দলীয় প্রধানদের ভাষণ সম্প্রচারের নীতিমালা চায় বিটিভি

দশম সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে অংশ নেয়া রাজনৈতিক দলের প্রধানদের জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণ সম্প্রচারের জন্য নির্বাচন কমিশনের কাছে নীতিমালা চেয়েছে বাংলাদেশ টেলিভিশন।

মঈনুল হক চৌধুরীবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 Dec 2013, 05:04 PM
Updated : 30 Dec 2013, 05:04 PM

সোমবার বিকালে নীতিমালা চেয়ে কমিশন সচিবালয়ে একটি চিঠি দিয়েছেন বিটিভির মহাপরিচালক ম হামিদ। ইসি সচিব মোহাম্মদ সাদিকের কাছে পাঠানো ওই চিঠির একটি অনুলিপি তথ্য মন্ত্রণালয়েও পাঠানো হয়েছে।

ইতোমধ্যে সুবিধাজনক সময়ে নির্বাচন উপলক্ষে দলীয় প্রধানদের জাতির উদ্দেশে ভাষণ বিটিভিতে সম্প্রচারের বিষয়টি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে নিশ্চিত করেছেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু।

তবে রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশন বিটিভিতে সরাসরি সম্প্রচার হওয়া ভাষণের বিষয়ে বিস্তারিত সিদ্ধান্ত এখনো নেয়া হয়নি।

৫ জানুয়ারি ভোটের আগে শুক্রবার মধ্যরাত থেকে নির্বাচনী প্রচারণা শেষ হবে। তার আগেই নির্বাচন কমিশন, তথ্য মন্ত্রণালয় ও বিটিভি সার্বিক বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।

বিটিভি মহাপরিচালকের চিঠিতে বলা হয়, দলের প্রধান বা প্রতিনিধির ভাষণ বিটিভি থেকে সরাসরি সম্প্রচারে দল, দলীয় প্রতিনিধি মনোনয়ন, ভাষণের ব্যাপ্তিকাল ও প্রচারের সময় নির্ধারণ, দলীয় পতাকা ও প্রতীক ব্যবহার এবং ভাষণের পাণ্ডুলিপি অনুমোদনে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তসহ গাইডলাইন প্রয়োজন।

চিঠিতে ‘ভাষণ সম্প্রচারের গাইডলাইন প্রদানে ব্যবস্থা নেয়ার’ জন্য নির্বাচন কমিশনের কাছে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

চিঠির বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

নবম সংসদ নির্বাচনসহ আগের নির্বাচনগুলোতে দলীয় প্রধানদের ভাষণ সম্প্রচার হয়েছে। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রচারণার শেষের দিন (২৭ ডিসেম্বর রাত সাড়ে ৮টায় শেখ হাসিনা ও সোয়া ৯টা খালেদা জিয়া) আধঘণ্টারও বেশি জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দিয়েছিলেন প্রধান দুই দলের নেতা।

এর আগে এবারের আয়োজন নিয়ে নির্বাচন কমিশন সচিব মোহাম্মদ সাদিক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী দলীয় প্রধান বা প্রতিনিধির ভাষণের বিষয়টি বিটিভি সিদ্ধান্ত নেবে। কারা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে, কত আসনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী রয়েছে তা বিবেচনা করে অতীতের ধারাবাহিকতায় তা হতে পারে।

তবে সার্বিক বিষয়ে কমিশন সভায় এখনো আলোচনা হয়নি জানান তিনি।

বিরোধী দল বিএনপির বর্জনের মুখে এবারের নির্বাচনে ২০টি দলের পক্ষ থেকে মনোনয়ন পত্র জমা হয়। বাছাই ও প্রত্যাহারের নির্ধারিত সময়ের পর আটটি দল নির্বাচনী দৌড় থেকে পড়ে।

কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, বাকি ১২টি দলের মধ্যে রয়েছে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাদস), জাতীয় পার্টি (জেপি), গণতন্ত্রী পার্টি, গণফ্রন্ট, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশ, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট (বিএনএফ) ও বাংলাদেশের ওয়ার্কাস পার্টি।

দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণের বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের উপ দপ্তর সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “কবে ভাষণ দেবেন তা এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। সময়সীমা ও তারিখ নির্ধারণের বিষয়টি পরে আলোচনা করে নির্ধারণ করা হবে।”

জাতির পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ভাষণের জন্য ৪৫ মিনিট সময় চেয়ে ইসির কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন।

জাসদের সভাপতি ও তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু অন্তত ১০-১৫ মিনিট সময় ভাষণের জন্য প্রত্যাশা করেন।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “নির্বাচনী ইশতেহার নিয়ে দুয়েক দিনের মধ্যে আমরা বসবো। এরপর জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ, দিন ও সময়সীমা নিয়ে আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত নেবো।

“১ থেকে ৪ জানুয়ারির মধ্যে সুবিধাজনক সময়ে তা সম্প্রচার হতে পারে।”

সাধারণত নির্বাচনী ইশতেহারকে সামনে রেখে নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোটার উপস্থিতি বাড়াতে দলীয় প্রধানরা তাদের অবস্থান তুলে ধরেন ওই ভাষণে। আগে ধারণ করা ওই ভাষণ বিটিভি সম্প্রচার করে।

৩০০ সংসদীয় আসনের মধ্যে ১৫৩ আসনে একক প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। বাকি ১৪৭ আসনে ব্যালটে ভোট হচ্ছে।