সদ্য প্রয়াত অধ্যাপক পিয়াস করিমকে শহীদ মিনারে নেওয়ার ঘোষণা তার পরিবার দেওয়ার পর বিতর্কিত এই টিভি আলোচককে ঠেকাতে বিভিন্ন সংগঠনের কর্মসূচির মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য জানালেন, মরদেহ শহীদ মিনারে নেওয়ার কোনও আবেদন তারা পাননি।
Published : 13 Oct 2014, 07:41 PM
ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক পিয়াস করিম সোমবার ভোরে মারা যাওয়ার পর তার পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, সবার শ্রদ্ধা জানানোর জন্য মরদেহ বুধবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেওয়া হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের মধ্যস্থিত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের তত্ত্বাবধায়ক কর্তৃপক্ষ বিশ্ববিদ্যালয়ই। সেখানে কোনো অনুষ্ঠানের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জানাতে হয়।
এর মধ্যেই বিভিন্ন ছাত্র ও সাংস্কৃতিক সংগঠন পিয়াস করিমের মরদেহ শহীদ মিনারে নেওয়া প্রতিরোধের ঘোষণা দেন। গণজাগরণ আন্দোলন এবং যুদ্ধাপরাধের বিচার নিয়ে তার বিভিন্ন সময়ের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় এই ঘোষণা দেন তারা।
ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ বিকালে উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের সঙ্গে দেখা করে অধ্যাপক পিয়াসের মরদেহ শহীদ মিনারে আনার অনুমতি না দেওয়ার আহ্বান জানান।
এরপর অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত মরদেহ শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য শহীদ মিনারে রাখার কোনও অনুমতি তারা দেননি। এ নিয়ে কারও পক্ষ থেকে ‘যথাযথ’ভাবে কোনো আবেদনও পাননি তারা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর অধ্যাপক আমজাদ আলী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “পিয়াস করিমের মরদেহ শহীদ মিনারে নেওয়ার বিষয়ে মৌখিকভাবে একজন জানালেও লিখিত কোনো আবেদন দেননি কেউই।”
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে, শহীদ মিনারে মরদেহ রাখতে হলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমতি নিতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদনের আগেই তা গণমাধ্যমে প্রচারে সমালোচনা করেন উপাচার্য।
“অনুমতি ছাড়া অনেক টেলিভিশনে (মরদেহ শহীদ মিনারে রাখা হবে) নাকি স্ক্রল দেওয়া হচ্ছে। এটাও অনুমোদন ছাড়া দেওয়া ঠিক হচ্ছে না।”
তিনি বলেন, “যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিষয়, সে জন্য তাকে (আসিফ নজরুল) বলেছি, লিখিতভাবে অনুমতি নিতে হবে। নিরাপত্তার বিষয় রয়েছে, সেজন্য স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনকেও জানানোর বিষয় রয়েছে।”
উপাচার্য বলেন, অনুমতি চাইলে তা প্রক্টর কার্যালয় হয়ে তার কাছে আসবে।
“এখনো আমার কাছে কোনো আবেদন আসেনি। তাই কোনো অনুমতি দেওয়া হয়নি,” সন্ধ্যা ৭টার দিকে বলেন অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিক।
পিয়াস করিম ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপার্টমেন্ট অব ইকোনমিক্স অ্যান্ড সোশ্যাল সায়েন্সেসের অধ্যাপক ছিলেন। তার বাড়ি কুমিল্লায়। তার বাবা অ্যাডভোকেট এমএ করিম একাত্তরে ছিলেন কুমিল্লা জেলা শান্তি কমিটির একজন নেতা।
বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলের আলোচনায় অংশ নিয়ে ডানঘেঁষা রাজনৈতিক বিশ্লেষক হিসেবে পরিচিতি পান অধ্যাপক পিয়াস। গত বছর যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ সাজার দাবিতে শাহবাগে শুরু হওয়া গণজাগরণ মঞ্চের
আন্দোলন নিয়ে বিরূপ মন্তব্যের কারণে তিনি ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন।
যুদ্ধাপরাধের বিচারের কৌশল নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের কারণেও তিনি সমালোচিত হন।