তুমুল উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর যে অভিযোগ উঠেছে, তা উড়িয়ে দিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর।
Published : 16 Jun 2022, 07:25 PM
তিনি বৃহস্পতিবার ঢাকায় নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের বলেছেন, ভোটের ফল বদলে ফেলার সুযোগ রিটার্নিং কর্মকর্তার ছিল না।
আগের দিন অনুষ্ঠিত কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পর ক্ষমতাসীন দলের মেয়র প্রার্থী আরফানুল হক রিফাতকে ৩৪৩ ভোটে বিজয়ী ঘোষণা করেন ও্ নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা শাহেদুন্নবী চৌধুরী।
সেখানে ভোটের ফল পরিবেশন কেন্দ্রে ১০৫টি কেন্দ্রের ১০১টির ফল ঘোষণার পর স্বতন্ত্র প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কুর এগিয়ে থাকার মধ্যে হৈ চৈয়ের কারণে ফল ঘোষণা বন্ধ হয়েছিল কিছুটা সময়।
এরপর বাকি চার কেন্দ্রসহ পূর্ণাঙ্গ ফল রিটার্নিং কর্মকর্তা ঘোষণা করলে কারচুপির অভিযোগ তোলেন সাক্কু। তিনি দাবি করেন, তার হিসাবে তিনি জিতেছেন, কিন্তু তাকে হারানো হয়েছে।
এর পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের প্রশ্নে আলমগীর বলেন, “আপনাদের চোখ দিয়ে আমরা (ভোট) দেখেছি। সবাই বলেছে অত্যন্ত সুন্দর, সুশৃঙ্খলভাবে নির্বাচন হয়েছে। প্রার্থীরাও সেটা বলেছে।
“এখন ফলাফলে রিটার্নিং অফিসারের তো পরিবর্তন, পরিবর্ধন করার সুযোগ নেই। কেন্দ্র থেকে প্রিজাইডিং অফিসার ডেটা দিয়েছেন, সেটা উনি ঘোষণা করেছেন। এখানে জোল্ট ম্যানিপুলেট করার কোনো সুযোগ নেই। এ ফলাফল প্রার্থী, তাদের এজেন্ট, ও অন্যদের কাছেও আছে।”
ইসির ভূমিকা নিয়ে প্রশ্নে তিনি বলেন, “নির্বাচন কমিশন তো সরাসরি পরিচালনা করে না, পরিচালনা করে রিটার্নিং অফিসার। তিনি কেন্দ্র ঠিক করেন, ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেন। কেন্দ্রে ফলাফল ঘোষণা করেন নির্বাচন করেন প্রিজাইডিং অফিসার, এ ফলাফলটাই চূড়ান্ত।
“কেন্দ্রে প্রিজাইডিং অফিসার যে ফলাফলটা পড়েছেন, সেটা কেন্দ্রীয়ভাবে সবার সামনে পড়ে শোনান (রিটার্নিং কর্মকর্তা)। বেসরকারি ঘোষণার পর আরও প্রক্রিয়া শেষ করে সরকারিভাবে ঘোষণা করেন, এটাই চূড়ান্ত।”
ফলাফল নিয়ে আপত্তি থাকলে আইনিভাবে কী করণীয়, তাও বাতলে দেন নির্বাচন কমিশনার আলমগীর।
তিনি বলেন, চূড়ান্ত ফলাফল কমিশনে পাঠিয়ে দেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। এরপর গেজেট প্রকাশ করা হয়।
“এরপরও কেউ যদি মনে করেন যে এখানে ভুল কিছু আছে, আস্থার অভাব আছে, তাহলে ইসির ট্রাইব্যুনালে যেতে পারে। এরপর সেটা পছন্দ না হলে আপিল ট্রাইন্যুনালে যেতে পারে। এরপর মহামান্য আদালত আছে, উচ্চ আদালত আছে।”
পরিস্থিতি শান্ত হতে ‘২০-২৫ মিনিট লেগেছে’
কুমিল্লা শিল্পকলা একাডেমিতে স্থাপিত ফল সংগ্রহ ও পরিবেশন কেন্দ্রে বুধবার রাতে ফল ঘোষণার সময় গোলযোগের বিষয় নিয়েও সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেন নির্বাচন কমিশনার আলমগীরকে।
জবাবে তিনি বলেন, “রেজাল্ট দেওয়ার পর এক পর্যায়ে (১০১টি কেন্দ্রের ফল ঘোষণার পর) প্রার্থীর সমর্থকরা এসে পরিবেশ নষ্ট করে ফেলে। রেজাল্ট ঘোষণা যে দেবেন, কার কথা কে শোনে। শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার জন্য ২০-২৫ মিনিট সময় লাগে।”
তখন রিটার্নিং কর্মকর্তা ইসির সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন জানিয়ে আলমগীর বলেন, “রিটার্নিং অফিসার এসপি, ডিসিকে ফোন করেন, আমাদের জানান। আমারা তাদের এক্সট্রা ফোর্স দিতে বলি, তারপর পরিস্থিতি সামাল দেন তারা। ঘোষণা দেওয়ার মতো পরিবেশ হলে রেজাল্ট ঘোষণা করে রিটার্নিং অফিসার।”