গ্রামের বিপুল সংখ্যক মানুষ এসএমএস পড়তে না পারায় এ মাধ্যম ভালো কাজে দিচ্ছে বলে দাবি প্র্যাকটিক্যাল অ্যাকশনের।
Published : 20 Oct 2023, 12:29 AM
বন্যা, ঘূর্ণিঝড়ের মতো দুর্যোগের আগে সরকারি সংস্থাগুলো যে পূর্বাভাস বা সতর্কবাতা দেয়, তা ‘ভয়েস মেসেজ’ আকারে পাওয়ায় মানুষ ভালোভাবে প্রস্তুতি নিতে পারছে বলে এক অনুষ্ঠানে জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, ২০২০ সাল থেকে বন্যার আগে ফরিদপুরের চারটি ইউনিয়নের প্রায় ১০ হাজার মোবাইল নম্বরে ‘ভয়েস মেসেজ’ পাঠানো হয়েছিল। এর মধ্যে ৯৩ শতাংশ মানুষ বলেছে, আগেই খবর পেয়ে শুকনা খাবার, লাকড়ি, গবাদিপশুর খাবার সংগ্রহে তারা পর্যাপ্ত সময় পেয়েছেন। পাশাপাশি শিশু, বয়স্ক ও গর্ভবতী নারীদের নিরাপদ স্থানে সরানোও সম্ভব হয়েছে।
বৃহস্পতিবার ঢাকার লেকশোর হোটেলে আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ‘প্র্যাকটিক্যাল অ্যাকশন’ আয়োজিত ‘কমিউনিটি রেজিলিয়েন্স টু ফ্লাডিং ইন বাংলাদেশ লার্নিং অ্যান্ড ওয়েস ফরোয়ার্ড’ অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানানো হয়।
অনুষ্ঠানে দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব কামরুল হাসান জানান, দেশে দুর্যোগসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে যারা স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করেন, তাদের জন্য নীতিমালা প্রণয়ন করা হচ্ছে। স্বেচ্ছাসেবকদের এক ছাতার নিচে আনতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে এ নীতিমালা করা হচ্ছে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মিজানুর রহমান বলেন, দুর্যোগ মোকাবেলায় বাংলাদেশের সক্ষমতা অনেক বেড়েছে। এ কারণে প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অনেক কমে এসেছে।
প্র্যাকটিক্যাল অ্যাকশনের থিমেটিক লিড (ক্লাইমেট অ্যান্ড রেজিলিয়েন্স) তামান্না রহমান জানান, কেবল বন্যার সময়েই ‘ভয়েস মেসেজ’ পাঠানো হয়নি; ঘূর্ণিঝড়, ডেঙ্গু, তাপদাহের মতো পরিস্থিতিতেও মানুষকে তারা সতর্ক করেছেন। ২০১৮ সালে শুরু হওয়া পাঁচ বছর মেয়াদি ‘ফ্লাড রেজিলিয়েন্স’ প্রকল্পের আওতায় এ সেবা দেওয়া হচ্ছে। গ্রামের বিপুল সংখ্যক মানুষ এসএমএস পড়তে না পারায় ‘ভয়েস মেসেজ’ ভালো কাজে দিচ্ছে।
এ প্রকল্পের আওতায় চারটি ইউনিয়ন পরিষদে ‘ডিজিটাল ওয়েদার বোর্ড’ বসানো হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এসব বোর্ডের মাধ্যমে প্রান্তিক মানুষ আবহাওয়ার পূর্বাভাসের পাশাপাশি কৃষিবিষয়ক বিভিন্ন তথ্যও জেনে নিতে পারছেন।
প্র্যাকটিক্যাল অ্যাকশনের কান্ট্রি ডিরেক্টর শওকত আরা বেগম জানান, দুর্যোগ মোকাবেলায় তারা ‘ডিজাস্টার অ্যালার্ট ফর বিডি’ নামের একটি অ্যাপ তৈরি করছেন। উঁচু স্থানে মাচাং বানিয়ে দুর্যোগে গবাদিপশু রক্ষায় তারা যেমন সহায়তা করছেন, তেমনই উঁচু জায়গায় টয়লেট ও টিউবয়েল বসিয়ে নিশ্চিত করছেন স্যানিটেশন সুবিধা।
প্রকল্পের অংশীজন হিসেবে ফরিদপুর সদর উপজেলার ডিক্রিরচর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব নুরুল ইসলাম বলেন, ‘ফ্লাড রেজিলিয়েন্স’ প্রকল্পের কারণে দুর্যোগ মোকাবেলায় তার ইউনিয়ন পরিষদের সক্ষমতা বেড়েছে। এছাড়া দুর্যোগ মোকাবেলায় ইউনিয়ন পরিষদের নিজস্ব বাজেটে এখন বরাদ্দ রাখা হয়, যেটা আগে ছিল না।