সোমবার গাজীপুরের সফিপুরে আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর ৪৪তম সমাবেশে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী।
Published : 12 Feb 2024, 01:10 PM
দেশের মানুষের নিরাপত্তার স্বার্থে যে কোনো অপতৎপরতা মোকাবিলায় আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যদের রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেছেন, “আমাদের উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে অব্যহত রাখতে কঠোরভাবে পরিশ্রম ও সততার সাথে কাজ করতে হবে। দেশের সর্ববৃহৎ বাহিনী হিসেবে আপনাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করবেন। জননিরাপত্তা রক্ষার স্বার্থে যে কোনো অশুভ তৎপরতা মোকাবেলা করতে হবে; সততা, সাহস এবং আন্তরিকতার সাথে রুখে দাঁড়াবেন।”
সোমবার গাজীপুরের সফিপুরে আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর ৪৪তম সমাবেশে যোগ দিয়ে এ আহ্বান জানান সরকারপ্রধান।
তিনি বলেন, “আমাদের আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী গ্রাম পর্যন্ত কাজ করে থাকে। আমরা গ্রাম উন্নয়নে বিশাল পদক্ষেপ নিয়েছি, ‘আমার গ্রাম আমার শহর, আমার বাড়ি আমার খামার’ বিভিন্ন কর্মসূচিতে আনসার বাহিনী কাজ করে থাকে।
“বিভিন্ন দুর্বিপাকে আনসার বাহিনী কাজ করে থাকে। আমরা দেখেছি, নানা সময়ে ঝড়-ঘূর্ণিঝড়ে আনসার বাহিনী আন্তরিকতার সাথে কাজ করে যান। আনসার বাহিনীর সার্বিক উন্নয়নে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।”
শেখ হাসিনা বলেন, “দেশের সামগ্রিক উন্নয়নের পূর্বশর্ত স্থীতিশীল রাজনৈতিক অবস্থা ও অর্থনৈতিক পরিবেশ এবং গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার ধারাবাহিকতা। “
সেই পরিবেশ রক্ষায় সবাইকে আহ্বান জানান তিনি।
দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, “সন্ত্রাস জঙ্গিবাদ মাদক এর হাত থেকে আমরা বাংলাদেশকে রক্ষা করতে চাই। “
আনসার বাহিনীকে ‘স্মার্ট বাহিনী’ হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয় জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “২০২৬ সাল থেকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে আমাদের যাত্রা শুরু হবে। তখন আমাদের আরও আন্তরিকতার সাথে কাজ করে এগিয়ে যেতে হবে। ২০৪১ সালের মধ্যে যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলব, আমরা চাই আমাদের প্রত্যেকটা বাহিনী, বিশেষ করে আনসার বাহিনী স্মার্ট বাহিনী হিসেবে গড়ে উঠবে।“
তিনি বলেন, “আমাদের প্রত্যেকটা গ্রামকে আমরা নিরাপদ করতে চাই। আমাদের গ্রামগুলোও স্মার্ট গ্রাম হিসেবে গড়ে উঠবে, সেখানে কোনো মানুষ দরিদ্র থাকবে না, ভূমিহীন থাকবে না, গৃহহীন থাকবে না।”
সকালে ১০টার পর গাজীপুরের সফিপুরে আনসার ভিডিপি একাডেমির প্যারেড গ্রাউন্ডে এসে পৌঁছান শেখ হাসিনা। সেখানে তিনি আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর ৪৪তম সমাবেশ উপলক্ষে আয়োজিত কুচকাওয়াজে অভিবাদন গ্রহণ করেন।
এ সময় তিনি একটি অবকাঠামোর ভিত্তিপ্রস্তরও উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। পরে যোগ দেন আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে। গান, নাচ ও নাটকসহ বিভিন্ন আয়োজন তিনি উপভোগ করেন।
১৯৪৮ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি আনসার বাহিনী প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ বাহিনীর সদস্যরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, জননিরাপত্তা ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে দায়িত্ব পালন করছেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, সিনিয়র সচিব মো. মোস্তাফিজুর রহমান, আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল একেএম আমিনুল হক, অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজিম উদ্দিন, আনসার ও ভিডিপি একাডেমির কমান্ড্যান্ট মো. নূরুল হাসান ফরিদী, বাহিনীর উপমহাপরিচালক, অন্যান্য কর্মকর্তা ও আনসার- ভিডিপির সদস্যরা সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া মন্ত্রিপরিষদের সদস্যরা, সংসদ সদস্য, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, তিন বাহিনী প্রধান, সিনিয়র সচিবসহ বিভিন্ন বাহিনীর প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন অনুষ্ঠানে।