কেন্দ্রীয় কমিটির ২৪টি পদে (ঢাকা অঞ্চলে ২১টি ও চট্টগ্রামে ৩টি) এবং ঢাকা আঞ্চলিক কমিটির ১৩টি পদে ভোট দিচ্ছেন ৭০১ জন।
Published : 22 Feb 2025, 01:24 PM
রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর নেতৃত্ব বাছাইয়ের জন্য উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দিচ্ছেন দেশের হজ এজেন্সি মালিকদের সংগঠন হাব’র সদস্যরা।
শনিবার সকাল ৯টা থেকে ঢাকার কাকরাইলে ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স (আইডিইবি) মিলনায়তনে ভোটগ্রহণ শুরু হয়।
বিকাল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীন ভোটগ্রহণ শেষে হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) দ্বি-বার্ষিক নির্বাচনের ফল প্রকাশ করা হবে।
সকালে আইডিইবিতে গিয়ে দেখা যায়, কাকরাইল এলাকার সড়কের দুই পাশ প্রার্থীদের পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুনে ঘেরা। কেন্দ্রের ভেতরে ভোটাররা প্রবেশের সময়ে প্যানেলের নেতারা তাদের ফুল দিয়ে স্বাগত জানাচ্ছেন, ভোট চাইছের নিজের পক্ষে।
এবারের নির্বাচনে লড়ছে তিনটি প্যানেল, যার মধ্যে রয়েছে ফারুক আহমেদ সরদার নেতৃত্বাধীন ‘হাব ঐক্য ফোরাম', এম এ রশিদ শাহ সম্রাটের ‘হাব বৈষম্যবিরোধী গণতান্ত্রিক জোট' এবং সৈয়দ গোলাম সরওয়ার নেতৃত্বাধীন ‘হাব ঐক্য কল্যাণ পরিষদ'।
নির্বাচনি বোর্ডের চেয়ারম্যান বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব ফিরোজ আল মামুন বেলা ১২টার দিকে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সকাল ৯টায় যথারীতি ভোট শুরু হয়েছে। ভোটাররা স্বতস্ফুর্তভাবে ভোট দিচ্ছেন। এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ পাইনি।”
হাব ঐক্য ফোরামের প্যানেল প্রধান ফারুক আহমেদ সরদার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সকাল ৯টা থেকে সুশৃঙ্খলভাবে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। এখন পর্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবেই ভোটগ্রহণ চলছে।”
দারুল ইহসান হজ কাফেলা অ্যান্ড ট্রাভেল এজেন্সির মালিক মুজিবুর রহমান হামেদী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “নির্বাচনের ব্যবস্থাপনাটা ভালো লেগেছে, আলহামদুলিল্লাহ। এ পর্যন্ত কোনো সমস্যা নাই। কোনো অভিযোগও নেই।"
এবারের নির্বাচনে কেন্দ্রীয় কমিটির ২৪টি পদে (ঢাকা অঞ্চলে ২১টি ও চট্টগ্রামে ৩টি) এবং ঢাকা আঞ্চলিক কমিটির ১৩টি পদে ভোট দিচ্ছেন ৭০১ জন।
যদিও কেন্দ্রীয় কমিটিতে মোট পদ ২৭টি; এবার সিলেটের তিনটি পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ায় সেসবে ভোট হচ্ছে না।
মোট ভোটার ৭০১ জনের মধ্যে ঢাকার ৫৯৬ জন, চট্টগ্রামের ৭৫ জন এবং সিলেটের ভোটার ৩০ জন।
গত ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের দুই সপ্তাহ পর ২২ অগাস্ট পদত্যাগ করেন হাব সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম। পরে ফারুক আহমদ সরদারকে সভাপতি এবং ফরিদ আহমেদ মজুমদারকে মহাসচিব করে হাবের কার্যনির্বাহী পরিষদ পুনর্গঠিত হয়। কিন্তু হাবের কার্যনির্বাহী কমিটির বিরুদ্ধে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ করে ‘বৈষম্যবিরোধী হজ এজেন্সির মালিকবৃন্দ।’
পরে শুনানি নিয়ে ওই কমিটি বাতিল করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। সেই সঙ্গে মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব মোহাম্মদ দাউদ উল ইসলামকে প্রশাসকের দায়িত্ব দিয়ে ১২০ দিনের মধ্যে নির্বাচিত কমিটির কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করতে বলা হয়।
পরে হাবের ভেঙে দেওয়া কমিটির নেতারা মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে হাই কোর্টে রিট মামলা করেন। ওই আবেদন খারিজ হওয়ার পর দাউদ উল ইসলাম প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
পরে ৪ ডিসেম্বর তিনি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন।
তফসিল অনুযায়ী, চলতি বছরের ২ জানুয়ারি প্রাথমিক ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়। এরপর ১২ জানুয়ারি চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়।
১৫ থেকে ২০ জানুয়ারি মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও দাখিল, ২১ জানুয়ারি প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ, ৩০ জানুয়ারি বৈধ প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করা হয়।
তালিকা প্রকাশের পর ৫ ফেব্রুয়ারি প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সময় নির্ধারণ করা হয়। এরপর ৬ ফেব্রুয়ারি চূড়ান্ত প্রার্থীতালিকা প্রকাশ করা হয়।
তফসিল ঘোষণার আগে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব ফিরোজ আল মামুনকে চেয়ারম্যান করে তিন সদস্যের নির্বাচন বোর্ড গঠন করা হয়।
বোর্ডের অপর দুই সদস্য হলেন-বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব শাম্মী ইসলাম ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব মেহেদী হাসান।
নির্বাচনে কোনো অভিযোগ থেকে থাকলে আপিল করার জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব মুর্শেদা জামান চেয়ারম্যান করে তিন সদস্যের নির্বাচন আপিল বোর্ড গঠন করা হয়েছে।
এই বোর্ডের অপর দুই সদস্য হলেন- বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব তানিয়া ইসলাম ও তরফদার সোহেল রহমান।