“আমরা আমাদের এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছি ভোটারদের কাছে। আমরা পর্যবেক্ষক চাই না, আমরা চাই ভোটার,” বলেন তিনি।
Published : 15 Oct 2023, 11:37 PM
আওয়ামী লীগ সরকার বিদেশিদের কাছে যায় না মন্তব্য করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, উল্টো বিদেশিরা সরকারের কাছে আসে।
আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধি দলের আলোচনা নিয়ে নানান কথাবার্তার মধ্যে রোববার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক প্রশ্নে মোমেন বলেন, “নো, আমরা বিদেশিদের কাছে যাই না, বিদেশিরা আমাদের কাছে আসে।
“…দেখেন, আমেরিকার কতগুলো লোক আসছে আমাদের কাছে, আমরা যাই নাই। আমেরিকায় যাওয়ার পরে তারা আমাদের মিশনে এসে আমাদের সাথে দেখা করেছে, আমরা যাই নাই। আমাদের তাদের বাসায় যাই নাই। তারা এসেছে আমাদের অফিসে, আমাদের দপ্তরে, আলোচনা করার জন্য; আমরা নেই।
আগামী জাতীয় নির্বাচনে বিদেশি পর্যবেক্ষকের উপস্থিতি নিয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে সাংবাদিকদের প্রশ্ন, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর উত্তর ও পাল্টা প্রশ্নে মন্ত্রীর এমন মন্তব্য আসে।
নির্বাচনে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পর্যবেক্ষক পাঠানো বিষয়ে এক প্রশ্নে মোমেন বলেন, “পর্যবেক্ষক দরকার নাই, আমার দরকার ভোটার। আমরা আমাদের এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছি ভোটারদের কাছে। আমরা পর্যবেক্ষক চাই না, আমরা চাই ভোটার।
“লোকেরা যদি ভোট দেয়, এটা আমাদের জন্য যথেষ্ট। জনগণ যদি আমাদের ভোট দেয়, জনগণ যদি আমাদের নির্বাচনে আসে, সেটাই যথেষ্ট। আমরা বিদেশের উপর নির্ভরশীল, এদিক থেকে নির্ভরশীল না।”
এরপর নির্বাচনকে আন্তর্জাতিকভাবে বিশ্বাসযোগ্য করার জন্য পর্যবেক্ষকের প্রয়োজন কি না, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, “দ্যাট ইজ ইমম্যাটেরিয়াল।
“যদি মানুষ বিশ্বাস করে, সেটা আমাদের জন্য যথেষ্ট। আমরা যখন একাত্তর সালে সংগ্রাম করি, বড় বড় লোকেরা কেউ আমাদের সাহায্য করে নাই। কিন্তু আমাদের দেশের লোক আমাদের উপর আস্থা রেখে সংগ্রাম করেছে, আমরা জয়যুক্ত হয়েছি।”
এরপর পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওই সাংবাদিককে বলেন, “আপনি খালি বিদেশিদের দিকে তাকায় আছেন কেন? অত দেউলিয়া হয়েছেন কেন? এত দেউলিয়া হয়েছেন কেন? নিজের উপর বিশ্বাস রাখেন।”
তখন আরেক সাংবাদিক বলেন, “না স্যার, আপনারাওতো দেউলিয়া হয়ে গেছেন তাহলে।”
“আমরা দেউলিয়া না,” উত্তর দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন।
পাল্টা প্রশ্নে ওই সাংবাদিক বলেন, “না স্যার, আপনারা কি বিদেশিদের কাছে যাচ্ছেন না?”
এরপর বিদেশিদের কাছে যাওয়া প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের বিষয় টানেন মন্ত্রী।
‘মাতব্বরি করে গেছে’ মার্কিন প্রতিনিধিদল
বাংলাদেশ ঘুরে গিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক-নির্বাচন পর্যবেক্ষক দলের দেওয়া বিবৃতিতে পর্যবেক্ষক পাঠানোর বিষয়টি স্পষ্ট না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন।
পর্যবেক্ষক পাঠানোর বিষয়ে বক্তব্য না থাকা প্রসঙ্গে এক প্রশ্নে তিনি বলেন, “সেটা তারা বলেন নাই। তারা যে কারণে আসছিলেন, সেটা বলেন নাই। আরও কিছু মাতব্বরি করে গেছে। ফাইন!
“এটা তাদের জিজ্ঞেস করেন, তারা যে কারণে এসেছিলেন সেটা না বলে অন্য কিছু বললেন কেন?”
পর্যবেক্ষক দলের বিবৃতিতে সরকার স্বাগত জানাচ্ছে কি না, এমন প্রশ্নে মোমেন বলেন, “আমাদের ইয়েস-নো বলার কিছু নাই। তারা কী বলল না বলল এটা তাদের মাথাব্যথা, আমাদের না।
“দুনিয়ার বহু লোক বহু ধরনের ওপিনিয়ন দেন, আমরা মানুষের ওপিনিয়নে বিশ্বাস করি, সাজেশনে বিশ্বাস করি। তারা দিক, সেটা আমরা গ্রহণ করব, না করব এটা আমাদের বিষয়।”
নির্বাচন ঘিরে বিপরীতমুখী অবস্থানে থাকা দুই রাজনৈতিক শিবিরের মধ্যে ওই বিবৃতিতে ‘অর্থবহ সংলাপের’ সুপারিশ করেছে প্রতিনিধিদল।
এ বিষয়ে এক প্রশ্নে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “তারা তাদের বক্তব্য দিয়েছে, এটা স্বাগত। আমাদের সবসময় আমরা সংলাপ করে যাচ্ছি। বিভিন্ন দলের সাথে। আমাদের তাতে কোনো আপত্তি নাই, তারাও সংলাপ করুক, তারা যদি চায়।
“আর একটি স্বাধীন কমিশন করেছি, যেটা তারা বলেছেন। তো, এটার সাথে আমাদের কোনো আপত্তি নাই। আমরা কমিশন করেছি, আমরা চাই সব লোক ভোট দিক, সবাই অংশগ্রহণ করুক।”
সরকারের অবস্থানের সঙ্গে এক্ষেত্রে ‘ভিন্নতা’ নেই মন্তব্য করে তিনি বলেন, “তারা একটা ফরমায়েশি ইয়ে দিয়েছে, ফাইন। এটা তাদের মতামত এবং আমরা মনে করি না এটা অতোটা গুরুত্বপূর্ণ। আপনারা এটা নিয়ে অতো হৈচৈ করার কোনো কারণ নাই।”