এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কেও জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন ও পরিবীক্ষণ কমিটি।
Published : 30 Apr 2024, 07:40 PM
পার্বত্য চট্টগ্রামে সশস্ত্র দল কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টকে (কেএনএফ) দমনে যৌথ অভিযানের মধ্যে কোনো নিরীহ ব্যক্তি যেন হেনস্তার শিকার না হন, সে বিষয়ে নজর দিতে সুপারিশ করেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন ও পরিবীক্ষণ কমিটি।
এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কেও অবহিত করা হবে। মঙ্গলবার সংসদ ভবনে 'পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন ও পরিবীক্ষণ কমিটি'র এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়।
কমিটির আহ্বায়ক (মন্ত্রী পদমর্যাদা) আবুল হাসানাত আবদুল্লাহর সভাপতিত্বে কমিটির সদস্য জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা (সন্তু লারমা) ও সুদত্ত চাকমাও বৈঠকে অংশ নেন।
আহ্বায়কের বিশেষ আমন্ত্রণে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য গৌতম কুমার চাকমা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
সংসদ সচিবালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “পার্বত্য চট্টগ্রামে কুকি চিন সন্ত্রাসীদের দমনে কোনো নিরীহ অধিবাসী যেন হেনস্তার শিকার না হয়, সে বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অবহিত করার জন্য সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় বৈঠকে।”
তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের কাছে হস্তান্তরিত বিভাগ/দপ্তর বিষয়গুলোর সমস্যা ও করণীয় বিষয়ে আলোচনার জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীকে আহ্বায়ক করে বৈঠকে ৭ সদস্যের একটি কমিটি পুনর্গঠন করা হয়।
চুক্তি বাস্তবায়ন ও পরিবীক্ষণ কমিটির আহ্বায়ক আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের বলেন, “পাবর্ত্য এলাকায় শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখতে সেখানে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে তৎপরতা বাড়াতে বলা হয়েছে।”
১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর পার্বত্য জনসংহতি সমিতির সঙ্গে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের পার্বত্য শান্তি চুক্তি হয়। তখন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক জাতীয় কমিটির চেয়ারম্যানের দায়িত্বে ছিলেন আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ; সরকারের পক্ষে তিনি চুক্তিপত্রে সই করেন।
২০০৯ সালের ২৫ মে সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া পরিবীক্ষণ কমিটি করে সরকার। ওই সময় সংসদ উপনেতা হিসেবে সাজেদা চৌধুরী মন্ত্রীর মর্যাদায় ওই কমিটিতে ছিলেন।
সবশেষ ২০১৮ সালে আবুল হাসানাত আবদুল্লাহকে শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া পরিবীক্ষণ কমিটির আহ্বায়ক করা হয়।
এপ্রিলের শুরুতে বান্দরবানে পরপর দুই দিন ব্যাংকে লুটের ঘটনায় সশস্ত্র গোষ্ঠী কেএনএফ এর জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠে। এরপর পাহাড়ে শুরু হয় অভিযান।
ব্যাংক লুট এবং কেএনএফ এর সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে এ পর্যন্ত নারী ও পুরুষ মিলিয়ে অন্তত ৭৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই বম জনগোষ্ঠীর।
ওই ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে রুমা ও থানচিতে অভিযান চালাচ্ছে যৌথ বাহিনী। এই অভিযানে সাধারণ পাড়াবাসীও হেনস্তার শিকার হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে, যে কারণে চুক্তি বাস্তবায়ন ও পরিবীক্ষণ কমিটির বৈঠকে বিষয়টি তোলা হয়।
পুরনো খবর
পাহাড়ে ব্যাংক লুট: কুকি-চিনকে কঠোরভাবে দমনের ঘোষণা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর
পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি: বাস্তবায়ন নাকি নিরাপত্তার চশমায় চক্ষু গোপন
পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণের নেতৃত্বে হাসানাত আবদুল্লাহ