বাঠু-পাপাই-বাবাইরা মাতল, উচ্ছ্বসিত পালকরাও

“ক্যাট শো’র আয়োজন বাড়লে পোষ্য প্রাণীকেন্দ্রিক সম্প্রীতি বাড়বে,” বললেন প্রদীপ্ত।

আব্দুল্লাহ জায়েদবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 March 2023, 06:18 PM
Updated : 10 March 2023, 06:18 PM

বছর খানেক আগে রাজশাহীতে যখন বাঠুকে উদ্ধার করা হয়- তখন ওর বয়স সবে কয়েক সপ্তাহ; এতদিন আগলে রেখে সেই প্রাণীটিকে নিয়ে র‌্যাম্পে হেঁটে উচ্ছ্বসিত মতিয়া কবির।

ছোট্ট এ বিড়ালের দিকে ইঙ্গিত করে হাসিমুখে তিনি বললেন, “আমাদের এটা আদর নিতেও জানে, আদর দিতেও জানে।”

শুক্রবার রাজধানীর মিরপুর ১-এ আয়োজিত ঢাকা ক্যাট শোতে কথা হচ্ছিল বারিধারা ডিওএইচএসের এই বাসিন্দার সঙ্গে।

১০ নম্বর ওয়ার্ড কমিউনিটি সেন্টারে পালকদের কোলে চড়ে সেই র‌্যাম্পে অংশ নিয়েছে বাঠুর মতো পাপাই, বাবাই, অ্যাঞ্জেল আর জো জোসহ হরেক নামের বিড়াল।

দিনব্যাপী এ আয়োজনে শুধু র‌্যাম্প শো’ই নয়, কিটিদের ফুটবল (বিড়াল ছানাদের ফুটবল ম্যাচ), মিস্টার অ্যান্ড মিসেস (বিড়ালের জুটি), যেমন খুশি তেমন সাজোসহ নানা প্রতিযোগিতা উচ্ছ্বাস ছড়িয়েছে প্রাণীপ্রেমীদের।

ধানমন্ডি থেকে আসা দোলা ফুরফুরে মেজাজে জানালেন, নিজের পার্সিয়ান জাতের বিড়ালটি নিয়ে সব প্রতিযোগিতাতেই অংশ নিচ্ছেন তিনি।

এদিক-সেদিক তাকিয়ে পার্সিয়ান বিড়ালের আধিক্য চোখে পড়ল। নারায়ণগঞ্জ থেকে আসা এনামুল হকের সঙ্গে আলাপেও তাই উঠে এল। তিনি বললেন, “এখানে সিংহভাগই পার্সিয়ান বিড়াল, একেবারে ৯০ শতাংশ।”

শখের বিড়াল পালার পাশাপাশি পার্সিয়ান বিড়াল ছানা বিক্রির চেষ্টা করার কথা বললেন এনামুল। জানালেন, তার বাড়িতে পার্সিয়ান বিড়ালের ২০টি ছানা আছে।

তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বাজারে একটি পার্সিয়ান বিড়ালের বাচ্চা বিক্রি হয় ১৫ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা দামে। আর প্রাপ্তবয়স্ক বিড়াল বিক্রি হয় ৩০ থেকে ৬০ হাজার টাকায়।

তবে বাঠু কিন্তু বিদেশি বিড়াল নয়, ‍পুরোদস্তুর দেশি। তার পালক মতিয়া কবির বলছিলেন বিদেশি বিড়ালে মানুষের আগ্রহ বেশি হওয়ার কারণ।

“বিদেশি বিড়ালগুলো দেখতে আসলে খুব কিউট তো; কারও নাক বোচা, কারও ডল ফেইস, কেউ দেখতে নরম তুলতুলে। দেখতে সুন্দর বলেই মানুষ এতে আকৃষ্ট হন।”

তবে বিড়ালের জাতের চাইতে, এমন আয়োজন বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করলেন ধানমন্ডির প্রদীপ্ত।

তিনি মনে করেন, ধীরে ধীরে এমন ক্যাট শো’র আয়োজন বাড়লে পোষ্য প্রাণীকেন্দ্রিক সম্প্রীতি ও সংস্কৃতি সমৃদ্ধ হবে।

মাস চারেক আগে এমন আসর বসেছিল বরিশালে, তখন দক্ষিণের ওই নগরী প্রথমবারের মতো দেখেছিল ‘ক্যাট শো’। সেখানকার আয়োজকরা জানিয়েছেন, এখন থেকে প্রতিবছর তারা ক্যাট শো করবেন।

এরপর ঢাকায় গত মাসের শেষে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হয় ক্যাট শো।

ওই আয়োজনের  প্রধান সমন্বয়ক মো. আলমগীর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছিলেন, তাদের ওই আয়োজনের ভাবনা আসে বন্ধুদের আড্ডায় চা খেতে খেতে। এমন আয়োজন আরও করতে চান।

শুক্রবার ঢাকা ক্যাট শো আয়োজন করা হয় ‘ঢাকা পার্সিয়ান ক্যাট সোসাইটি অব বাংলাদেশ’ নামের ফেইসবুক পেইজের তরফে।

আয়োজকদের একজন তানজিলুর রহমান প্রান্ত জানিয়েছেন, এতে অংশ নিতে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত নিবন্ধন করেন প্রায় আড়াইশ জন। তবে অনুষ্ঠানস্থলে এসে নাম লিখিয়ে অংশ নেন আরও জনা পঞ্চাশেক বিড়ালপ্রেমী।

Also Read: প্রিয় প্রাণীকে নিয়ে অন্যরকম প্রতিযোগিতায় পালকরা

Also Read: বরিশাল দেখল ‘ক্যাট শো’