শনিবার বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত কসরত করেও সেটি নামানো যায়নি, পরে ফাঁদ পেতে ধরতে হয়েছে বিড়াল ছানাটি।
Published : 02 Mar 2025, 11:26 AM
ঢাকার মহাখালীতে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের ক্রসগার্ডারে আটকে পড়া একটি বিড়াল ছানা উদ্ধার করেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন-ডিএনসিসি।
বিড়ালটি উদ্ধারে শনিবার বিকাল থেকে দুটি হাইড্রোলিক ল্যাডারের সাহায্যে কাজ শুরু করেন ডিএনসিসির কর্মীরা। কিন্তু বিড়ালটি ধরতে না পেরে শনিবার রাতে সেখানে ফাঁদ পাতেন তারা।
বিড়াল ছানাটি ওই ফাঁদে পড়লে রোববার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে সেটাকে নিচে নামিয়ে আনা হয় বলে জানান ডিএনসিসির জনস্বাস্থ্য কর্মকর্তা (ভেটেরিনারি) মো.লুতফর রহমান।
তবে বিড়াল ছানাটি সেখানে কীভাবে গেল তা বুঝতে পারছেন না এই কর্মকর্তা। আর ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, ইউটিউবাররা ভিউ বাড়ানোর আশায় বিড়াল ছানাটি সেখানে ছেড়ে দিতে পারে। এর আগেও এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে।
শনিবার দুপুরের দিকে মহাখালী রেলক্রসিংয়ের কাছে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের ক্রসগার্ডারে বিড়াল ছানাটি আটকে থাকার বিষয়টি ফেইসবুকে পোস্ট করেন এক ব্যক্তি। বিষয়টি ডিএনসিসির প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজকে কেউ একজন জানান। তিনি বিড়ালটিকে উদ্ধারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দেন।
পরে বিড়ালটি উদ্ধারে যান ডিএনসিসির কর্মীরা। মহাখালী ফ্লাইওভারের ওপরে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নিচে একটি বিমের বর্ধিত অংশে একটি ল্যাডার ওঠানো হয়। সেটায় করে ডিএনসিসির কর্মীরা বিড়ালটি উদ্ধারের চেষ্টা করেন।
কিন্তু বিড়ালটি ভয় পেয়ে দূরে সরে যায়। পরে সেখানে আরেকটি ল্যাডার নিয়ে যাওয়া হয়। তবে রাত ১০টা পর্যন্ত চেষ্টা করেও তারা বিড়ালটি ধরতে পারেন।
পরে সেখানে একটি ফাঁদ পেতে খাবার রেখে দেন ডিএনসিসির কর্মীরা। রাতের মত অভিযান শেষ করে তারা চলে যান।
ডিএনসিসির কর্মকর্তা লুৎফর রহমান রোববার সকালে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বিড়াল ছানাটি ওয়াইল্ড, সহজে ধরা যাচ্ছিল না। কাছে গেলে ভয় পাচ্ছিল। এ কারণে আমরা রাতে ট্র্যাপ দিয়ে এসেছিলাম। সেখানে বিড়ালটি আটকে গেলে সকালে আমাদের কর্মীরা সেটাকে নামিয়ে নিয়ে আসে। বিড়ালটি এখন আমাদের কাছেই আছে।”
লুৎফর রহমান বলেন, বিড়াল ছানাটির বয়স তিন মাসের মত। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের ক্রস গার্ডারে কীভাবে গেল সেটাই তারা বুঝতে পারছেন না।
“ওইখানে যাওয়ার মত সুযোগ নাই। আশপাশে বাড়ি আছে, কিন্তু সেখান থেকে লাফ দিয়ে ওই গার্ডারে যাওয়া যাবে না। বিড়াল নখ দিয়ে আকড়ে ধরে গাছে উঠতে পারে, কিন্তু সিমেন্টের পিয়ারে সেই সুযোগ নেই, খামছি দিয়ে ধরতে পারবে না। এটা ছোট একটা বাচ্চা। কাজেই কেউ না ছেড়ে দিলে সেখানে যাওয়ার সুযোগ নেই বলে আমার ধারণা।
“আবার এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের বনানী বা মহাখালী বা যেকেনো র্যাম্প ধরে উঠে এলেও সেখান থেকে ওই জায়গায় যাওয়ার সুযোগ নেই।”
ফার্স্ট ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) কোম্পানি লিমিটেডের যান চলাচল, সুরক্ষা ও নিরাপত্তা বিভাগের পরিচালক ক্যাপ্টেন (অব.) হাসিব হাসান খান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বিড়াল ছানাটি সেখানে যেতে পারার কথা নয়। কোনো ইউটিউবার সেটিকে সেখানে ফেলে দিয়েছে বলে ধারণা তার।
“এর আগেও কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে। আমরা উদ্ধার করে দিয়েছি। পরে বুঝতে পারলাম তাদের (ইউটিউবার) কোনো পার্টি এগুলো ছেড়ে দেয়। পরে উদ্ধার করা হয়, নিউজ হয়। যারা সেগুলো ছাড়ে তাদেরও ভিউ বাড়ে বলে আমার ধারণা। তা না হলে সেখানে বিড়াল যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।”