরাধ। অভিযুক্তদের রিমান্ড না দিয়ে জামিন দেওয়া হোক।”
আদালত পুলিশের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা এস আই মো. হেলাল এর বিরোধিতা করেন।
মঙ্গলবার সকাল ৮টার দিকে শাহজাহান রোডের জেনিভা ক্যাম্প সংলগ্ন ওই ভবনের নবম তলা থেকে পড়ে মারা যায় প্রীতি উরাং নামের ১৫ বছর বয়সী ওই কিশোরী। খবর পেয়ে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ মেয়েটির লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
সে সময় স্থানীয়রা ওই বাড়ির ফটকে জড়ো হয়ে ‘মেয়েটিকে হত্যা করা হয়েছে’ অভিযোগ করে বিক্ষোভ শুরু করে। পরে পুলিশ আশফাক, তানিয়াসহ তাদের পরিবারের ছয়জনকে থানায় নিয়ে যায়। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদের দুইজনকে রেখে বাকিদের ছেড়ে দেওয়া হয় বলে মোহাম্মদপুর থানার ওসি মাহফুজুল হক ভূঞা জানান।
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার মিত্তিঙ্গা গ্রামের লোকেশ উরাংয়ের মেয়ে প্রীতি প্রায় দুই বছর ধরে ওই বাসায় গৃহ সহায়ক হিসেবে ছিলেন। বুধবার সকালে মোহাম্মদপুর থানায় এসে মামলা দায়ের করেন লোকেশ উরাং।আশফাকুল ও তার স্ত্রীর অবহেলার কারণে প্রীতির মৃত্যু হয়েছে বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়।
ওই ঘটনা নিয়ে আশফাকুল হকের বক্তব্য বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম জানতে পারেনি।
ডেইলি স্টার মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে বলেছে, “আমাদের জ্যেষ্ঠ সহকর্মী ও নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ আশফাকুল হকের বাসায় এক কিশোরী গৃহ সহায়কের মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনায় আমরা গভীরভাবে মর্মাহত। দুর্ভাগ্যজনক এ ঘটনার জন্য আমরা গভীর দুঃখ প্রকাশ করছি এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি আমাদের গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি। তদন্তে কী পাওয়া গেল, তা জানার অপেক্ষায় আছি আমরা।”
গত বছরের ৬ অগাস্টও একই ধরনের ঘটনা ঘটে আশফাকুল হকের বাসার। সেবার নয় বছরের এক শিশু গৃহকর্মী লাফিয়ে পড়ে গুরুতর আহত হয়। ওই ঘটনায় নির্যাতনের অভিযোগ এনে আশফাকুল হক, তার স্ত্রী তানিয়া হক ও শিল্পী নামের আরেক নারীকে আসামি করে মোহাম্মদপুর থানায় মামলা করেন শিশুটির মা।
পুরনো খবর: