তাদের বিরুদ্ধে ১১ কোটি ৩৪ লাখ টাকা বিদেশে পাচারের অভিযোগ করা হয়েছে এজাহারে।
Published : 20 Feb 2025, 05:31 PM
দুর্নীতির অভিযোগ মাথায় নিয়ে পলাতক পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ ও তার স্ত্রী-সন্তানদের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
তাদের বিরুদ্ধে ১১ কোটি ৩৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা বিদেশে পাচারের অভিযোগ করা হয়েছে এজাহারে।
বৃহস্পতিবার দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন মামলা সাংবাদিকদের বলেন, দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১ এর উপপরিচালক মো. হাফিজুল ইসলাম মামলাটি করেন। বেনজীর ছাড়াও তার স্ত্রী জীশান মীর্জা ও দুই মেয়ে ফারহীন রিশতা বিনতে বেনজীর ও তাহসীন রাইসা বিনতে বেনজীরকে এতে আসামি করা হয়েছে।
এজাহারে বলা হয়, ব্যাংক থেকে বিপুল পরিমাণ নগদ টাকা উত্তোলনের পর কোথাও তাদের বিনিয়োগের প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তারা ২০২৪ সালের বিভিন্ন সময় তাদের নামীয় দীর্ঘদিনের এফডিআর হিসাব মেয়াদ পূরণের আগেই উত্তোলন করেন। এফডিআরের অর্থের গ্রহণযোগ্য কোনো উৎস পাওয়া যায়নি। র্যাবের মহাপরিচালক ও পুলিশের আইজিপিসহ গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকাকালে ক্ষমতার অপব্যবহারপূর্বক ঘুষ-দুর্নীতির মাধ্যমে এ অর্থ অর্জন করেছেন।
দুদক বলছে, আসামারি অর্থ উত্তোলনের পরই বিদেশে চলে যান। ফলে ওই অর্থের প্রকৃতি, উৎস, অবস্থান, মালিকানা ও নিয়ন্ত্রণ গোপন করতে স্থানান্তর, রূপান্তর ও হস্তান্তরের মাধ্যমে অবৈধভাবে বিদেশে পাচার করেছেন।
অর্থপাচারের এ মামলার আগে প্রায় ৭৫ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে ২০২৪ সালের ১৫ ডিসেম্বর বেনজীর, তার স্ত্রী ও দুই মেয়ের বিরুদ্ধে চারটি মামলা করে দুদক।
ওই বছরের ৩১ মার্চ ‘বেনজীরের ঘরে আলাদীনের চেরাগ’ ও ৩ এপ্রিল ‘বনের জমিতে বেনজীরের রিসোর্ট’ শিরোনামে দুটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে একটি জাতীয় দৈনিক। সেখানে সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ উঠে আসে।
বিষয়টি নিয়ে আলোচনার মধ্যে ২২ এপ্রিল দুদক জানায়, বেনজীরের ‘অবৈধ সম্পদ’ নিয়ে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত অভিযোগের বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করেছে তারা। সেজন্য তিন সদস্যের একটি অনুসন্ধান কমিটি গঠন করা হয়।
পরে দুদকের আবেদনে বেনজীর, তার স্ত্রী ও তিন মেয়ের স্থাবর সম্পদ ক্রোকের আদেশ দেয় আদালত। সেইসঙ্গে তাদের নামে থাকা ব্যাংক হিসাব এবং বিভিন্ন কোম্পানিতে তাদের নামে থাকা শেয়ারও অবরুদ্ধ করার আদেশ আসে। সেই অনুযায়ী পরে ব্যবস্থাও নেয় দুদক।
চলতি বছরের ৮ জানুয়ারি দুদকের দুটি আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বেনজীর আহমেদের স্ত্রী জিসান মির্জা ও মেয়ে তাহসিন রাইসা বিনতে বেনজীরের আয়কর নথি জব্দের আদেশ দেয় আদালত।
বেনজীর ও তার স্ত্রী-কন্যাদের দেশের বাইরে যাওয়ার বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে কিছু বলা হয়নি। তবে বোট ক্লাবের সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগের জন্য দেওয়া চিঠিতে তিনি পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বিদেশে থাকার কথা বলেন। তারা সবাই দেশের বাইরে চলে গেছেন বলে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রতিবেদনও ছাপা হয়েছে।
আরও পড়ুন-
বেনজীরকে গ্রেপ্তারে ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড অ্যালার্ট জারির নির্দেশনা
বেনজীর ও মতিউর পরিবারের বিরুদ্ধে ৬ মামলা
বেনজীরের স্ত্রী-কন্যার আয়কর নথি জব্দের আদেশ