পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমানে বিস্ফোরণের তদন্ত করতে গিয়ে বাংলাদেশে জেএমবির বড় ধরনের বোমা হামলার পরিকল্পনার তথ্য উদ্ঘাটন করেছেন ভারতের গোয়েন্দারা।
Published : 14 Oct 2014, 10:02 PM
গোয়েন্দা সংস্থা এনআইএ’র প্রাথমিক প্রতিবেদনের ভিত্তিতে নয়া দিল্লির এক কর্মকর্তা মঙ্গলবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, জঙ্গি দমনে শেখ হাসিনা সরকারের পদক্ষেপের প্রতিশোধ নিতেই এই পরিকল্পনা করছে জেএমবি।
২০০৫ সালের ১৭ অগাস্ট বাংলাদেশজুড়ে একযোগে বোমাহামলা চালিয়ে আলোচনায় উঠে আসা জামায়াতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি) পরে নিষিদ্ধ হয়। সংগঠনটির শীর্ষনেতাদেরও ঝোলানো হয় ফাঁসিতে।
সম্প্রতি ময়মনসিংহে পুলিশ মেরে জেএমবির কারাবন্দি ৩ নেতাকে ছিনিয়ে নেওয়া সংগঠনটির আবার সক্রিয় হয়ে ওঠার ইঙ্গিত দিলেও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ও পুলিশের কর্তাব্যক্তিরা বলছেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
এর মধ্যেই বাংলাদেশ লাগোয়া ভারতের রাজ্য পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার খাগড়াগড়ে দুজন নিহত হলে জেএমবির বিষয়টি আলোচনায় উঠে আসে আবার।
ভারতের কেন্দ্রীয় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনআইএ এই ঘটনার তদন্ত করছে, তাদের সহযোহিতা করছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য পুলিশ ও সিআইডি।
এই তদন্তের বিষয়ে অবগত সরকারি ওই কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত রয়েছে। এনআইএ পশ্চিমবঙ্গ সিআইডির সহযোগিতায় আজও তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।”
এদের জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এনআইএ চেন্নাইয়ে তিন ব্যক্তিকে ডেকে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে বলেও জানান তিনি।
গত শনিবার এনআইএ বর্ধমান বিস্ফোরণের তদন্তভার নেওয়ার পর পশ্চিমবঙ্গের সন্দেহজনক কয়েকটি স্থানে তল্লাশি অভিযান চালিয়েছে বলে ওই কর্মকর্তা জানান।
“এনআইএ আজও কয়েকটি জায়গায় তল্লাশি চালিয়েছে। বর্ধমানে নিহত শাকিল আহমেদের ভাড়া বাড়িতেও তল্লাশি চালানো হয়েছে।”
বেশ কিছু তথ্য এবং বোমা তৈরির উপাদানও সেখান থেকে সংগ্রহ করেছেন এনআইএ গোয়েন্দারা।
পশ্চিমবঙ্গ পুলিশকে নিয়ে শিমুলিয়া মাদ্রাসায়ও তল্লাশি চালিয়েছে এনআইএ কর্মকর্তারা। আরো কয়েকটি মাদ্রাসা তাদের নজরদারিতে রয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্র জানায়।
ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমের খবর, বর্ধমানে যে বাড়িতে বিস্ফোরণ ঘটেছিল, সেখানে বোমা তৈরি করে তা বাংলাদেশে পাঠানো হত।
ওই বিস্ফোরণের মধ্য দিয়ে জামায়াতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি), ইন্ডিয়ান মুজাহিদিন (আইএম) ও আল জিহাদের সম্পৃক্ততায় গড়ে ওঠা ‘আন্তঃদেশীয় সন্ত্রাসী নেটওয়ার্ক’র বিষয়ে তথ্য বেরিয়ে আসছে বলে ভারতের গোয়েন্দাদের দাবি।
এদিকে বর্ধমানের ওই বিস্ফোরণের বিষয়ে ঢাকাকে তথ্য দেওয়া হবে বলে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানালেও এখনও কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি।
মঙ্গলবার ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী বলেন, নয়া দিল্লি তথ্য দেবে বলে তাকে আশ্বস্ত করেছে।