“হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে এক পক্ষ সরকারকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলতে চায়”, বলেন তিনি।
Published : 20 Sep 2024, 09:46 PM
বাংলাদেশকে নানাভাবে অশান্ত করার ষড়যন্ত্র করার অভিযোগ এনেছেন তথ্য ও সম্প্রচার, ডাক, তার ও টেলিযোগাযোগ এবং তথ্য প্রযুক্তি উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ থেকে ‘নতুন বাংলাদেশ’ গড়ার আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি।
শুক্রবার বিকেলে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চত্বরে বন্যাদুর্গতদের সঙ্গে মতবিনিময় ও ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
গণ আন্দোলনে সরকার পতনের পর পুলিশ ও প্রশাসনকে সক্রিয় করতে না পারার মধ্যে দেশের বিভিন্ন এলাকায় কিছু মানুষ একজোট হয়ে সন্দেহভাজন বা কোনো অভিযোগ এনে যে হামলা-হত্যা করছে, তা নিয়েও কথা বলেন উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, “এ ধরনের হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে এক পক্ষ সরকারকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলতে চায়।”
গত ১৬ বছরের ‘বিশৃঙ্খল অবস্থা’ থেকে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে বর্তমান সরকারকে সময় দিতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বিভিন্ন জায়গায় ‘মব জাস্টিস’, ‘মব কিলিং হচ্ছে’, গণপিটুনির মত ঘটনায় মানুষকে মেরে ফেলা হচ্ছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “এটি কিন্তু আমাদের জন্য কোনো ভালো বিষয় নয়।
“সকলের কাছে আমার আহ্বান থাকবে, অনুরোধ থাকবে, এই ধরনের ঘটনা যেন আর না ঘটে, সেটা সর্বাত্মকভাবে সচেতন থাকবেন এবং পুলিশ প্রশাসনকে সহায়তা করবেন, যাতে সরকার ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান যেন শক্তিশালী হয়, তারা তাদের মত করে কাজ করতে পারে।”
শিক্ষার্থীরা দায়িত্ব নিয়ে প্রশাসনকে, সরকারকে সহযোগিতা করছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “আমরা সেটা করব। কিন্তু কোনোভাবেই যাতে আমরা আইন হাতে তুলে না নেই।
“যার যেটা কাজ, সেটা তাকে দিয়েই করতে হবে। পুলিশের যেটা কাজ, সেটা পুলিশকে দিয়েই করতে হবে, প্রশাসনের যেটা কাজ, সেটা প্রশাসনকে দিয়েই করতে হবে।”
নাহিদ বলেন, ‘আমরা যাতে নিজেরা আইন হাতে তুলে না নেই, নিজেরা যেন কোনো বিচারকার্য সম্পাদক না করি।”
অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে কে কোন দল বা মতের সেটা বিবেচনায় আসবে না বলেও ঘোষণা দেন তথ্য উপদেষ্টা।
‘ঐক্যের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশ’
বাংলাদেশ এখনও একটি ‘সংকটকাল পার করছে’ মন্তব্য করে উপদেষ্টা বলেন, “বাংলাদেশকে এখনও নানাভাবে অশান্ত করার চেষ্টা চলছে, ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। এ সময় আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে দেশের জন্য কাজ করে যেতে হবে। নিজেদের মধ্যে কোনোভাবেই যাতে কোনো ধরনের বিভক্তি না আসে, সে বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে।
“আমরা যে ঐক্যের পরিচয় দিয়েছি এই অভ্যুত্থানের মধ্যে, এই যে আন্দোলন হল, যে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আমরা স্বৈরাচারকে দেশ ছাড়া করলাম, এই ঐক্য ধরে রাখতে হবে। এই ঐক্যের ভেতর দিয়েই কিন্তু আমাদেরকে একটি নতুন বাংলাদেশ তৈরি করতে হবে।”
বাংলাদেশে গণমাধ্যম কীভাবে স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে, সে বিষয়ে গণমাধ্যম সংস্কার কমিটি প্রস্তাব দিলে সরকার কাজ করবে বলেও জানান তিনি।
ত্রাণ কার্যক্রম প্রাথমিকভাবে শেষ, এবার পুনর্বাসন
দেশের পূর্বাঞ্চল ও উত্তর পূর্বাঞ্চলে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য সরকারের পরিকল্পনাও তুলে ধরেন তথ্য উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, “আমাদের ত্রাণ কার্যক্রমটি প্রাথমিকভাবে শেষের দিকে। এখন পুনর্বাসন কার্যক্রমটি আমাদেরকে শুরু করতে হবে ভালোভাবে।
“যাদের বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়েছে, ভেঙে গেছে, সেই বাড়িঘরগুলো যেন আমরা নতুন করে নির্মাণ করে দেই। আমরা অবশ্যই মানুষের জনস্বাস্থ্যের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করব। কারণ, বন্যার পরে কিন্তু বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন ধরনের রোগবালাই দেখা দেয়, সেসব বিষয়ে আমাদেরকে সচেতন হতে হবে। ”
নোয়াখালীর ডিসি খন্দকার ইসতিয়াক আহমেদ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বেগমগঞ্জ সার্কেল) নাজমুল হাসান রাজিব, বেগমগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো.আরিফুর রহমানও এ সময় উপস্থিত ছিলেন।