ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে শতকেজি সোনা আটকের ঘটনায় ১০ জনকে আটক করা হয়েছে, যাদের মধ্যে ওই চারাচালান চক্রের মূল হোতা রয়েছেন বলে দাবি করেছে গোয়েন্দা পুলিশ।
Published : 03 Jun 2014, 11:03 AM
আটকরা হলেন- ইকরামুল হক পারভেজ (৫১), মিজানুর রহমান রিপন (৩২), আবুল হোসেন সুমন (৩৩), অসীম কুমার সিংহ (৩৭), আব্দুল কাদের (৩৩), আনিছুর রহমান (৩৪), বাবুল পোদ্দার (৫৪), আবদুল মান্নান ভূইয়া (৪১) ও জাহিদুর রহমান (৩৫) ও নজরুল ইসলাম লিটন (৪৬)।
এদের মধ্যে লিটন চক্রটির মূল হোতা জানিয়ে মহানগর পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম মঙ্গলবার সাংবাদিকদের বলেন, এদের সবাইকে সোমবার গভীর রাতে আটক করা হয়েছে।
পল্টনে নিজের ফ্ল্যাট থেকে লিটনকে আটক করা হয়। তার বিছানার বালিশের ভেতরে আট কেজি ওজনের ৭০টি সোনার বার এবং তিন লাখ টাকা ও ৫ হাজার সৌদি রিয়াল পাওয়া গেছে।
বাকি নয়জনকে বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন এলাকা থেকে আটক করা হয় জানিয়ে মনিরুল বলেন, ওই নয়জন মালয়েশিয়া পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। তাদের কাছে ৩৫ লাখ টাকা মূল্যের মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ও বাংলাদেশি মুদ্রা পাওয়া গেছে।
গত ২৬ এপ্রিল দুবাই থেকে আসা বাংলাদেশ বিমানের ০৫২ ফ্লাইটে তল্লাশি চালিয়ে টয়লেট থেকে ৯৩৬টি সোনার বার পাওয়া যায়। এসব বারের ওজন প্রায় ১০৬ কেজি।
সোনা পাচারে জড়িত সন্দেহে সে সময় বিমানের মেকানিক্যাল অ্যাসিসট্যান্ট আনিস উদ্দিন ভূইয়াকে আটক করা হয়।
মিন্টো রোডে পুলিশের গণমাধ্যম কার্যালয়ে মনিরুল ইসলাম বলেন, গত ২৬ এপ্রিল সোনা উদ্ধারের পর ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ ছায়াতদন্ত শুরু করে। তদন্তে পাওয়া তথ্যের ভিত্তেতে ১০ জনকে আটক করা হয়।
“গোয়েন্দা পুলিশ সোনা উদ্ধার মামলার তদন্ত শুরু করেছে জানতে পেরে তারা বিমানে ঢাকা ছাড়ার চেষ্টা করছিল। তারা মালয়েশিয়া যাবে বলে ঠিক করেছিল। পরদিন লিটন ব্যাংকক যাবে বলে সহযোগীদের আশ্বস্ত করেছিল।”
নজরুল ইসলাম লিটনকে সোনা চোরাচালানের ‘মূল হোতা’ দাবি করে গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন, লিটন থাইল্যান্ড ও সিঙ্গাপুর থেকে চোরাচালানের মাধ্যমে বাংলাদেশে সোনা নিয়ে আসে। এদেশে তার মূল এজেন্ট ইকরামুল হক পারভেজ।
চক্রটি কয়েক বছর ধরে গড়ে প্রতি সপ্তাহে দুটি করে অবৈধ সোনার চালান শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে পাচার করে এমন তথ্য পুলিশের কাছে রয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
প্রভাবশালী অনেকে আর্থিক সু্বিধার বিনিময়ে বিভিন্ন সময় চক্রটিকে সহায়তা করেছে এমন অভিযোগও রয়েছে বলে জানান গোয়েন্দা কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম।
তিনি বলেন, সোনা চোরাচালানের সঙ্গে বিমানবন্দরে নিরাপত্তা রক্ষায় নিয়োজিত ৩০টি সংস্থার কোনো সদস্য জড়িত রয়েছে কি না তাও খতিয়ে দেখা হবে।
ব্রিফিংয়ে গোয়েন্দা পুলিশের উপকমিশনার শেখ নাজমুল আলম, অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার মো. আব্দুল আহাদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।