মতিঝিল থেকে হেফাজতে ইসলাম কর্মীদের উৎখাতের অভিযানে ‘নিখোঁজ’ কারো পরিবারকে খুঁজে পাননি ওই ঘটনায় হাই কোর্টে আবেদনকারী আইনজীবী।
Published : 19 May 2013, 03:24 PM
রিট আবেদনকারী ইউনুস আলী আকন্দ রোববার বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার ও বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের বেঞ্চকে এ তথ্য জানান।
মতিঝিলে হেফাজতের সমাবেশ ঘিরে ‘যেসব ঘটনা ঘটেছে’ তার তদন্তে বিচার বিভাগীয় কমিশন গঠনের নির্দেশনা চেয়ে গত ১৩ মে হাই কোর্টে রিট করেন ওই আইনজীবী।
শুনানির এক পর্যায়ে আদালতের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ওইদিন মতিঝিলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানের সময় নিখোঁজ কোনো ব্যক্তির পরিবারের সন্ধান তিনি পাননি।
জবাবে ইউনুস বলেন, “তারা ভয়ের মধ্যে আছে। সরকারের প্রেসনোটে বলা হয়েছে ১১ জন মারা গেছে। হেফাজতসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দল দাবি করেছে, তিন হাজার লোক নিখোঁজ। সেখানে পবিত্র কোরআন পোড়ানো হয়েছে।”
এ সময় আদালত বলেন, “আপনি কি মনে করেন, কী ঘটেছে ওখানে?”
গণমাধ্যমের সংবাদ ও রাজনৈতিক দলগুলোর বক্তব্যের উল্লেখ করে ইউনুস আলী বলেন, মাদ্রাসার লোকজন ভয়ে এগিয়ে আসছে না।
“এজন্য শাপলা চত্বরে মধ্যরাতে ১০ মিনিটের মধ্যে সেখানে কি ঘটেছে তা তদন্তের জন্য জুডিশিয়াল কমিশন গঠন করার আবেদন করেছি। বিচার বিভাগীয় কমিশনের তদন্ত হলে প্রকৃত সত্য বেরিয়ে আসতে পারে।”
বিচারক এ পর্যায়ে বলেন, “মিডিয়ার কাজ হচ্ছে নিখোঁজদের খুঁজে বের করা। যদি কেউ নিখোঁজ থাকে, আর তার আত্মীয়-স্বজন যদি কথা বলে, তবে তো মিডিয়া সে খবর লুফে নেবে।”
এ সময় ইউনুস বলেন, এ জন্যই তদন্ত হওয়া উচিত।
পরে আদালত মঙ্গলবার পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করে।
সাবেক একজন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে পাঁচ অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির সমন্বয়ে কমিশন গঠনের নির্দেশনা চেয়ে করা ওই রিট আবেদনে স্বরাষ্ট্র সচিব, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, আইন সচিব ও ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনারকে বিবাদি করা হয়।
৫ ও ৬ মে মতিঝিলে শাপলা চত্বরের ওই ঘটনার অনুসন্ধানে রুল জারির পাশাপাশি ওই ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত হকারদের পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ দিতে এফবিসিসিআই ও বিবাদিদের প্রতি নির্দেশনা চেয়েছেন তিনি।
গত ৫ মে ঢাকা অবরোধ শেষে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে অবস্থান নিয়ে সমাবেশ করে চট্টগ্রামভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলাম। তাদের সমাবেশ চলাকালে দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত পল্টন, বায়তুল মোকাররম, বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ ও মতিঝিলে ব্যাপক ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়।
সন্ধ্যায় নির্ধারিত সময় পার হওয়ার পরেও সমাবেশ শেষ না হওয়ায় গভীর রাতে সেখানে অভিযান চালিয়ে হেফাজত কর্মীদের সরিয়ে দেয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
ওই অভিযানে বহুসংখ্যক মানুষের প্রাণহানি হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয় হেফাজত ও বিএনপির পক্ষ থেকে। তবে ওই অভিযোগ অস্বীকার করে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, অভিযানে প্রাণঘাতী কোনো অস্ত্র ব্যবহার করা হয়নি, অভিযানের সময় কেউ নিহতও হননি।