দুই বছর আগে করা মামলাটিতে এই বছর অভিযোগ গঠনের পর শুরু হল সাক্ষ্যগ্রহণ।
Published : 22 Aug 2023, 06:54 PM
গ্রামীণ টেলিকমে শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের বিচার শুরু হয়েছে।
শ্রম অধিদপ্তরের করা এই মামলায় মঙ্গলবার ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে শ্রম পরিদর্শক তরিকুল ইসলাম প্রথম সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দেন।
তিনি জবানবন্দিতে শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনে নির্দিষ্ট লভ্যাংশ জমা না দেওয়া, শ্রমিকদের চাকরি স্থায়ী না করা, গণছুটি নগদায়ন না করার অভিযোগগুলো নিয়ে কথা বলেন।
এরপর ইউনূসের পক্ষে তাকে জেরা করেন তার কৌঁসুলি আবদুল্লাহ আল মামুন।
সাধারণত মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয় বাদীর জবানবন্দি নেওয়ার মধ্য দিয়ে। দুই বছর আগে এই মামলাটি করেছিলেন শ্রম পরিদর্শক মো. আরিফুজ্জামান।
তবে আরিফুজ্জামান মারা যাওয়ায় বাদী হিসেবে শ্রম অধিদপ্তরের প্রতিনিধিত্ব করেছেন তরিকুল।
আশরাফুজ্জামান মারা যাওয়ার পর বাদী হিসাবে তার স্থলাভিষিক্ত হতে আদালতের অনুমতি নিয়েছিলেন কি না, জেরায় জানতে চাওয়া হয় তরিকুলের কাছে।
আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, “আজ এ খবর আনুষ্ঠানিকভাবে এ আদালতকে জানালেন। তার আগ পর্যন্ত এ আদালতের অনুমতি আপনি নেননি। এই ১০ মাস বাদী ছাড়া কীভাবে এ মামলা চলল?”
জেরা শেষ না হওয়ায় শ্রম আদালতের বিচারক বেগম শেখ মেরিনা সুলতানা আগামী ৩১ অগাস্ট অবশিষ্ট জেরার জন্য তারিখ ঠিক করে সেদিন পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেন।
বাদী পক্ষে আদালতে আইনজীবী হিসাবে হাজির ছিলেন খুরশীদ আলম।
ইউনূস নিজে আদালতে এদিন হাজির ছিলেন না। তিনি আইনজীবীর মাধ্যমে হাজিরা দেন। মামলার অন্য তিন আসামি এদিন আদালতে ছিলেন।
গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পদ থেকে এক যুগ আগে অপসারিত হওয়া ইউনূস ১৯৯৫ সালে গ্রামীণ টেলিকম নামে কোম্পানিটি প্রতিষ্ঠার শুরু থেকে এর চেয়ারম্যানের পদে রয়েছেন। দেশের বৃহত্তম মোবাইল ফোন অপারেটর গ্রামীণফোনের মালিকানার ৩৪ শতাংশ এই গ্রামীণ টেলিকমের হাতে।
২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের শ্রম পরিদর্শক আরিফুজ্জামান ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
মামলার অন্য তিন আসামি হলেন- গ্রামীণ টেলিকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আশরাফুল হাসান এবং দুই পরিচালক নুরজাহান বেগম ও মো. শাহজাহান।
তাদের বিরুদ্ধে শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনে নির্দিষ্ট লভ্যাংশ জমা না দেওয়া, শ্রমিকদের চাকরি স্থায়ী না করা, গণছুটি নগদায়ন না করায় শ্রম আইনের ৪-এর ৭, ৮, ১১৭ ও ২৩৪ ধারা লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হয়।
গত ৬ জুন চারজনের বিরুদ্ধে শ্রম আদালতে অভিযোগ গঠন হয়। তা চ্যালেঞ্জ করে মামলাটি বাতিল চেয়ে হাই কোর্টে আবেদন করেন ইউনূস।
গত ২৩ জুলাই শ্রম আদালতে মামলার অভিযোগ গঠনের আদেশ কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করে হাই কোর্ট।
সেই রুল চ্যালেঞ্জ করে আপিল বিভাগে যায় রাষ্ট্রপক্ষ। এরপর গত ২৫ জুলাই আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত কোনো স্থগিতাদেশ না দিয়ে ৩ অগাস্ট পর্যন্ত মামলাটির উপর স্থিতাবস্থা দেয়। একইসঙ্গে আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে আবেদনটি শুনানির জন্য পাঠায়।
এরপর রুল শুনানির জন্য হাই কোর্টে নতুন বেঞ্চ গঠন করে দেয় আপিল বিভাগ। সেই বেঞ্চে শুনানির পর গত ৮ অগাস্ট রুল খারিজ করে দেওয়া হয়। এরপর বিচারিক আদালতে বিচার ফের শুরু হয়।
শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় ইউনূসের বিচার শুরু
শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় ইউনূসের জামিন বহাল