বিএমডিসির অনুমোদন না থাকা এবং অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ায় মাইগ্রেশনের দাবি কেয়ার মেডিকেলের শিক্ষার্থীদের।
Published : 21 Aug 2022, 05:54 PM
মাইগ্রেশনের দাবিতে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে কেয়ার মেডিকেল কলেজের বিভিন্ন বর্ষের শিক্ষার্থীরা।
ঢাকার বেসরকারি এই মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা রোববার সকাল থেকে অবস্থান কর্মসূচি পালনের পর দুপুরে অধিদপ্তরে স্মারকলিপি দেয়।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির বিএমডিসির অনুমোদন না থাকা এবং অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ায় মাইগ্রেশনের দাবিতে কয়েক দিন ধরে তারা আন্দোলন চালিয়ে আসছে।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, কেয়ার মেডিকেলে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) কোনো অনুমোদন নেই। নীতিমালা অনুসারে পর্যাপ্ত ফ্লোরপ্লেস ও অবকাঠামো না থাকার পরও এই মেডিকেলে শিক্ষার্থীদের ভর্তি করানো হয়েছে।
বিভিন্ন অনিয়মের কারণে এই মেডিকেলের ২১৬ শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ এখন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
কেয়ার মেডিকেল কলেজের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী অহিয়া ফারজিন বলেন, “আমাদের মেডিকেলে পড়াশোনা করার কোনো পরিবেশ নাই। তাদের বিএসডিসির অনুমোদন নেই। ক্লাস নেওয়ার মতো কোনো শিক্ষক নাই।
“আমরা ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে এখানে ভর্তি হয়েছিলাম। কিন্তু এখন পড়াশোনাই হচ্ছে না। আমরা চাই, দ্রুত আমাদের অন্য কলেজে মাইগ্রেশন করে দেওয়া হোক। সেই দাবিতেই আমরা এখানে এসেছি।”
চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী আসিফ আনোয়ার জানান, তারা স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের সহযোগিতা চান।
“আমরা স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি পালন করছি। আমরা কেয়ার মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষের প্রতারণার শিকার। আমাদের মিথ্যা কাগজপত্র দেখিয়ে ভর্তি করা হয়। আমরা কর্তৃপক্ষের এই মিথ্যাচারের শাস্তি চাই। আমাদের ভবিষ্যৎকে বাঁচাতে আমাদের মাইগ্রেশনের জন্য আমরা এখানে এসেছি।”
কলেজের পঞ্চম বর্ষের শিক্ষার্থী সিলভিয়া মীম জানান, তারা স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালকের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন।
“আমরা স্মারকলিপি দিয়েছি। কিন্তু স্যার আমাদের বলেছেন, কর্তৃপক্ষের কলেজ পরিচালনার অপারগতার বিষয়টি স্মারকলিপিতে উল্লেখ নেই। সেটি উল্লেখ করে আবার স্মারকলিপি জমা দিতে।
“কিন্তু কলেজ কর্তৃপক্ষের থেকে অনেক কষ্টে আমরা লিখিত নিয়েছি। তারা ব্যর্থতার কথা স্বীকার করতে চাচ্ছেন না। আমরা ক্লাস করতে পারছি না, আমাদের সময় নষ্ট হচ্ছে। আমরা দ্রুত এই বিষয়ের সমাধান চাই।”
এ বিষয়ে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. এ কে এম আমিরুল মোরশেদ বিডিনিউজ টোযেন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “কেয়ার মেডিকেল থেকে যদি কর্তৃপক্ষ আমাদের জানায় যে, তারা আর মেডিকেল চালাতে পারছে না, তারা মাইগ্রেশন করে দিতে চায় তাহলেই আমরা এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে পারি। কেননা আমরা তো তাদের অনুমোদন বাতিল করে দিয়েছিলাম।
“কিন্তু কলেজ কর্তৃপক্ষ হাই কোর্টে রিট আবেদন করে। এতে হাই কোর্ট ভর্তি বন্ধের উপর স্থগিতাদেশ দেয়। এর মাধ্যমেই তারা ভর্তি করিয়েছে শিক্ষার্থীদের। এখন শিক্ষার্থীরা আমাদের কাছে দাবির কথা জানিয়েছে। তারা স্মারকলিপি দিয়েছি। কিন্তু সেখানে কর্তৃপক্ষ যে মেডিকেল কলেজটি চালাতে ব্যর্থ হয়েছে, সেই বিষয়টি থাকতে হবে। তাছাড়া আমরা কোনো সিদ্ধান্তে আসতে পারব না।”
এর আগে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের জিজ্ঞাসায় কেয়ার মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের পরিচালক গোলাম মুর্শেদ সুমন বলেছিলেন, শিক্ষার্থীরা ‘চাপ দিয়ে’ মাইগ্রেশনের আবেদনে কলেজ চেয়ারম্যান ও অধ্যক্ষের স্বাক্ষর নিয়েছে।
বিএমডিসি থেকে ইন্টার্ন ব্যাচের অনুমোদন ‘খুব শিগগিরই’ কেয়ার মেডিকেল কলেজ পাবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।