রাজধানীতে বাস ভাড়ায় পরীক্ষামূলক ই-টিকেট চালু

প্রথম দিনই যাত্রীদের মধ্যে এ পদ্ধতি ‘সাড়া ফেলছে’ বলে জানিয়েছেন খন্দকার এনায়েত উল্যাহ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Sept 2022, 02:33 PM
Updated : 23 Sept 2022, 02:33 PM

ঢাকায় বাসে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় ঠেকাতে পরীক্ষামূলকভাবে ই-টিকেটিং পদ্ধতি চালু করল ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি।

শুক্রবার মিরপুর-১২ নম্বর থেকে ঢাকেশ্বরীগামী মিরপুর সুপার লিংক; ঘাটারচর থেকে উত্তরাগামী প্রজাপতি ও পরিস্থান এবং গাবতলী থেকে গাজীপুরগামী বসুমতি পরিবহনের বাসে এই পদ্ধতিতে ভাড়া আদায় শুরু হয়েছে।

ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্যাহ বলেন, “সরকার নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে বেশি ভাড়া আদায় ঠেকাতে ই-টিকেটিং একটি কার্যকর পদ্ধতি। আমরা আজকে পরীক্ষামূলকভাবে চারটি পরিবহনে চালু করেছি, যাত্রীদের কাছ থেকে ভালো রেন্সপন্স পাচ্ছি। “

আগামী রোববার আরও তিনটি রুটে অছিম পরিবহন, রাজধানী পরিবহন ও নূরে মক্কা পরিবহনে এ পদ্ধতি চালু হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

রাজধানীর প্রতিটি রুটেই নির্দিষ্ট দূরত্ব অন্তর বাস কোম্পানিগুলো অনেকদিন থেকে ‘চেক পয়েন্ট’ বসিয়ে যাত্রীর হিসাব রাখে। প্রতিটি পয়েন্টে রাখা হয় কর্মী। বাস ওইসব ‘চেক পয়েন্ট’ অতিক্রম করলে সংশ্লিষ্ট কর্মী যাত্রীর সংখ্যা উল্লেখ করে নির্ধারিত একটি শিটে সই করে দেন। এটাকে পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের ভাষায় বলা হয় ‘ওয়ে বিল’। ওই ওয়েবিলের দোহাই দিয়ে সরকার নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হয় যাত্রীদের কাছ থেকে।

ডিজেলের দাম লিটারে ৫ টাকা কমার পর গত ৩১ অগাস্ট বনানীতে বিআরটিএ কার্যালয়ে বাস-মিনিবাসের ভাড়া পুনঃনির্ধারণ সংক্রান্ত সভা শেষে এই অনিয়ম ঠেকাতে ই-টিকেটিং পদ্ধতি চালুর ঘোষণা দেন পরিবহন মালিক সমিতির নেতা এনায়েত উল্যাহ।

Also Read: ঢাকার গণপরিবহনে আসছে ই-টিকেটিং: এনায়েতুল্লাহ

তিনি বলেছিলেন, “ঢাকা শহরের ১২০টি প্রতিষ্ঠানের এমডি-চেয়ারম্যানদেরকে সঙ্গে নিয়ে এরই মধ্যে দুইবার বৈঠক করেছি। সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যে ওয়েবিল থাকবে না।

“এরপর মালিকদের নিয়ে আবার বসতে হয়েছে। মালিকরা বলছে যে, ওয়েবিল বন্ধ করে দেওয়ার পর তাদের যা ইনকাম আসত, তার তিন ভাগের এক ভাগ আসে। এতে তারা যাত্রীদের হিসাব পায় না।”

এখন ই-টিকেটিং পদ্ধতি যেসব পরিবহনে চালু হয়েছে, সেসবের মালিক সহজেই দিনের আয়ের হিসাব পাবেন।

এ পদ্ধতি চালুর দিন ‘ওয়েবিল’র সঙ্গে বড় ধরনের ফারাক দেখছেন যাত্রীরা।

রাজধানীর কলাবাগানের বাসিন্দা আলম ফারুক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ধানমন্ডি ২৭ থেকে শেওরাপাড়া পর্যন্ত ওয়েবিলে ভাড়া আসত ২০ টাকা, এখন ই-টিকেটিংয়ে সেই ভাড়া ১৩ টাকা। এই পদ্ধতিই আমাদের জন্য ভালো।

“আসাদ গেট থেকে মিরপুর ১ পর্যন্ত আগের ভাড়া কাটা হতো ২৫ টাকা, ই-টিকেটিংয়ে সেই ভাড়া এখন দেখা যাচ্ছে ১৩ টাকা।”

ই-টিকেটে প্রথম দিনে যাত্রীদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে জানিয়ে পরিবহন মালিক সমিতির নেতা এনায়েত উল্যাহ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এই ক্ষেত্রে যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।”

খুব শিগগিরই পুরোদমে ই-টিকেটিং পদ্ধতি চালুর আশা প্রকাশ করেছেন তিনি।

“এক্ষেত্রে প্রতিটি বাস স্টপেজে ঢাকা সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের লোক থাকবে। তাদের থেকে টিকেট কেটে বাসে উঠতে হবে। স্টপেজের বাইরে থেকে কোনো যাত্রী তোলা হবে না। ছাত্রছাত্রীদের জন্য থাকছে অর্ধেক ভাড়ার ব্যবস্থা।”