আগরতলা, জানুয়ারি ১৫ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- সঙ্গীতজ্ঞ শচীন দেব বর্মণের কুমিল্লার পৈত্রিক বাড়িতে সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট ও জাদুঘর করার আশ্বাস দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ত্রিপুরা সফরে শেখ হাসিনা ভারতীয় লেখক ও সাংস্কৃতিক কর্মীদের এ আশ্বাস দেন বলে শনিবার জানান গৌতম দাস।
শুক্রবার ত্রিপুরায় রাষ্ট্রীয় অতিথিশালায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎকারী আট সদস্যের ভারতীয় লেখক ও সাংস্কৃতিক কর্মীদের দলে ছিলেন গৌতম।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “শচীন দেবের কুমিল্লার পৈত্রিক বাড়ি একটি পল্লী সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট ও জাদুঘর করার বিষয়ে আমাদের প্রস্তাব অত্যন্ত আন্তরিকতার সঙ্গে নিয়েছেন শেখ হাসিনা।”
“ত্রিপুরা রাজ বাড়ি নামে পরিচিত এই বাড়ি পরিচর্যাহীন অবস্থায় ছিলো এবং স্থানীয় কিছু মানুষ সেখানে পোল্ট্রি ফার্ম করে। তবে বাংলাদেশে শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতায় আসার বাংলাদেশের কিছু বুদ্ধিজীবীসহ আমরা ত্রিপুরা সাংস্কৃতিক সমন্বয় কমিটির ব্যানারে বিষয়টি সরকারের নজরে আনি এবং তখন যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হয়।”
মাণিক্য রাজবংশের উত্তরসূরি ছিলেন বর্মন। এই বংশ পাঁচশ’ বছরেরও বেশি সময় ত্রিপুরা শাসন করে। ১৯০৬ সালে তৎকালীন ত্রিপুরা রাজ্যের কুমিল্লা রাজ বাড়িতে জন্ম নেন শচীন দেব।
ত্রিপুরার বীর বিক্রম বাহাদুর মাণিকের মুখ্যমন্ত্রী নবাবদীপ চন্দ্র দেব বর্মণের ছোটো ছেলে শচীন দেব বর্মণ পল্লী বাংলার ভাটিয়ালি, সারি, ধামাইল ও অন্যান্য ঐতিহ্যবাহী গান ও সঙ্গীতকে এক অন্য মাত্রায় নিয়ে যান।
তার কর্ম নিয়ে গবেষণা ও তার জীবন নিয়ে প্রামাণ্যচিত্র তৈরি করে ২০০৭ সালে ত্রিপুরা সরকারের ‘শচীন দেব বর্মণ স্মৃতি পুরস্কার’ পান নির্মাতা বিপ্লব গোস্বামী।
১৯৩২ সালে কলকাতা বেতার স্টেশনে একজন গায়ক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন এবং দ্রুতই জনপ্রিয়তা লাভ করেন শচীন দেব। তার প্রথম অ্যালবাম করে হিন্দুস্তান রেকর্ডস। এরপর কিছু বাংলা চলচ্চিত্রে গান করেন তিনি। হিন্দি চলচ্চিত্রে গান করার জন্য ১৯৪৪ সালে বোম্বে যান তিনি এবং সেখানেই বাকি জীবন কাটিয়ে দেন। তার সুরে গান করেন উপমহাদেশের বহু প্রখ্যাত শিল্পী।
ঢাকার বিচারপতি রায়বাহাদুর কমলনাথ দাসগুপ্তের নাতি মীরা দাসগুপ্ত ছিলেন শচীনের সহধর্মিনী। তাদের একমাত্র সন্তান রাহুল দেব বর্মনের গানও সত্তরের দশকে তার বাবার গানের মতোই জনপ্রিয়তা পায়।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/প্রতিনিধি/এএইচ/পিডি/০০৪৫ ঘ.