“আমরা ১০ থেকে ১৫ দিনের জন্য ঢাকার পাঁচটি সড়ককে পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে নেব,” বলেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক।
Published : 31 Aug 2022, 09:53 PM
নগরীর পাঁচটি রুটে ই-টিকেটিং পরীক্ষা করে শিগগিরই তা পুরো ঢাকায় চালু করা হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েতুল্লাহ।
বুধবার বনানীতে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ-বিআরটিএ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া যাতে আদায় না হয়, সেজন্য আমরা ই-টিকেটিং সিস্টেমে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”
এই প্রক্রিয়ার ব্যাখ্যা করে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জানান, কাউন্টারে একটি পজ মেশিন থাকবে, ওই পজ মেশিনের মাধ্যমেই যাত্রীরা টিকেট কেটে গাড়িতে উঠবেন।
খন্দকার এনায়েতুল্লাহ বলেন, “এজন্য আমরা একটি কোম্পানির সাথেও আলোচনা করেছি। আমরা ১০ থেকে ১৫ দিনের জন্য ঢাকার পাঁচটি সড়ককে পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে নেব।
“সেখানে এই সিস্টেমের টিকেট বিক্রির পরীক্ষা করে দেখা হবে। আমরা যদি এই প্রজেক্টে সফলতা পাই তবে আশা করছি পুরো ঢাকা শহরেই গণপরিবহনে ই-টিকেটিং সিস্টেম চালু হয়ে যাবে।”
ডিজেল চালিত বাস মিনিবাসের ভাড়া পুনর্নির্ধারণ সংক্রান্ত সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
ই-টিকেটিং প্রকল্প নিয়ে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিনুল উল্লাহ নূরী বলেন, “ই-টিকেটিংয়ের মাধ্যমে একজন যাত্রীর কাছে যথেষ্ট প্রমাণ থাকবে। সে কত টাকা ভাড়া দিয়ে বাসে উঠলেন।
“সেই সঙ্গে মালিকও জানতে পারবে যে, তার পরিবহনে কতজন যাত্রী উঠল এবং কত টাকা ভাড়া পেল।”
তিনি বলেন, “মালিক শ্রমিক এবং যাত্রীর মধ্যে কিছুটা গ্যাপ থেকে যায় এর জন্য নানা সমস্যা ও ভুল বোঝাবুঝি হয়৷ আমরা চাই (বিআরটিএ), সবাইকে একসঙ্গে মিলেই উত্তরণের পথে আসতে হবে।”
সড়কে এখনও ‘ওয়েবিল’ চালু রয়েছে এবং তা বন্ধ করার কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে কি না, জানতে চাইলে বিষয়টি অস্বীকার করেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েতুল্লাহ।
“আমরা এই অনিয়মগুলো দূর করার জন্য ঢাকা শহরের ১২০টি প্রতিষ্ঠানের এমডি-চেয়ারম্যানদেরকে সঙ্গে নিয়ে এরই মধ্যে দুইবার বৈঠক করেছি। সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যে ওয়েবিল থাকবে না।
“এরপর মালিকদের নিয়ে আবার বসতে হয়েছে। মালিকরা বলছে যে, ওয়েবিল বন্ধ করে দেওয়ার পর তাদের যা ইনকাম আসত ,তার তিন ভাগের এক ভাগ আসে। এতে তারা যাত্রীদের হিসাব পায় না।”
এ বিষয়ে কাজ চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, “আমাদের নয়টি টিম বিআরটিএ’র ম্যাজিস্ট্রেটদের সঙ্গে মিলে কাজ করছে।”
বাসের ‘চেক পয়েন্ট’ বসিয়ে যাত্রীর হিসাব রাখার পদ্ধতিকে পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের ভাষায় বলা হয়, ‘ওয়েবিল’। ওইসব ‘চেক পয়েন্ট’ পেরুলে যাত্রীর সংখ্যা লিখে নির্ধারিত একটি কাগজে সই নেওয়া হয়।
এসময় সচিব এবিএম আমিনুল্লাহ নূরীর কাছে জানতে চাওয়া হয় গ্যাসচালিত বাসে যাত্রীদের কাছ থেকে ডিজেলচালিত বাসের ভাড়া কাটার অভিযোগের বিষয়ে বিআরটিএ কোনো পদক্ষেপ নিয়েছে কি না।
জবাবে তিনি বলেন, “গ্যাস চালিত গাড়ির বিষয়ে আমরা অনুসন্ধান করে দেখেছি ঢাকা শহরে এর সংখ্যা খুব কম। এখানে দেখা গেছে, যে ইঞ্জিনগুলো আছে, সেগুলোর ডেডিকেটেড ইঞ্জিন নয়। এর আয়ুষ্কাল কম।
“অধিকাংশ গাড়ি গ্যাস থেকে ডিজেলে ফিরে গেছে। ঢাকা শহরে মাত্র ৩১৮ টা গাড়ি গ্যাসে চালিত। বর্তমানে এই সংখ্যা কমও হতে পারে।”
এর আগে বিআরটিএ কার্যালয়ে ডিজেলচালিত বাস-মিনিবাসের ভাড়া পুনর্নির্ধারণ সংক্রান্ত বৈঠকে প্রতি কিলোমিটারে ৫ পয়সা কমানোর সিদ্ধান্ত হয়।
আগামীকাল থেকে নতুন ভাড়া কার্যকর হবে জানিয়ে সচিব বলেন, “সড়কে বিআরটিএ ভ্রাম্যমান আদালত থাকবে। অনিয়ম ও অভিযোগ পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
“গতবারও আমরা যেভাবে মোবাইল করেছি, এবারও আমাদের মোবাইল কোর্ট সড়কে থাকবে। যদি কোথাও কোনো অনিয়ম হয় বা পাওয়া যায় তবে আমাদেরকে জানাবেন তাৎক্ষণিকভাবে আমরা সেখানে ব্যবস্থা নেব।
“কেউ যদি ভাড়া বেশি নেয় তাহলে তার বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
আরও খবর