চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দরে মধ্যপ্রাচ্য থেকে আসা ফ্লাইট থেকে একটি সোনার চালান আটকের পর গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের জুতার ভেতরেও কয়েকটি বার পাওয়া গেছে।
Published : 25 Mar 2014, 01:07 PM
দোহা থেকে দুবাই হয়ে আসা ওই বিমান থেকে সব মিলিয়ে ৯২৩টি সোনার বার উদ্ধার করা হয়েছে বলে মঙ্গলবার বিকালে শুল্ক কর্মকর্তারা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।
বিমানবন্দর কাস্টমসের সহকারী কমিশনার পারভেজ আল জামান বলেন, ১০৭ কেজি ৬০০ গ্রাম ওজনের সোনার বারগুলোর মূল্য ৪৬ কোটি ১৫ লাখ টাকা হবে।
সকালে আসা বাংলাদেশ বিমানের ওই ফ্লাইটের সাত যাত্রীসহ মোট ১০ জনকে এই সোনা পাচারের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গত কয়েক মাসে শাহ আমানতে আটক হওয়া সোনার সবচেয়ে বড় চালান এটি। এর আগে কয়েক দফায় কয়েকটি চালান আটক করা হয়েছিল।
চট্টগ্রাম কাস্টমস কমিশনার মাসুদ সাদিক সাংবাদিকদের বলেন, এই বিমানবন্দরে আটক সোনার সর্ববৃহৎ চালান এটি। এর আগে ৪৯ ও সাড়ে ১০ কেজির চালান ছিল সর্বোচ্চ।
গত ৬ ফেব্রুয়ারি রাতে পরিত্যক্ত অবস্থায় ৪২০টি সোনার বার আটক করা হয়েছিল, যার ওজন ছিল ৪৯ কেজি।
মঙ্গলবার সকালে আটকের পর ৯০২টি সোনার বার জব্দের কথা জানিয়েছিলেন শুল্ক কর্মকর্তারা। পরে তা বেড়ে যায়।
পারভেজ জামান বলেন, “পুনঃগননায় আরো তিনটি এবং পরে আটদের জুতার ভেতর থেকে আরো ১৮টি বার জব্দ করা হয়।”
কাস্টমসের সহকারী কমিশনার মশিউর রহমান মন্ডল জানান, প্রথমে এক যাত্রীর আসনের নিচ থেকে কিছু সোনার বার জব্দ করা হয়। পরে পুরো বিমান তল্লাশি আরো কয়েকজন যাত্রীর কাছে এবং পরিত্যক্ত অবস্থায় বাকি বারগুলো পাওয়া যায়।
তাদের মধ্যে প্রথম দুজনের বাড়ি চট্টগ্রামের রাউজানে, পরের তিনজন ফটিকছড়ি এবং পরের দুজনের মধ্যে একজনের বাড়ি মুন্সীগঞ্জে এবং অন্যজনের বাড়ি ময়মনসিংহে।
বিজি-০২৬ ফ্লাইটটি মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে দোহা-দুবাই হয়ে চট্টগ্রাম আসে। চট্টগ্রাম থেকে এর ঢাকা যাওয়ার কথা ছিল।
“এছাড়া সন্দেহজনক আচরণের জন্য অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটের যাত্রী হাসান মাহমুদ, রহিম শিকদার ও মো. ফয়সাল নামে আরো তিন যাত্রীকে আটক করা হয়, যারা বিমানটিতে করে ঢাকা যেতে টিকিট কিনেছিলেন,” বলেন মশিউর।
তিনি বলেন, এই তিন ব্যক্তি ঢাকা যাওয়ার কথা থাকলেও তারা তাদের টিকেট ফেরৎ দেয়া পরও বিমান বন্দরে অবস্থান করছিলেন।
প্রলোভনে যুক্ত, হোতারা বাইরে
সোনার চালান আটকের সঙ্গে জড়িত ১০ জনকে পুলিশে দেয়া হলেও তারা শুধু বাহকই ছিলেন বলে মনে করেন শুল্ক কর্মকর্তারা।
তারা বলছেন, ‘প্রলোভনে’ পড়ে যাত্রীরা সোনা চোরাচালানের সঙ্গে যুক্ত হয়। পরে তাদের কাছ থেকে সোনাগুলো সংগ্রহ করে মূল পাচারকারীরা।
বিমানবন্দর ব্যবস্থাপক উইং কমান্ডার নুর-ই-আলম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বিগত সময়েও যাদের কাছ থেকে সোনার বার পাওয়া গেছে, তাদের জিজ্ঞাসাবাদে বোঝা গেছে যে তারা শুধু বহনের কাজ করেছিল।
তিনি বলেন, “মূলত বাংলাদেশকে রুট হিসেবে ব্যবহার করে পাচারকারীরা। এগুলো পরে বাংলাদেশ হয়ে ভারতে চলে যায়।”
সাম্প্রতিক সময়ে ভারতে সোনার দাম বেশি হওয়ায় বাংলাদেশ দিয়ে তা স্থলপথে ভারতে পাচার হচ্ছে বলেও সন্দেহ নুর-ই-আলমের।
পতেঙ্গা থানার ওসি মো. শাহাবুদ্দিন বলেন, এর আগে যতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তারা কেউই জানাতে পারেনি সোনার মালিক কে।
“বেশ কয়েকহাত বদল হয়ে সোনার বারগুলো যাত্রীদের কাছে আসে দেশে আনার জন্য। পরে চোরাকারবারিদের প্রতিনিধি তাদের ফোন করে বারগুলো নিয়ে যায়। এমনকি প্রতিনিধিদের নম্বরও তারা জানেন না।”