তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের তদন্তে নেমেছে দুদক।
Published : 26 Sep 2024, 07:19 PM
জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক সাবেক সংসদ সদস্য নাঈমুর রহমান দুর্জয় ও তার স্ত্রী ফারহানা রহমানের ব্যাংক হিসাব তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
একই সঙ্গে ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে দুর্জয়ের একক বা যৌথ নামে অথবা তার মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবের যাবতীয় তথ্য চাওয়া হয়েছে।
আগামী ৩ অক্টোবরের মধ্যে এসব তথ্য দুদকের কাছে পাঠাতে নির্দেশনা দিয়েছে দুদক বলে বৃহস্পতিবার একাধিক ব্যাংক কর্মকর্তা বলেছেন।
মানিকগঞ্জ-১ আসন থেকে নির্বাচিত আওয়ামী লীগের সাবেক এ সংসদ সদস্যের দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানে নেমেছে দুদক। এরই অংশ হিসেবে তাদের হিসাবের তথ্য চেয়ে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে চিঠি দিয়েছে সংস্থাটি।
বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট একাধিক কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ব্যাংকগুলোতে পাঠানো দুদকের চিঠিতে দুর্জয় ও তার স্ত্রী নাম ও ঠিকানা, জাতীয় পরিচয়পত্র ও পাসপোর্টের নম্বর দিয়ে বলা হয়েছে, অভিযোগ অনুসন্ধানের জন্য তাদের একক বা যৌথ নামে অথবা তার মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান চেজ ট্রেডিং লিমিটেড ও চেজ পাওয়ার লিমিটেডের তথ্য জানা প্রয়োজন।
চিঠিতে সব ধরনের চলতি হিসাব, সঞ্চয়ী হিসাব, এফডিআর, মেয়াদি আমানত, লকার, সঞ্চয়পত্র, ঋণ হিসাব, ডিপিএস (চলমান, বন্ধ ও সুপ্ত অবস্থায়) বা অন্য কোনো প্রকার হিসাব পরিচালিত হয়ে থাকলে সেসবের পূর্ণাঙ্গ লেনদেনের বিবরণীসহ দাখিল করা সংশ্লিষ্ট অন্যান্য তথ্যাদি ও রেকর্ডপত্রের সত্যায়িত ছায়ালিপি আগামী ৩ অক্টোবরের মধ্যে পাঠাতে বলা হয়েছে।
দুদক ব্যাংকে পাঠানো চিঠিতে বলেছে, ”নাঈমুর রহমান দুর্জয়ের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, নিয়োগ বাণিজ্যসহ বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে সরকারি অর্থ আত্মসাৎপূর্বক নিজ নামে ও পরিবারের সদস্যদের নামে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে।
”তার বিরুদ্ধে ওঠা এসব অভিযোগের বিষয়ে অনুসন্ধানের জন্য তিন সদস্যের অনুসন্ধান টিম গঠন করেছে দুদক।”
এর আগে গত ৩ সেপ্টেম্বর দুর্জয়ের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা জানায়।
সেদিন কমিশনের সচিব খোরশেদা ইয়াসমীন দুর্জয়সহ সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের ছেলে তমাল মুনসুর এবং রাজশাহী-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এনামুল হকের বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তের কথা বলেছিলেন।
“অভিযুক বিরুদ্ধে অর্থপাচার, প্রকল্পে অনিয়মসহ দেশে বিদেশে বিপুল অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে।”
তিনি বলেছিলেন, দুদকের গোয়েন্দা ইউনিটের তথ্যে প্রাথমিক সত্যতা থাকায় কমিশন তাদের দুর্নীতি অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
দুদক কর্মকর্তারা বলেন, দুর্জয়ের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে আরিচা নৌ-টার্মিনালের কাছে বিআইডব্লিউটিএর জমি দখল করে আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া আত্মীয়-স্বজনের নামে সিন্ডিকেট তৈরি করে নদীতে অবৈধভাবে ড্রেজিং করে বালু উত্তোলন করে কোটি কোটি টাকা উপার্জন করেছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
এছাড়া বৈকন্ঠপুর, ঘিওর, মানিকগঞ্জে ১২ বিঘা জমি, মানিকগঞ্জ শহরে এক তলা বাড়ি, বিভিন্ন ব্যাংকে ও ব্যবসায় বিনিয়োগসহ দুর্জয়ের নামে কোটি কোটি টাকার সম্পদ, তিন কোটি টাকা মূল্যের একাধিক গাড়ি, দেশে-বিদেশে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদের তথ্য পেয়েছে দুদকের গোয়েন্দা দল।
সাবেক ক্রিকেটার দুর্জয়, নাসিমের ছেলে তমালের দুর্নীতি অনুসন্ধানে দুদক