রাজধানীর মহাখালীতে নির্মাণাধীন এক্সপ্রেসওয়ে থেকে পড়া রড মাথায় গেঁথে কিশোরের মৃত্যুর ঘটনায় প্রকল্পের এক কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
ওই ঘটনায় ঢাকা রেলওয়ে থানায় সোমবার রাতে মামলা হয় জানিয়ে থানার ওসি ফেরদৌস আহমেদ বিশ্বাস বলেন, ওই কিশোরের মৃত্যুর ঘটনায় দণ্ডবিধির ৩০৪ এর ‘ক’ ধারায় মামলা হয়েছে। কারও অবহেলার কারণে কোন মৃত্যু হলে ওই ধারায় মামলার বিধান রয়েছে।
মামলাটি করেছেন ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের সহকারী ব্যবস্থাপক হাসিব হাসান প্রকল্পের কর্মী মো. হাসানকে আসামি করে এই মামলা করেন।
এরপর রাতেই হাসানকে গ্রেপ্তার করা হয় জানিয়ে ঢাকা রেলওয়ে থানার এসআই সেকেন্দার আলী বলেন, “ওই কিশোরের পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি, তার কোনো স্বজনও আসেনি। যার কারণে মামলার বাদী হয়েছেন এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের একজন কর্মকর্তা। মামলায় এক্সপ্রেসওয়ের কর্মী হাসানকে আসামি করা হয়েছে। তার অবহেলায় শিশুটির মৃত্যু হয়েছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।”
এদিকে এক্সপ্রেসওয়ের কয়েকজন কর্মী বলছেন, হাসান চুরির জন্য চার ফুটের দুটি রড নিচে ফেললে তার একটি ওই কিশোরের মাথা এফোঁড়-ওফোঁড় করে দেয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ওসি ফেরদৌস বলেন, “আমরা এখনো ঘটনার কোনো প্রত্যক্ষদর্শী পাইনি। এখন পর্যন্ত অবহেলার কারণে রড দুটি পড়েছে বলে মনে হচ্ছে। আমরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি।”
সোমবার মহাখালী রেলগেটের কাছে সকাল ১০টার দিকে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে থেকে পড়া একটি রড ওই কিশোরের মাথায় ঢুকে যায়। ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পৌনে ১টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসা পথচারী আব্দুল কাদের ইমন জানান, নির্মাণাধীন এক্সপ্রেসওয়ে থেকে ছিটকে আসা একটি রডটি ওই কিশোরের মাথার একপাশ দিয়ে ঢুকে অন্যপাশ দিয়ে বের হয়ে যায়। পরে তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান তিনি।
খবর শুনে বনানী থানার উপপরিদর্শক আব্দুল মতিন বিশ্বাস ঘটনাস্থল ও আশপাশের এলাকায় তদন্তে নামেন।
আব্দুর মতিন বিশ্বাস বলেন, মহাখালী রেলগেটের কাছে ২৮৬ ও ২৮৭ নম্বর পিলারের মাঝে রেললাইনের ওপরই এই ঘটনা ঘটে। শিশুটি কমলাপুরমুখী রেললাইনটির ওপর দিয়ে হাঁটছিল, এসময় নির্মাণাধীন এক্সপ্রেসওয়ে থেকে একটি রডের টুকরো এসে তার মাথায় গেঁথে যায়।
শিশুটির পরিচয় খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না জানিয়ে তিনি বলেন, “তার পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে। তবে এখানকার লোকজন তাকে চিনতে পারছে না। শিশুটির পায়ে কোনো জুতা পাওয়া যায়নি, জামা-কাপড়ও ময়লা। ধারণা করা হচ্ছে সে ভাসমান। তার নাম সুমন বলে শোনা গেলেও বিস্তারিত জানা যায়নি।”