১১ জেলায় অন্তত ১০ লাখ ৯ হাজার ৫২২টি পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে; আর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন অন্তত ৫৪ লাখ ৬৪ হাজার ১৬৭ জন মানুষ।
Published : 30 Aug 2024, 04:39 PM
দেশের ১১টি জেলায় ভয়াবহ বন্যার মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৪ জনে; এসব জেলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ৫৪ লাখের বেশি মানুষ।
শুক্রবার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় বন্যায় মৃত্যু ও ক্ষতিগ্রস্তদের এই তথ্য জানিয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্ততিতে বলা হয়েছে, ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, নোয়াখালী, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়ীয়া, সিলেট, লক্ষ্মীপুর ও কক্সবাজারের ৬৪টি উপজেলা বন্যা প্লাবিত হয়েছে এবং ক্ষতিগ্রস্ত ইউনিয়ন বা পৌরসভার সংখ্যা ৪৮৬টি।
১১ জেলায় অন্তত ১০ লাখ ৯ হাজার ৫২২ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে; আর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন অন্তত ৫৪ লাখ ৬৪ হাজার ১৬৭ জন মানুষ।
সবচেয়ে বেশি ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে ফেনীতে।
এছাড়া কুমিল্লায় ১৪ জন, চট্টগ্রামে ৬ জন, খাগড়াছড়িতে ১ জন, নোয়াখালীতে ৮ জন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ১ জন, লক্ষ্মীপুরে ১ জন কক্সবাজারে ৩ জন এবং মৌলভীবাজারে ১ জন মারা গেছেন; নিখোঁজ রয়েছেন একজন।
আগের দিন বন্যায় ৫২ জনের মৃত্যুর খবর দিয়েছিল মন্ত্রণালয়। আর ক্ষতিগ্রস্তের সংখ্যা জানিয়েছিল ৫৫ লাখের বেশি।
উজানের তীব্র ঢল এবং অতি ভারি বৃষ্টির কারণে গত ২০ অগাস্ট থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে ভয়াবহ বন্যা দেখা দেয়। পরে দ্রুতই তা ছড়িয়ে যায় ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, নোয়াখালী, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সিলেট, লক্ষ্মীপুর ও কক্সবাজারে।
মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে পানিবন্দি-ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য দুর্গত এলাকাগুলো ৩ হাজার ২৬৯টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে ৪ লাখ ৬৯ হাজার ৬৮৭ জন মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। আর ৩৮ হাজার ১৯২টি গবাদি পশুকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্তদের চিকিৎসা সেবা দিতে এসব এলাকায় ৫৬৭টি মেডিকেল টিম কাজ করছে বলেও জানিয়েছে মন্ত্রণালয়।
সব নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে
এদিকে বৃষ্টিপাত কমে দেশের প্রধান প্রধান নদ-নদীর পানি সমতল বিপৎসীমার নিচে প্রবাহিত হচ্ছে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।
কেন্দ্রের সকাল ৯টার বুলেটিনে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের উজানে উল্লেখযোগ্য বৃষ্টিপাত কেবল মুন্সীগঞ্জের ভাগ্যকূল স্টেশনে ৫৪ মিলিমিটার নথিবদ্ধ করা হয়েছে। এছাড়া এই সময়ে অন্য কোথাও উল্লেখযোগ্য বৃষ্টিপাত নেই।
কেন্দ্র বলছে, ব্রহ্মপুত্র-যমুনা ও গঙ্গা-পদ্মা নদ-নদীর পানি সমতল হ্রাস পাচ্ছে, যা আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে।
দেশের উত্তরাঞ্চলের তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদীসমূহের পানি সমতল হ্রাস পাচ্ছে, যা আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত স্বাভাবিক প্রবাহ বজায় থাকতে পারে।
দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও পূর্বাঞ্চলের মনু নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং অন্যান্য প্রধান নদীগুলোর পানি সমতল হ্রাস পাচ্ছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের বরাত দিয়ে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র বলছে, আগামী ৪৮ ঘণ্টায় দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও পূর্বাঞ্চল এবং তৎসংলগ্ন উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা নেই।
ফলে এ সময় এ অঞ্চলের মনু, খোয়াই, ফেনী, মুহুরি, গোমতী, তিতাস ইত্যাদি নদীসমূহের পানি সমতল হ্রাস পেতে পারে এবং বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে।
দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের প্রধান নদীসমূহের পানি সমতল হ্রাস পাচ্ছে।
আগামী ৪৮ ঘণ্টায় দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস নেই।
এ সময় এ অঞ্চলের সাঙ্গু, মাতামুহুরি, কর্ণফুলি, হালদা ও অন্যান্য প্রধান নদীসমূহের পানি সমতল হ্রাস পেতে পারে।
শুক্রবার সকাল ৯টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় গঙ্গা নদীর পানি সমতল উজানে ফারাক্কা পয়েন্টে অপরিবর্তিত আছে (২২ দশমিক ৮২ মিটার) এবং দেশের অভ্যন্তরে সীমান্তবর্তী পাংখা পয়েন্টে ৮ সেন্টিমিটার কমেছে (২০ দশমিক ৫১ মিটার)।