তথ্য অধিকার আইনে তথ্য পেতে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার কাছে আবেদন করেছিলেন নারায়ণগঞ্জের শেখ আলী আহাম্মদ, কিন্তু পাননি।
Published : 14 Jun 2014, 03:19 PM
এর পর এক বছর ঘুরে তথ্য অধিকার কমিশনের মাধ্যমে তথ্য পেয়ে খুশি হলেও তথ্য না দেয়ায় সরকারি ওই কর্মকর্তার যে সাজা হয়েছে, তাতে সন্তুষ্ট নন এই নাগরিক।
শনিবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে তথ্য পেতে নিজের এই বিড়ম্বনার কথা তুলে ধরেন আলী আহম্মেদ।
তথ্য কমিশন প্রতিষ্ঠার পাঁচ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে প্রধান তথ্য কমিশনার মোহাম্মদ ফারুকসহ তথ্য কমিশনাররা ছিলেন।
আলোচনায় অংশ নেন সাবেক আইনমন্ত্রী আব্দুল মতিন খসরু, নিজেরা করি’র সমন্বয়কারী খুশি কবির, রিসার্চ ইনেশিয়েটিভস বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক মেঘনা গুহঠাকুরতা, আর্টিকেল নাইনটিনের (বাংলাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়া) পরিচালক তাহমিনা রহমান।
“হত্যা মামলার মূল আসামির তথ্য চাই আমি। নারায়ণগঞ্জের আড়াই হাজার হাসপাতালে মামুন নামে কোনো ব্যক্তি (মামলার প্রধান আসামি) হাসপাতালে ৭ এপ্রিল থেকে ৯ এপ্রিল পর্যন্ত চিকিৎসাধীন ছিল কি না?”
“স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ওই তথ্য না দিয়ে চার মাস ঘুরিয়েছে। এরপর তথ্য কমিশনের বেড়াজাল শেষ করে আরো ৮ মাস পর তথ্য পাই।”
বিলম্বে তথ্য পাওয়ায় চার বছরে ওই মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করা হয় বলে জানান আলী আহম্মেদ।
নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে আলী আহাম্মদ বলেন, “আমার মনে হয়, তথ্য দেয়ার দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তাদের মধ্যে তথ্য দেয়ার অনাগ্রহ রয়েছে। আমার অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি এর একটি তথ্য পাওয়ার জন্য একজন সাধারণ মানুষকে কতটুকু ভোগান্তিতে পড়তে হয়।
“আমি যে দীর্ঘ লড়াই করেছি তা মোটেও সুখের বিষয় ছিল না। কয়জন নাগরিক এত কষ্ট করে তথ্য নেবে।”
তথ্য কমিশনার মোহাম্মদ আবু তাহের অনুষ্ঠানে বলেন, “আমরা শুরু থেকেই ওনার বিষয়টা অনেক গুরুত্বের সঙ্গে দেখেছি। তথ্য না দেয়ায় দায়িত্বশীল কর্মকর্তাকে এক হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়েছে।”
বর্তমানে ওই স্বাস্থ্য কর্মকর্তা পদোন্নতি পেয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উপপরিচালক হিসেবে কর্মরত।
আলী আহাম্মদ বলেন, “তথ্য কমিশনের শুনানিতে সেই দায়িত্বশীল কর্মকর্তাকে জরিমানা করা হলেও পরবর্তীতে তার পদোন্নতি হয়েছে। দায়িত্বে অবহেলার জন্যে জরিমানা বৃদ্ধি ও দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।”
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব নজরুল ইসলাম এর আগে জানান, সরকারি কর্মকর্তাদের বার্ষিক গোপনীয় অনুবেদনে (এসিআর) তাদের নেতিবাচক কর্মকাণ্ড উল্লেখ থাকে। জরিমানাটা হচ্ছে প্রতীকী। যা অন্যদের সামনে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকে।
এ সময় মতিন খসরু বলেন, “সেই কর্মকর্তার অবশ্যই বিচার হবে। তার বিরুদ্ধে মামলাও হবে।”
তথ্য অধিকার আইন নিয়ে ব্যাপক সচেতনতা বাড়াতে গণমাধ্যমে প্রচারণার আহ্বান জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে তথ্য নিতে নাগরিকদের অনাগ্রহের বিষয়টিও আলোচনায় উঠে আসে। এক্ষেত্রে আমলাতান্ত্রিক জটিলতাকে দায়ী করেন খুশি কবির।
এই আলোচনা অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনায় ছিলেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রধান সম্পাদক তৌফিক ইমরোজ খালিদী।
ক্যাসপারস্কির সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানটি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম ওয়েবসাইট এবং একাত্তর টেলিভিশনে অনুষ্ঠানটি সরাসরি দেখানো হয়।