বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ‘দ্রুত ও জরুরিভিত্তিতে' শত শত কারখানা পরিদর্শক নিয়োগ দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) মহাপরিচালক গাই রাইডার।
Published : 02 May 2013, 08:04 AM
দুর্যোগপ্রবণ এ খাতে বর্তমানে মাত্র ৫৫ জনের মতো পরিদর্শক নিয়োজিত আছেন যা খুবই 'অপর্যাপ্ত' বলে উল্লেখ করেন তিনি।
আইএলও প্রধান মনে করেন, বাংলাদেশের পোশাক কারখানার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পশ্চিমা পোশাক ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানগুলোরও আরো ভূমিকা নেয়া দরকার।
তবে এক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকারকেই সবার আগে এগিয়ে আসা উচিত ছিল মন্তব্য করে রাইডার বলেন, সরকার এক্ষেত্রে তাদের আহ্বান ও অনুরোধে সাড়া দিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়নি।
গাই রাইডার বলেন, কারখানায় যথাযথ নিরাপত্তা তদারকির জন্য প্রশিক্ষণ দিতে প্রস্তুত আইএলও। তবে বাংলাদেশে যথোপযুক্ত শ্রম আইন পাস হওয়ার পরেই তা হবে।
“আমরা কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশে নতুন শ্রম আইন করার কথা বলছি। নতুন আইনের খসড়া মন্ত্রিপরিষদেও পাস হয়েছে, তবে তাতে দীর্ঘ সময় লাগছে।”
নতুন আইনে শ্রমিকদের সংগঠন করার অধিকার রক্ষিত হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
“আইনে সংস্কার আসতেই হবে, তবে দুঃখজনক হলো তা অনেকের জন্যই দেরি হয়ে গেছে,” বলেন আইএলও প্রধান।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকার পোশাক শিল্প খাতে ব্যাপক সংস্কার না আনলে বিদেশি কোম্পানিগুলো দ্রুতই অন্য দেশের দিকে এগোবে। আর সেক্ষেত্রে মিয়ানমারের দিকে ঝুঁকতে পারে তারা।
এদিকে ইনডিপেন্ডেন্টের এ প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের ৮৫ থেকে ৯০ শতাংশ পোশাক কারখানায় যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেই বলে জানিয়েছেন, কারখানার মান নিয়ে যুক্তরাজ্যভিত্তিক প্রতিষ্ঠান গ্রিনগ্রেড সলিউশনসের শ্যারোন স্যাডে।
কারখানায় আন্তর্জাতিক মান বজায় রাখতে প্রশিক্ষণ সেবাদানকারী এই প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে এ খাতে আরো দুর্ঘটনার আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
বাংলাদেশের যেসব পোশাক কারখানা কর্মীদের স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার ক্ষেত্রে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মানদণ্ড মেনে চলছে না তাদের ‘কালোতালিকাভুক্ত' করার জন্য যুক্তরাজ্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
এছাড়া কারখানার নিরাপত্তায় বাংলাদেশ সরকার যথাযথ ব্যবস্থা না নিলে এ দেশের পোশাকের ওপর থেকে শুল্ক ও কোটামুক্ত (জিএসপি) সুবিধা প্রত্যাহারের হুমকি দেয়ার জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।