ছেলে বলছেন, প্রতারক চক্রের খপ্পরে পড়ে কয়েক কোটি টাকা খুইয়েছেন সাবেক এই সেনা কর্মকর্তা।
Published : 02 Apr 2024, 01:56 AM
ঢাকার মিরপুর ডিওএইচএস এলাকার এক বাসা থেকে একজন অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে, যিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে পুলিশের ধারণা।
অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান ২০১৪ সালে সেনাবাহিনী থেকে অবসরে যান। মিরপুর ডিওএইচএসের ওই বাসায় তিনি স্ত্রীকে নিয়ে থাকতেন। তার দুই ছেলে বিদেশে পড়াশোনা করেন।
পল্লবী থানার ওসি অপূর্ব হাসান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ওই বাসায় তারা একটি ডায়েরি পেয়েছেন, সেখানে হাবিবুর রহমানের অনেক টাকা দেনা থাকার তথ্য রয়েছে।
এদিকে হাবিবুর রহমানের কানাডাপ্রবাসী এক ছেলের বরাতে দৈনিক প্রথম আলো এক প্রতিবেদনে লিখেছে, প্রতারক চক্রের খপ্পরে পড়ে কয়েক কোটি টাকা খুইয়েছেন সাবেক এই সেনা কর্মকর্তা।
পুলিশ বলছে, গত রোববার ঘরের দরজা বন্ধ দেখে পরিবারের সদস্যরা ডাকাডাকি করে হাবিবুর রহমানের কোনো সাড়া পাচ্ছিলেন না। পরে তারা ধাক্কা দিয়ে দরজা খুলে দেখেন, ঘরে ফ্যানের সঙ্গে তার লাশ ঝুলছে। তারপর তারা থানায় খবর দেন।
ওসি অপূর্ব হাসান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, তারা গিয়ে হাবিবুর রহমানকে মৃত অবস্থায় পান। পরে লাশ নামিয়ে হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। ময়নাতদন্ত শেষে রোববারই পরিবারের কাছে লাশ বুঝিয়ে দেওয়া হয়। সোমবার বনানীর সামরিক কবরস্থানে দাফন করা হয় তাকে।
“প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে তিনি আত্মহত্যা করেছেন। তবে আমরা এখনো গভীরে যেতে পারিনি। তদন্ত করে দেখা হচ্ছে,” বলেন ওসি।
আত্মহত্যার কোনো নোট না থাকলেও বাসায় একটি ডায়েরি পাওয়ার কথা জানিয়ে অপূর্ব হাসান বলেন, “তিনি অনেক টাকা দেনা করে গেছেন। উনার কাছে কেউ ৫ লাখ, কেউ ৭ লাখ, কেউ ১০ লাখ টাকা পাবেন। ডায়েরিতে এমন লেখা আছে। আত্মহত্যার পেছনে এসব হতাশা কাজ করেছে বলে ধারণা করছি।”
হাবিবুর রহমানের ছোট ছেলে সৈয়দ মোহাম্মত নাজমুল হাবিবকে উদ্ধৃত করে প্রথম আলোর প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২১ সালে এক প্রতারক চক্রের খপ্পরে পড়েন তার বাবা। পরে তিনি সম্পদ বিক্রি করে প্রায় ৮ কোটি টাকা প্রতারক চক্রের হাতে তুলে দেন। ওই চক্রের সঙ্গে ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরাও’ জড়িত।
নাজমুল হাবিব প্রথম আলোকে বলেন, “আমি বিষয়টি জানার পর থেকেই পুলিশের কাছে অভিযোগ করতে বলেছিলাম। কিন্তু বাবা বলেছিলেন পুলিশকে জানালে তিনি আত্মহত্যা করবেন। আর মা ও বড় ভাই মানসম্মানের ভয়ে বিষয়টি কাউকে জানাননি।”
এর পেছনে যারা জড়িত, তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন হাবিবুর রহমানের ছেলে।
হাবিবুর রহমানের মৃত্যুর ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে বলে জানান ওসি অপূর্ব হাসান।
ছেলের অভিযোগের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “কেউ প্রতারণা করেছে কিনা– এমন কোনো তথ্য এখনও আমরা জানি না। বাসায় অন্য কিছু পাওয়া যায়নি। তিনি স্ত্রীর সাথেও সব শেয়ার করতেন না। আমরা আরেকটু তদন্ত করলে হয়ত আরো কিছু তথ্য পাব।”