এ মামলায় নিজে হাজির না থেকে আইনজীবীর মাধ্যমে হাজিরা দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল ইউনূসকে, তাও বহাল রেখেছে আদালত।
Published : 06 Jul 2023, 03:31 PM
শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান নোবেল বিজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের জামিন বাতিল চেয়ে করা আবেদনে সাড়া দেয়নি ঢাকার শ্রম আদালত।
কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের পক্ষে বৃহস্পতিবার ইউনূসের জামিন বাতিলের আবেদন করা হয়। সেখানে বলা হয়, আদালতের অনুমতি ছাড়া দেশের বাইরে অবস্থান করছেন ড. ইউনূস। তার জামিন বাতিল করা প্রয়োজন।
এ মামলায় নিজে হাজির না থেকে আইনজীবীর মাধ্যমে হাজিরা দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল, তাও বাতিলের আর্জি জানানো হয়।
শুনানি শেষে তৃতীয় শ্রম আদালতের বিচারক বেগম শেখ মেরিনা সুলতানা দুই আবেদনই খারিজ করে দেন। আগামী ১৩ অগাস্ট মামলার পরবর্তী তারিখ ঠিক করে দেন তিনি।
ইউনূসের আইনজীবী ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মামুন পরে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সাক্ষ্যগ্রহণ শুরুর আগে সময় চেয়ে আমরা আদালতকে জানাই, আমরা এ মামলা বাতিল চেয়ে উচ্চ আদালতে কোয়াশমেন্ট আবেদন করেছি। আদালত ছুটি হয়ে যাওয়ায় পরে আর সেই আবেদনের ওপর শুনানি করতে পারিনি।
“কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের পক্ষে অ্যাডভোকেট খুরশিদ আলম খান জামিন বাতিলসহ ড. ইউনুসের শারীরিক হাজিরা মওকুফ করে আইনজীবীর মাধ্যমে হাজিরার আদেশ বাতিল চেয়েছিলেন। শুনানি শেষে আদালত বলেছেন, ‘আইনজীবীর মাধ্যমে হাজিরার পক্ষে আমি নিজে আদেশ দিয়েছিলাম। আমি নিজের আদেশ কীভাবে বাতিল করব? আপনি এ বিষয়ে উচ্চ আদালতে যেতে পারেন’।”
শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় ইউনূসের বিচার শুরু
গত ৬ জুন ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে এ মামলায় বিচার শুরুর আদেশ দেন শ্রম আদালতের বিচারক। সাক্ষ্যগ্রহণ শুরুর জন্য সে সময় তিনি ৬ জুলাই দিন ঠিক করে দেন।
ইউনূসের সঙ্গে মামলার অন্য তিন আসামি হলেন- গ্রামীণ টেলিকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আশরাফুল হাসান এবং দুই পরিচালক নুরজাহান বেগম ও মো. শাহজাহান।
২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের শ্রম পরিদর্শক আরিফুজ্জামান বাদী হয়ে ড. ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে এ মামলা করেন।
মামলায় শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনে নির্দিষ্ট লভ্যাংশ জমা না দেওয়া, শ্রমিকদের চাকরি স্থায়ী না করা, গণছুটি নগদায়ন না করায় শ্রম আইনের ৪-এর ৭, ৮, ১১৭ ও ২৩৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়।
পরে ওই মামলার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টে আবেদন করা হয়। সেই আবেদনে ইউনূসের বিরুদ্ধে মামলার কার্যক্রম ছয় মাসের জন্য স্থগিত করে আদালত। একইসঙ্গে মামলা কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়।
এরপর রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে আপিল বিভাগ ২০২২ সালের ১৩ জুন দুই মাসের মধ্যে রুল নিষ্পত্তি করতে হাই কোর্টকে নির্দেশ দেয়।
বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান ও বিচারপতি ফাহমিদা কাদেরের হাই কোর্ট শুনানি করে ২০২২ সালের গত ১৭ অগাস্ট রুল খারিজ করে রায় দেয়। ফলে ইউনূসের মামলা বাতিলের আবেদন খারিজ হয়ে যায়।
এরপর ড. মুহাম্মদ ইউনূস হাই কোর্টের ওই রায় স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করেন। গত ৮ মে ইউনূসের লিভ টু আপিল খারিজ করে দেয় আপিল বিভাগ। ফলে মামলা চালানোর বাধা দূর হয়।