নৌ দুর্ঘটনায় ক্ষতি কমিয়ে আনতে একটি ট্র্যাকিং ডিভাইস তৈরি করেছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষক-শিক্ষার্থী।
Published : 30 Aug 2013, 11:41 AM
জিপিএসনির্ভর এই ট্র্যাকারের মাধ্যমে প্রতি মুহূর্তে নৌযানের অবস্থান জানা যাবে। ফলে যে কোনো দুর্ঘটনায় দ্রুত সাড়া দেয়া সম্ভব হবে এবং প্রাণহানীর আশঙ্কা কমিয়ে আনা যাবে বলে মনে করছেন তারা।
দেশীয় প্রযুক্তিতে এই ট্র্যাকিং ডিভাইস তৈরিতে নেতৃত্ব দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল।
গবেষক দলে আরো রয়েছেন কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের শিক্ষক রুহুল আমিন সজীব, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের স্নাতকোত্তর শ্রেণির শিক্ষার্থী সৈয়দ রেজওয়ানুল হক নাবিল ও কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের ছাত্র নওশাদ।
সৈয়দ রেজওয়ানুল হক নাবিল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, মূলত বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্পোরশেনের (বিআইডব্লিউটিসি) আওতাধীন নৌযানগুলোর কাঠামো, অবস্থান, গতিপ্রকৃতি এবং দেশের আবহাওয়া বিবেচনায় রেখে এই ট্র্যাকিং ডিভাইস তৈরি করা হয়েছে।
বিআইডব্লিউটিসিকে ইতোমধ্যে এই ট্র্যাকিং ডিভাইস হস্তান্তর করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
নাবিল বলেন, শিগগিরই তাদের নৌযানে এই ডিভাইস লাগানো হবে। ফলে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে নৌযানের অবস্থান জানা যাবে খুব সহজেই।
“আমাদের দেশে প্রায়ই দুর্ঘটনার পর নৌযানের অবস্থান সনাক্ত করতে বিলম্ব হয়। ট্র্যাকার থাকলে দুর্ঘটনাকবলিত নৌযানের সঠিক অবস্থান দ্রুত জানা যাবে। এছাড়া এই ডিভাইসে বিশেষ সেন্সর থাকছে, যা দুঘর্টনার ঝুঁকির সংকেত দেবে। ফলে বহু মানুষের জীবন বাঁচানো যাবে।”
পরীক্ষামূলকভাবে এই ট্র্যাকিং ডিভাইস ব্যবহার করা হচ্ছে শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের দুটি বাসেও। ইন্টারনেটের মাধ্যমে খুব সহজেই ওই দুটি বাসের অবস্থান জানা যাচ্ছে।
জিপিএস ট্র্যাকিং ডিভাইস বিশ্বে নতুন কোনো প্রযুক্তি না হলেও বাংলাদেশে নৌযানে এ ধরনের প্রযুক্তি আগে ব্যবহার করা হয়নি।
কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের ছাত্র নওশাদ বলেন, “আমাদের ডিভাইসের জিপিএস মডিউল সংকেত গ্রহণ করে জিপিআরএসের মাধ্যমে সার্ভারে আপলোড করে। সার্ভার কো-অর্ডিনেটগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে ম্যাপে চিহ্নিত করে দেয়, যাতে খুব সহজেই ট্র্যাকারের অবস্থান বোঝা যায়। এর রক্ষণাবেক্ষণ খুব সহজ, খরচও অনেক কম।”
বাংলাদেশের আবহাওয়া ও যানবাহনের অবস্থা বিবেচনা করে এটি তৈরি করা হয়েছে, বিদেশ থেকে আমদানি করলে যা সম্ভব হতো না বলে মনে করেন এই তরুণ।
এই ট্র্যাকিং ডিভাইস তৈরিতে আর্থিক সহযোগিতা দিয়েছে ‘মুক্ত সফটওয়্যার’, আর কারিগরি সহযোগিতা দিয়েছে ‘ঐশী ইলেকট্রনিক্স’।