সম্পদের হিসাব বিবরণী যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে দাখিল বিষয়ে আগামী ৩ মাসের মধ্যে অগ্রগতি প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
Published : 02 Jul 2024, 03:21 PM
সরকারি কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব বিবরণী দাখিল ও ওয়েবসাইটে প্রকাশের নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছে হাই কোর্ট।
একই সঙ্গে সম্পদের হিসাব বিবরণী যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে দাখিলের বিষয়ে আগামী ৩ মাসের মধ্যে হাই কোর্টে অগ্রগতি প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জনস্বার্থে করা করা একটি রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী ইবাদত হোসেনের বেঞ্চ রুলসহ আদেশ দেয়।
শীর্ষস্থানীয় কয়েকজন সরকারি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ‘অবৈধভাবে’ সম্পদ উপার্জনের অভিযোগে দেশে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে এ রিট আবেদন করা হয়।
শুনানির সময় জ্যেষ্ঠ বিচারক বলেন, “দুর্নীতি উন্নয়ন ও সুশাসনের অন্তরায়। এটা অবশ্যই বন্ধ হওয়া উচিৎ। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু বলতেন- ‘সোনার বাংলা গড়তে চাই সোনার মানুষ’।”
সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব আইন অনুযায়ী দাখিল ও ওয়েবসাইটে প্রকাশের নির্দেশনা চেয়ে গত রোববার অ্যাডভোকেট সুবীর নন্দী দাস জনস্বার্থে এই রিট আবেদন করেন।
সুবীর নন্দী নিজেই আবেদনের শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।
রিটে আবেদনে সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ের সচিব, আইন, বিচারক ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরসহ ১০ জনকে বিবাদী করা হয়েছে।
অ্যাডভোকেট সুবীর নন্দী দাস সাংবাদিকদের বলেন, “সরকারি কর্মকর্তা- কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব আইনে উল্লেখিত যথাযথ নিয়মে কর্তৃপক্ষের কাছে দাখিলের পাশাপাশি ওয়েবসাইটে প্রকাশের নির্দেশনা চেয়ে রিট করেছি।
“সম্প্রতি আমরা দেখছি যে, সরকারের কিছু ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বিপুল পরিমাণ সম্পদ থাকার তথ্য গণমাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে। সরকারি কর্মকর্তারা কীভাবে এত বিপুল সম্পদ অর্জন করেন, সে বিষয়ে জানতে চেয়েছি।”
এ আইনজীবী আরও বলেন, সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা ১৯৭৯-এর ১১, ১২ ও ১৩ বিধিতে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব বিবরণী দাখিলের বাধ্যবাধকতার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে।
“কিন্তু আইনের এ নির্দেশনা মানছেন না বেশিরভাগ সরকারি চাকরিজীবী।”
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সরকারি কর্মচারীদের সম্পত্তির বিবরণীর নিদের্শনা চেয়ে পিআইএল (পাবলিক ইন্টারেস্ট লিটিগেশন) করেছেন আইনজীবী সুবীর নন্দী দাস।
“আজ শুনানি শেষে রুল জারি করেছেন আদালত। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব আইন অনুযায়ী কেন ওয়েবসাইটে প্রকাশ করার আদেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে রুল। একইসঙ্গে এ বিষয়ে অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল করতেও বলা হয়েছে।”
পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ ও রাজস্ব কর্মকর্তা মতিউর রহমানের অঢেল সম্পদ নিয়ে মূলধারার গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা চলছে। এরপর ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়ারও ‘অবৈধ উপায়ে’ সম্পদ উপার্জনের অভিযোগে সংবাদ প্রকাশ হয়। বেনজীর আহমেদ ও মতিউর রহমানের সম্পদের অনুসন্ধান করছে দুদক।