হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যাও সবশেষ ২৪ ঘণ্টায় আরও বেড়ে ৬৭৮ জন হয়েছে, যা এ বছরের সর্বোচ্চ।
Published : 04 Jul 2023, 07:08 PM
এইডিস মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গুতে দেশে গত এক দিনে আরও পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে।
এসময়ে এ রোগে আক্রান্ত হয়ে আরও ৬৭৮ জনের হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার তথ্য দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
এ নিয়ে জুলাইয়ের প্রথম চারদিনেই ১৪ জনের মৃত্যু হল মশাবাহিত এ রোগে এবং এসময়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৮৯৩ জন।
গত কয়েকদিন থেকে এইডিসবাহিত এ রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু ও হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা বাড়ার খবরের মধ্যে এদিন বছরের সর্বোচ্চ মৃত্যু ও ভর্তির খবর এল।
গত ২৪ ঘণ্টায় যে পাঁচজন মারা গেছেন তাদের চারজনের মৃত্যু হয়েছে ঢাকার মুগদা জেনারেল হাসপাতালে। এছাড়া চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা গেছেন একজন।
মঙ্গলবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, এদিন সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু নিয়ে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে যে ৬৭৮ জন ভর্তি হয়েছেন তাদের মধ্যে ৪২৯ জন ঢাকায় এবং ২৪৯ জন ঢাকার বাইরের।
নতুন ভর্তি রোগীদের নিয়ে এ বছর সারাদেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৯ হাজার ৮৭১ জনে। একদিনে মৃত পাঁচজনকে নিয়ে এ বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেন ৬১ জন।
ওয়ারীতে পানির ট্যাংকে মশার লার্ভা, ২০ হাজার টাকা জরিমানা
এক দিনে বছরের সর্বোচ্চ ডেঙ্গু রোগী ভর্তি
এবার বর্ষা শুরুর আগে থেকেই এইডিস মশাবাহিত এ রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়েছে। রোববার দেশে ৫০৯ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন, যা এ বছরের সর্বোচ্চ।
বর্তমানে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি আছেন ১,৬৬৯ জন রোগী। এদের মধ্যে ঢাকায় ১,১০০ জন এবং ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ৫৬৯ জন।
মাসের হিসাবে জুনে সবচেয়ে বেশি ৫৯৫৬ রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
অপরদিকে জানুয়ারিতে ছয়জন, ফেব্রুয়ারিতে তিনজন, এপ্রিলে দুজন, মে মাসে দুজন এবং জুন মাসে ৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।
এ বছর এইডিস মশা শনাক্তে চালানো জরিপে ঢাকায় মশার যে উপস্থিতি দেখা গেছে, তাকে ঝুঁকিপূর্ণ বলছেন বিশেষজ্ঞরা। এ অবস্থায় সামনে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব আরও বাড়ার আশঙ্কা করেছেন তারা।
মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে বর্ষা পূববর্তী জরিপের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, ঢাকার ১১৯টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৫৭টিতে ডেঙ্গু রোগের জীবানুবাহী এইডিস মশার ঝুকিপূর্ণ উপস্থিতি পাওয়া গেছে। এ অবস্থায় ঢাকায় ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি অন্য যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি।
চিকিৎসকরা বলছেন, ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে এ বছর যাদের মৃত্যু হয়েছে, তাদের প্রায় সবাই ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভারে ভুগছিলেন এবং শক সিনড্রোমে মারা গেছেন।
এইডিস মশাবাহিত এই রোগে আক্রান্ত হয়ে গত বছর ৬২ হাজার ৩৮২ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হন। তাদের মধ্যে রেকর্ড ২৮১ জনের মৃত্যু হয়।
এর আগে ২০১৯ সালে দেশের ৬৪ জেলায় এক লাখের বেশি মানুষ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে গিয়েছিলেন, যা এ যাবৎকালের সর্বোচ্চ। সরকারি হিসাবে ওই বছর মৃত্যু হয়েছিল ১৬৪ জনের।