অনুসন্ধান শুরুর পর ‘দেশ ছাড়ার চেষ্টা’, র‌্যাব কর্মকর্তার বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা

আদালতপাড়ায় 'বিব্রতকর ভোগান্তি'

অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধান শুরুর পর র‌্যাবের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ‘বিদেশ চলে যাওয়ার চেষ্টা করছেন’ বলে দুদকের কাছ থেকে বক্তব্য শুনে তার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ঢাকার একটি আদালত।

নিষেধাজ্ঞা পাওয়া উত্তম কুমার বিশ্বাস র‍্যাবের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রমোট) র‍্যাব-২, তেজগাঁওয়ে এ কর্মরত।

বৃহস্পতিবার দুর্নীতি দমন কমিশনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেনের আদালত এ আদেশ দেন।

বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধানের জন্য এ আদেশ দেওয়া হয়।

দুদকের আইনজীবী মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর এ তথ্য জানিয়ে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “উত্তম কুমারের পাসপোর্ট নম্বর আদালতে দেওয়া হয়েছে।”

মামলার প্রাথমিক অনুসন্ধানকালে দুদকের পক্ষে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার আবেদন করেন অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা দুদকের সহকারী পরিচালক রুহুল হক।

কী অভিযোগ র‌্যাব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে

আবেদনে বলা হয়, “উত্তম কুমার বিশ্বাসের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগের বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু হয়, যা বর্তমানে চলমান আছে। ইতোমধ্যে তার ও তার স্ত্রীর নামে সম্পদ বিবরণীর নোটিশ জারি করে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে।”

এই কর্মকর্তা নোটিশ পাওয়ার পরপরই তার ব্যাংক অনেক হিসাব থেকে সব টাকা-পয়সা তুলে সেগুলো বন্ধ করছেন, যা সন্দেহজনক হিসেবে দেখছে দুদক।

তিনি অনুসন্ধানের শুরু থেকে তেমন কোনো ধরনের সহযোগিতা করেননি বরং বিভিন্ন সময়ে ‘মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রদান করে অনুসন্ধানকার্য ব্যাহত করার অপচেষ্টা চালাচ্ছেন এবং অহেতুক কালক্ষেপণ করছেন’ বলেও আদালতকে জানিয়েছে দুদক।

উত্তম কুমার সব হিসাব বন্ধ করে দেশত্যাগের পরিকল্পনা করছেন বলে গোপন সূত্রে খবর পাওয়ার কথাও আদালতকে জানানো জয়েছে। বলা হয়, “তিনি বিদেশে পালিয়ে গেলে অনুসন্ধান কাজ ব্যাহত হওয়ার সমূহ শঙ্কা রয়েছে। এজন্য তার বিদেশগমনে নিষেধাজ্ঞা একান্ত প্রয়োজন।”

দুদকের পক্ষে শুনানি করেন মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর। আদালত তার কাছে জানতে চায়, উত্তম এখনও চাকরিতে আছেন কি না।

দুদক প্রসিকিউটর বলেন, “তিনি এখনও চাকরিরত।”

শুনানি শেষে উত্তমের কুমারের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার আবেদন গ্রহণ করে আদেশ জারি করেন বিচারক।