গৃহকর্মীকে কাজ করিয়ে পারিশ্রমিক না দেয়া ও নির্যাতনের মামলা থেকে অব্যাহতি পেলেন না নিউ ইয়র্কে বাংলাদেশের সাবেক কনসাল জেনারেল মো. মনিরুল ইসলাম ও তার স্ত্রী।
Published : 07 Jan 2015, 12:50 PM
মামলা থেকে অব্যাহতি চেয়ে মনিরুল ইসলাম ও তার স্ত্রী ফাহিমা তাহসিনা প্রভার করা এক আবেদনের শুনানি শেষে নিউ ইয়র্ক সিটির ম্যানহাটন ফেডারেল কোর্টে স্থানীয় সময় মঙ্গলবার এ ঘোষণা দেন আদালতের জজ সিডনি স্টেইন।
বিনা পারিশ্রমিকে ‘দাসত্বের মতো পরিবেশে’ কাজ করতে বাধ্য করার অভিযোগে ম্যানহাটন ফেডারেল কোর্টে গত বছরের ২১ মার্চ মনিরুল ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে মাসুদ পারভেজ রানা নামে তাদের সাবেক এক গৃহকর্মী এই মামলা করেন।
এ মামলা দায়েরের আগেই মরক্কোয় রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ পান মনিরুল ইসলাম। ওই বছরের ২৩ মার্চ সস্ত্রীক তিনি নিউ ইয়র্ক ছেড়ে আফ্রিকার দেশ মরক্কো যান। এখনও তিনি সেখানেই কর্মরত।
মামলা থেকে অব্যাহতি চেয়ে করা আবেদনে মনিরুল ও তার স্ত্রী যুক্তি দেখান, কূটনীতিক হওয়ায় তারা এ ধরনের মামলায় বিচারের মুখোমুখি হতে পারেন না।
এ ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র আদালত বলেছে, তাদের গৃহকর্মীকে নির্যাতন ও তার বেতন-ভাতার বিষয়টি ‘কনসুলার ফাংশন’ পর্যায়ে পড়ে না।
“তাই এ ঘটনায় নিউ ইয়র্কে বাংলাদেশ কনসাল জেনারেলকে অভিযুক্ত করা হয়নি। কনসাল জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করা মনিরুল ইসলাম ও তার স্ত্রী ফাহিমা তাহসিনা প্রভাকে ব্যক্তিগতভাবে অভিযুক্ত করা হয়েছে।”
গৃহকর্মী রানার বাড়ি বাংলাদেশের কুমিল্লায়। মনিরুলের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়।
মামলায় রানা অভিযোগ করেন, মাসিক তিন হাজার ডলার বেতনের প্রতিশ্রুতিতে তাকে বাংলাদেশ থেকে নিউ ইয়র্কে নেওয়া হয়। অথচ মামলা করার আগের দেড় বছর পর্যন্ত ওই প্রতিশ্রুতি পূরণ দূরের কথা, কোনো টাকা না দিয়ে দৈনিক তাকে ১৬ থেকে ২০ ঘণ্টা কাজ করানো হয়েছে।
বিনা বেতনে এবং প্রতিদিনই অতিরিক্ত সময় তাকে কাজে বাধ্য করা হয় বলে অভিযোগ করেন রানা। সাপ্তাহিক ছুটির দিন বলতেও তার কিছু ছিল না বলে অভিযোগ তার।
মামলায় আরো বলা হয়েছে, রানা যাতে বাসা থেকে কোথাও না যেতে পারেন সেজন্যে তার পাসপোর্ট ও ভিসা আটক রাখা হয়। বাইরে গেলেই পুলিশ ধরে জেলে দেবে অথবা বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেবে বলে তাকে ভয় দেখানো হয়।
যুক্তরাষ্ট্র ফেডারেল আদালতের সর্বশেষ এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন রানার পক্ষে আইনি লড়াই চালিয়ে যাওয়া ডেচার্ট ল' ফার্মের অ্যাটর্নি এমিলি শিয়া।
তিনি বলেন, এখন সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে রানার বকেয়া মজুরি আদায় করার এবং জুলুম-নির্যাতনের ন্যায় বিচার পাওয়ার।
মামলার সর্বশেষ অবস্থা নিয়ে রাষ্ট্রদূত মনিরুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও টেলিফোনে তাকে পাওয়া যায়নি।