পাঁচ জনের মধ্যে ঢাকা-১৯ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সাইফুল ইসলামও রয়েছেন।
Published : 24 Dec 2024, 12:52 PM
জুলাই-অগাস্টে আন্দোলনের সময় ঢাকার আশুলিয়ায় ছয়টি মরদেহ পোড়ানোর অভিযোগে করা মামলায় সাবেক এক এমপিসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন বিচারকের বেঞ্চ মঙ্গলবার এ আদেশ দেয়।
ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর বি এম সুলতান মাহমুদ বলেছেন, পাঁচ জনের মধ্যে ঢাকা-১৯ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সাইফুল ইসলামও রয়েছেন। বাকিদের নাম তাৎক্ষণিকভাবে জানাতে পারেননি তিনি।
পরোয়ানা জারির আবেদনে ট্রাইব্যুনালের প্রধান কৌঁসুলি তাজুল ইসলাম বলেন, গত ৫ অগাস্ট আশুলিয়ায় ছয় ছাত্রকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এরপর তাদের লাশ ‘চ্যাংদোলা করে ভ্যানে উঠিয়ে’ আগুনে পোড়ানো হয়।
“যেন কেউ বুঝতে না পারে সেজন্য তারা লাশ পুড়িয়েছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত রাষ্ট্রের শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। এখন তদন্ত করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বেশ কিছু কর্মকর্তার নাম পাওয়া গেছে।”
তদন্ত এখনো চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, এ ঘটনায় জড়িত আর কারো নাম পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধেও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা চাওয়া হবে।
আশুলিয়ায় ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গুলি করে হত্যার পর লাশ পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় গত ১১ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দুটি অভিযোগ করা হয়। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৩০ জনকে সেখানে আসামি করা হয়।
দুজনের পরিবারের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট হুজ্জাতুল ইসলাম খান অভিযোগ দুটি দায়ের করেন।
ওইদিন হুজ্জাতুল ইসলাম খান বলেছিলেন, আসামিদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন, ১৯৭৩ এর ৩(২) ও ৪(১)/৪(২) ধারা অনুযায়ী গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে।
আশুলিয়ায় হত্যা: হসিনার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ
তিনি জানান, নিহত আস-সাবুরের ভাই মো. রিজওয়ানুল ইসলাম ৩০ জনের বিরুদ্ধে এবং নিহত সাজ্জাদ হোসেন সজলের মা মোছা. শাহীনা বেগম ৪০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দুটি করেছেন। দুই মামলার অভিযোগ অভিন্ন। দুই স্বজন করেছেন বলেই দুটি মামলা। তবে আসামি কম-বেশি আছে।
এজাহারে বলা হয়েছে, সাত আসামির নির্দেশে ও পরিকল্পনায় অন্য আসামিরা “আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারী সাধারণ নিরস্ত্র ছাত্র জনতাদের হত্যা করে তাদের লাশ আগুনে পুড়িয়ে তাদের সমূলে বা আংশিক নির্মূল করার উদ্দেশ্যে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছে।”
সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সাভার-আশুলিয়ার সাবেক সংসদ সদস্য মো. সাইফুল ইসলাম, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, ঢাকার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আব্দুল্লাহিল কাফি, বেক্সিমকো লিমিটেডের সিকিউরিটি ইনচার্জ মনতাজউদ্দিন মণ্ডল, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর শরীফ ব্যাপারী, কাশিমপুর থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি মোস্তাক আহমদ, কাশিমপুর থানা ছাত্রলীগ সভাপতি সাবের আহমেদ সজীব এবং আশুলিয়া থানা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মো. নাদিম হোসেনের নাম রয়েছে আসামির তালিকায়।