ঢাকার আর্মি স্টেডিয়ামে আগামী ৯, ১০ ও ১১ ফেব্রুয়ারি এ উৎসব সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
Published : 12 Jan 2023, 04:12 PM
বাংলাদেশের হৃদয় থেকে যাত্রা করে বিশ্বজুড়ে আশা জাগানোর ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আশার উৎসব ‘হোপ ফেস্টিভাল’ আয়োজন করতে যাচ্ছে ব্র্যাক।
সবাইকে সঙ্গে নিয়ে বাংলাদেশের মানুষের দৃঢ়তা, সাহস ও এগিয়ে যাওয়ার শক্তিকে এই উৎসবের মাধ্যমে উদযাপন করতে চাওয়ার আশা প্রকাশ করেছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় এই বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা।
‘হৃদয়ে বাংলাদেশ’, ‘সম্ভাবনার শক্তি’ এবং ‘যে পৃথিবী আমরা গড়তে চাই’– এই তিন প্রতিপাদ্য সামনে রেখে সাজানো হবে এ উৎসবের অনুষ্ঠানমালা।
ঢাকার আর্মি স্টেডিয়ামে আগামী ৯, ১০ এবং ১১ ফেব্রুয়ারি প্রতিদিন সকাল ১১টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত সমাজের সর্বস্তরের মানুষের জন্য খোলা থাকবে এ আয়োজন।
সেখানে দর্শকদের জন্য থাকবে বাংলার চিরায়ত লোকজ সংস্কৃতির সম্মেলন, পুঁথিপাঠ, গল্পপাঠের আসার, সংগীত, শিল্পকর্ম, কারুশিল্প, বায়োস্কোপ, পুতুলনাচসহ নানা প্রদর্শনী। থাকবে বিশেষভাবে সক্ষমদের জন্য উপযোগী অবকাঠামো এবং সাইন ল্যাঙ্গুয়েজ শেখার সুযোগ।
তৃণমূল থেকে উঠে আসা তরুণ সামাজিক উদ্যোক্তা এবং কর্মক্ষেত্রে নারীদের জন্য বিশেষ সম্মাননা দেওয়া হবে এ উৎসবে। উৎসব মাতাতে যোগ দেবেন বিনোদনজগতের তারকা ও জনপ্রিয় কয়েকজন শিল্পী ও ব্যান্ড দল।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলন করে তিন দিনব্যাপী এই উৎসবের বিস্তারিত তুলে ধরে ব্র্যাক।
সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশে মানুষের পাশে থেকে তাদের উন্নয়নে কাজ করার জন্য জন্ম হয়েছিল ব্র্যাকের। ২০২২ সালের ২১ মার্চ ৫০ বছর পূর্ণ করে প্রতিষ্ঠানটি।
সংবাদ সম্মেলনে ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ ‘হোপ ফেস্টিভাল’ আয়োজনের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে বলেন, “ব্র্যাক সবসময় বাংলাদেশের সম্ভাবনা নিয়ে আশাবাদী। এই উৎসবের মূল অনুপ্রেরণা ও আয়োজন বাংলাদেশ সব শ্রেণির মানুষের জন্য। এই উৎসব সবাইকে নিজ নিজ বাধা পেরিয়ে, স্বপ্ন জয়ের অনুপ্রেরণা দেবে এই আশা ব্র্যাকের।”
তিনি বলেন, “ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠাতা স্যার ফজলে হাসান আবেদ একটি সমতাপূর্ণ পৃথিবীর কথা বলতেন।… সমাজের প্রত্যেকটা প্রতিষ্ঠান যদি একই জায়গা থেকে না ভাবে, তাহলে সমতাপূর্ণ পৃথিবী সম্ভব না৷ পরিবর্তন একদিনে আসে না, ধীরে ধীরে আসবে৷ সরকার, এনজিও এবং অন্যান্য সংস্থার মধ্যে সমন্বয় বাড়লে আরও দ্রুত কাজ হত।“
এ উৎসবের মাধ্যমে তরুণ প্রজন্মকে অনুপ্রেরণা দেওয়ার প্রত্যাশা রেখে তিনি বলেন, “আমাদের অনেক তরুণ দেশের বাইরে চলে যাচ্ছে। তারা মনে করছে এখানে কোনো সম্ভাবনা নেই। আমাদের এই তরুণদের ধরে রাখতে হবে। তাদের এই সম্ভাবনার জায়গাটিকে দেখাতে হবে যে, বাংলাদেশে আরও কাজ করার জায়গা আছে। এই আশাটি তৈরি করতে হবে।
“আমরা একটা সামগ্রিক পরিবর্তন দেখতে চাই। সে যে মতাদর্শের হোক, নারী-পুরুষ যাই হোক। সবচেয়ে পিছিয়ে পড়া যে মানুষটি আছে, সেও সমান সুযোগ পাবে। এটি একা সরকারের লক্ষে সম্ভব না, এখানে সবার অংশ নেওয়ার দরকার আছে।“
বাংলাদেশের সম্ভাবনা নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করে এবং ব্র্যাকের পঞ্চাশ বছরের পথ পরিক্রমায় সবাইকে ‘হোপ ফেস্টিভালে’ যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ জানিয়ে ব্র্যাক এন্টারপ্রাইজেসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তামারা আবেদ বলেন, “একদম প্রান্তিক তাঁতী নারী থেকে শুরু করে উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন দেখা ট্রান্সজেন্ডার মানুষটিকেও ব্র্যাক পথ দেখিয়েছে। এই আয়োজনের অন্যতম লক্ষ্য শিক্ষা, আর্থিক ক্ষমতায়ন, জেন্ডার সমতা, জলবায়ু পরিবর্তন, মানসিক স্বাস্থ্য, এই জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা। বিশেষত তরুণ সমাজকে সামগ্রিকভাবে দেশের ও নিজ নিজ এলাকার সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসতে উৎসাহ জোগাতে চায় ব্র্যাক।”
ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম রেজা ফরহাদ, বিকাশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কামাল কাদীর, আইপিডিসি ফাইন্যান্স লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও ব্যবস্থাপনা পরুচালক মমিনুল ইসলামও সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন।
https://brachopefestival.net/ ওয়েবসাইটে রেজিস্ট্রেশন করে দর্শনার্থীরা কোনো প্রবেশমূল্য ছাড়াই উৎসবে অংশ নিতে পারবেন।