১৫ জুলাই বিকেলে একই রথ একই পথে ঢাকেশ্বরী মন্দির থেকে স্বামীবাগ আশ্রমে ফিরবে। একেই বলে ‘উল্টে রথযাত্রা’। আর এর মধ্যে দিয়েই শেষ হবে উৎসবের।
Published : 07 Jul 2024, 07:41 PM
হরিনাম সংকীর্তন, বিশ্ব শান্তি ও মঙ্গল কামানায় অগ্নিহোত্র যজ্ঞের পর বর্ণিল শোভাযাত্রায় শুরু হয়েছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শ্রী শ্রী জগন্নাথদেবের রথযাত্রা উৎসব।
রোববার ঢাকার স্বামীবাগে অবস্থিত আন্তর্জাতিক কৃষ্ণ ভাবনামৃত সংঘে (ইসকন) এসব আয়োজনের পর বিকাল ৩টায় প্রতি বছরের মতো বের করা হয় বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা।
শোভাযাত্রাটি স্বামীবাগ আশ্রম থেকে শুরু হয়ে জয়কালী মন্দির হয়ে শাপলা চত্বর আসে। তারপর গুলিস্তান হয়ে দোয়েল চত্বর, কার্জন হল ও জগন্নাথ হল ঘুরে পলাশী হয়ে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে গিয়ে শেষ হয়।
১৫ জুলাই বিকেলে উল্টো রথের বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা একই পথে ঢাকেশ্বরী মন্দির থেকে স্বামীবাগ আশ্রমে যাওয়ার মধ্যে দিয়ে শেষ হবে উৎসবের।
এর আগে দুপুরে স্বামীবাগ আশ্রমে আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “আমার মনে হয়, রথযাত্রা উৎসব বাংলাদেশের প্রতিটি জেলায় হয়। ঈদের দিনে সবাই আমরা যেমন আনন্দ করি, রথযাত্রার দিনেও সবাই আমরা একসাথে আনন্দ করি।”
তিনি বলেন, “তলাবিহীন ঝুড়ি থেকে অগ্রসর বাংলাদেশ পেয়েছি। তার মূলে হলো আমরা অসাম্প্রদায়িক চেতনা ধারণ করে একসাথে চলছি। আমরা জঙ্গি ও সন্ত্রাস দমনের পাশাপাশি সাম্প্রদায়িক শক্তিকে কঠোরভাবে দমন করতে সক্ষম হয়েছি। হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান কোনো ভেদাভেদ নাই, এদেশ সবার।”
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সংসদ সদস্য সাঈদ খোকন বলেন, “বঙ্গবন্ধু সাংবিধানিকভাবে আমাদের ধর্মীয় স্বাধীনতার নিশ্চয়তা দিয়েছেন। আজ আমরা কথায় কথায় সংখ্যাগুরু কিংবা সংখ্যালঘু বলে থাকি। বাংলাদেশ সংবিধানে সংখ্যালঘু বলতে কোনো শব্দই নাই। এটা মানবসৃষ্ট, আমরা নিজেদের মতো করে বানিয়ে নিজেদের ছোট করি।”
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ধর্মগুরুরা মনে করেন, কৃষ্ণ এবং বলরাম দুই ভাইয়ের কাছে একবার বোন সুভদ্রা নিজ নগর ভ্রমণের ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। বোনের ইচ্ছা পূরণের জন্য দুই ভাই মিলে একটি বিশাল রথ প্রস্তুত করেন এবং তাতে চড়ে তিনজনই নগর ভ্রমণে বের হন।
মাঝপথে, তারা গুন্ডিচায় তাদের মাসির বাড়িতে গিয়েছিলেন এবং এখানে সাত দিন অবস্থান করেছিলেন এবং ঠিক নবম দিনে নগর ভ্রমণ শেষ করে পুরীতে ফিরে আসেন।
তারপর থেকে, প্রতি বছর তিন ভাই-বোন তাদের রথে নগর ভ্রমণে যান এবং তাদের মাসির বাড়ি গুন্ডিচা মন্দিরে যান। বলরামের রথ সামনে, বোন সুভদ্রার রথ মাঝখানে এবং জগন্নাথের রথ থাকে পেছনে।
সেখান থেকেই প্রতিবছর চন্দ্র আষাঢ়ের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়া তিথিতে এ উৎসব পালন করা হয়।
ইসকন বাংলাদেশের সভাপতি সত্যরঞ্জন বাড়ৈ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর সার্বিক নিরাপত্তায় ও সবার সহযোগিতায় হাজার হাজার ভক্তের উপস্থিতে এবারের শ্রী শ্রী জগন্নাথদেবের রথযাত্রা উৎসবে শোভাযাত্রাটি সুন্দরভাবে সম্পন্ন হয়েছে।
এছাড়া শোভাযাত্রায় অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা রক্ষায় নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবকরাও শ্রম দিয়েছেন বলে জানান তিনি।