উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় পর্বে বিভিন্ন স্থানে ভোটকেন্দ্র দখলের ‘মহোৎসব’ চলছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি।
Published : 27 Feb 2014, 12:40 PM
বৃহস্পতিবার রাজধানীতে দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ ব্রিফিঙে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, “আমরা গত কয়েকদিন ধরে যে শঙ্কা ও উদ্বেগের কথা বলে আসছিলাম, আজ সকালে দুই ঘণ্টার মধ্যে ভোটকেন্দ্র্রে ক্ষমতাসীনদের তাণ্ডবে তার সুস্পষ্ট প্রতিফলন ঘটেছে। আমাদের আশঙ্কাই সত্য হয়েছে।”
সকাল ৮টায় দেশের ১১৫টি উপজেলায় ভোট শুরুর তিন ঘণ্টার মাথায় সাংবাদিকদের সামনে আসেন রিজভী, যিনি আগের দিন সুষ্ঠু ভোট না হলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন।
তিনি বলেন, “প্রথম দফার নির্বাচনে বিরোধী দল সমর্থিত প্রার্থীদের বিজয়ে হতভম্ব হয়ে ক্ষমতাসীনরা নিজেদের অনুকূলে ফলাফল নিতে ভোট কেন্দ্র দখল করে ব্যালট পেপারে অবাধে সিল মারছে। এ যেন কেন্দ্র দখলের মহোৎসব।”
নয়া পল্টনে বিএনপি কার্যালয়ে বিএনপির নির্বাচন মনিটরিং সেল আয়োজিত এই ব্রিফিংয়ের শুরুতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় নিজের নির্বাচনী এলাকা কেরানীগঞ্জে ভোটকেন্দ্র দখলের অভিযোগ তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, “১৯২ টি ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রের প্রায় সব কয়টি সকাল ১০টার মধ্যে ক্ষমতাসীন দলের সশস্ত্র কর্মীরা পুলিশে সহযোগিতায় দখল করে নিয়েছে। আমাদের সমর্থিত প্রার্থীর পোলিং এজেন্টদের মারধর করে বের করে দিয়েছে।”
ক্ষমতাসীন দলের লোকজন সকাল সাড়ে ১০টার মধ্যে শতকরা ৬০ ভাগ ব্যালট পেপারে সিল মেরে বাক্সে ফেলেছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন।
গয়েশ্বর বলেন, “সেনাবাহিনীর ভূমিকা হচ্ছে চেয়ে চেয়ে দেখার মতো। কারণ তাদের কোনো ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা নেই। র্যাবের ভূমিকাও অনুরূপ। ক্ষমতাসীন দলের আজ্ঞাবহ পুলিশ সদস্যরা ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী শাহীন আহমেদ, তার ভাই ফারুক আহমেদ, শিপুলসহ সশস্ত্ররা ভোট কেন্দ্র দখলে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।”
কেরানীগঞ্জে ৭০ হাজার হিন্দুর ভোট রয়েছে জানিয়ে এই বিএনপি নেতা অভিযোগ করেন, এবার তাদেরও ভোট কেন্দ্রে যেতে দেয়া হচ্ছে না।
রিজভী বলেন, ভোট শুরুর পর ফেনীর সদর ও পশুরাম, নোয়াখালীর সদর, চাঁদপুরের মতলব, মাগুরার শালিখা, যশোরের চৌগাছা, কক্সবাজারের চকোরিয়া, ভোলার বোরহানউদ্দিন, বরিশাল সদর ও মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার প্রায় অধিকাংশ কেন্দ্র থেকে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীদের পোলিং এজেন্টদের বের করে দেয়া হয়েছে। সাধারণ ভোটারদেরও ভোট কেন্দ্রে যেতে বাধা দেয়া হচ্ছে।
“মুন্সিগঞ্জে সব কেন্দ্র দখল করা হয়ে গেছে। সাবেক সাংসদ আবদুল হাইকে লাঞ্ছিত করা হয়েছে।”
রিজভী জানান, এ পরিস্থিতির কারণে বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে বিরোধী দল সমর্থিত প্রার্থীরা।
তিনি বলেন, “নির্বাচন কমিশন সরকারের সেবাদাসে পরিণত হয়েছে। সকাল থেকে ভোট কেন্দ্র দখলের অসংখ্য অভিযোগ দেয়ার পরও তারা চুপ করে রয়েছে। আমরা তাদের পদত্যাগ দাবি করছি।”
অন্যদের মধ্যে দলের কেন্দ্রীয় নেতা কাজী আসাদুজ্জামান, আবদুল লতিফ জনি, শামীমুর রহমান, শিরিন সুলতানা, আবদুস সালাম আজাদ, এ বি এম মোশাররফ হোসেন, রফিক শিকদার, বেলাল আহমেদ সংবাদ ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন।