ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আট দিন আগে যে স্থানটিতে লেখক অভিজিৎ রায়কে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছিল, সেই স্থানটি এবং বইমেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখে ছবি তুলে নিয়ে গেলেন তদন্তে সহায়তা করতে আসা চার এফবিআই সদস্য।
Published : 06 Mar 2015, 02:09 PM
শুক্রবার বেলা ১টা ২০ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি মোড়ের কাছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান সংলগ্ন ফুটপাতে অভিজিৎহত্যার ঘটনাস্থলে পৌঁছান যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থার সদস্যরা।
এ ঘটনার তদন্তের দায়িত্বে থাকা গোয়েন্দা পুলিশের উপ কমিশনার কৃষ্ণপদ রায় এ সময় তাদের সঙ্গে ছিলেন।
গত ২৬ ফেব্রুয়ারি রাতে স্ত্রী রাফিদা আহমেদ বন্যাকে সঙ্গে নিয়ে একুশের বইমেলা থেকে বের হওয়ার পর ওই জায়গাতেই হামলার শিকার হন মুক্তমনা ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা অভিজিৎ, যিনি যুক্তরাষ্ট্রে প্রকৌশলী হিসাবে কাজ করছিলেন।
হামলায় আহত বন্যাকে চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে নেওয়া হয়েছে। স্বামীর মতো ব্লগার বন্যাও যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক।
এফবিআই সদস্যরা ওই স্থানের ছবি তোলেন এবং পুরো এলাকা ঘুরে দেখেন। এরপর তারা যান সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মেলার স্থানে। সেখান থেকে যান বাংলা একাডেমীর ভেতরে।
বাংলা একাডেমী প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখার পর গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে পাশের পরমাণু শক্তি কমিশনের ফটকের সামনে ফুটপাতে আসেন তারা। এরপর রাস্তা পেরিয়ে আবার সোহরাওয়ার্দী সংলগ্ন ফুটপাতে ওঠেন এবং প্রথমবার ঘটনাস্থল দেখার প্রায় এক ঘণ্টা পর আবার সেখানে ফেরেন।
সাম্প্রদায়িকতাবিরোধী লেখক অভিজিতের দুটি বই বেরিয়েছে এবারের মেলায়। এ উপলক্ষে প্রকাশনা সংস্থা শুদ্ধস্বরের এক অনুষ্ঠানে সেই সন্ধ্যায় অংশ নেন অভিজিৎ ও বন্যা।
তারপর মেলা প্রাঙ্গণে বিজ্ঞান লেখকদের এক আড্ডায় যান তারা। সেখান থেকে ফেরার পথে টিএসসি পেরিয়ে এসে মিলন চত্বরের উল্টো দিকের ফুটপাতে ঘাতকের হামলার শিকার হন।
অভিজিৎ সেদিন যে পথ ধরে মেলায় এসে আবার ফিরে যাচ্ছিলেন, সেই পথ ধরেই হেঁটে হেঁটে অসংখ্য ছবি তোলেন এফবিআইয়ের চার সদস্য।
তারা ওই এলাকা ত্যাগ করার আগে কৃষ্ণপদ রায় সাংবাদিকদের বলেন, “আমাদের সহযোগিতা করার জন্য এফবিআই সদস্যরা গতকাল বাংলাদেশে এসেছেন। তাদের সঙ্গে আমাদের বৈঠক হয়েছে। আজ তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন, বইমেলার এলাকাও ঘুরে দেখেছেন। এর ভিত্তিতে তদন্তের কোনো অগ্রগতি হলে আমরা আপনাদের জানাব।”
হত্যাকাণ্ডের চার দিন পর ঢাকার যাত্রাবাড়ী থেকে শাফিউর রহমান ফারাবীকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। ইন্টারনেটে ধর্মীয় উগ্রবাদের প্রচারক ফারাবী ফেইসবুকে অভিজিৎকে হত্যার হুমকি দিয়েছিলেন।
পুলিশ তাকে ১০ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করলেও তদন্তে এ পর্যন্ত উল্লেখ করার মতো কোনো অগ্রগতির তথ্য তদন্তকারীরা দিতে পারেননি।