সংস্কার প্রস্তাব দিলেও বিএনপি মনে করে, সংবিধানের এসব সংশোধনী পার্লামেন্টেই হতে হবে।
Published : 26 Nov 2024, 02:23 PM
দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ প্রবর্তন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনঃপ্রবর্তন, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতায় ভারসাম্য আনাসহ সংবিধানের একগুচ্ছ সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছে বিএনপি।
মঙ্গলবার সকালে জাতীয় সংসদ ভবনে সংবিধান সংস্কার কমিশনের কার্যালয়ে কমিশন প্রধান অধ্যাপক আলী রীয়াজের হাতে এসব লিখিত প্রস্তাব তুলে দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দীন আহমেদ।
আলী রীয়াজ ছাড়াও সংস্কার কমিশনের অন্য সদস্যরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের লক্ষ্যে বিএনপি যে ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছিল, তার আলোকেই লিখিত এ প্রস্তাব দিয়েছে দলটি।
বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, “সংবিধানের ৪৮, ৫৬, ১৪২ অনুচ্ছেদ যেগুলোতে পরিবর্তন এবং প্রস্তাব আনতে গেলে যে গণভোটের বিধান ছিল, সেটা আওয়ামী লীগ উঠিয়ে দিয়েছিল, সেগুলো পুনরায় প্রবর্তনের জন্য আমরা প্রস্তাব করেছি।”
তিনি বলেন, “এভাবে প্রস্তাবনা, প্রজাতন্ত্র, নির্বাহী বিভাগ, বিচার বিভাগ, আইন বিভাগ এবং নির্বাচন কমিশন, তফসিলসহ সব বিষয়ে আমরা অ্যাড্রেস করেছি। যাতে সংবিধানের একটি গণতান্ত্রিক সংস্কার সাধিত হয় এবং সেটার উপকার বাংলাদেশের জনগণ পায়। সর্বক্ষেত্রেই যেন একটা ‘ব্যালেন্স অব পাওয়ার' সৃষ্টি হয়; রাষ্ট্রের সমস্ত অঙ্গের মধ্যে, এগুলোই আমরা প্রস্তাব করেছি।”
সংবিধান সংস্কারে বিএনপি যে প্রস্তাব দিয়েছে সেগুলো আদৌ এ সরকার করতে পারবে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে সালাহউদ্দীন আহমেদ বলেন, “সংবিধান সংস্কার কমিশন তাদের সুপারিশগুলো সরকারের কাছে প্রস্তাব করবে। অন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, তার পরে উনি সবার সাথে আলোচনা করবেন। রাজনৈতিক দল, অংশীজন, বিশেষজ্ঞ, সমাজের বিভিন্ন শ্রেণির মানুষের সঙ্গে আলোচনা করে সেটা উনারা চূড়ান্ত করবেন।
“এবং এই চূড়ান্ত করার পর দেখা যাবে, অধিকাংশ ক্ষেত্রে সবাই ঐকমত্য পোষণ করবে। কিছু-কিছু ক্ষেত্রে হয়ত দ্বিমত থাকতেই পারে। যেসমস্ত বিষয়ে সবাই একমত হবে, সেগুলো আমরা যদি অঙ্গীকার করি এবং নির্বাচনী ইশতেহারে যদি সেটা প্রতিফলন করি, তাহলে পরে সবার একটা অঙ্গীকার থাকবে যে পরবর্তীতে পার্লামেন্টে যারাই আসুক, তারা সেই সংবিধান সেভাবেই পরিবর্তন করবে।”
গেল ৩ নভেম্বর বিকেলে জাতীয় সংসদের এলডি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, “আমরা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদেরকে সনির্বন্ধ অনুরোধ করব লিখিত মতামত এবং সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব পাঠানোর জন্য।”
এই কমিশন ইতোমধ্যে বিশিষ্ট নাগরিকসহ অন্যান্য অংশীজনের সঙ্গে মতবিনিময় শুরু করেছে।
সোমবার সংবিধান সংস্কার কমিশনের পক্ষ থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, কমিশনের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে সংস্কার নিয়ে এ পর্যন্ত ৪৭ হাজারের বেশি মানুষ মতামত দিয়েছেন।