শিশুদের কাজে যোগ দেওয়ার বয়স ‘বিশেষ বিবেচনায়’ শিথিল করে সর্বনিম্ন ১৪ বছর নির্ধারণ করা শিশুশ্রম বিষয়ক আইএলও সনদের অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
Published : 28 Feb 2022, 06:50 PM
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সোমবার মন্ত্রিসভার ভার্চুয়াল বৈঠকে ‘আইএলও কনভেনশন-১৩৮’ অনুসমর্থনের প্রস্তাবে নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়।
বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সাংবাদিকদের ওই সনদে শিশুশ্রমের ন্যূনতম বয়স সংক্রান্ত শর্তগুলো তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, “এখানে তিনটা জিনিস আছে। একটা হল জেনারেল ভিউটা হল, যেহেতু বেসিক এডুকেশন করতে ১৫ বছর লাগে সুতরাং ১৫ বছরের কম কোনো বাচ্চাকে কাজে লাগানো যাবে না।
“দুই নম্বরে আরেকটু রিল্যাক্স করেছে, তবে কোনো দেশের যদি আর্থ সামাজিক অবস্থা বিশেষ বিবেচনার পরিপ্রেক্ষিতে তারা কমাতে চায় তাহলে ১৪ বছর পর্যন্ত কমানো যাবে, এর উপর না।
“তিন নম্বরে বলেছে, এই যে ১৪ হোক বা ১৫ই হোক এই শিশুদের কোনো অবস্থাতেই কোনো ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োগ করা যাবে না।”
তিনি জানান, আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতি বিবেচনায় শিশুদের কাজে যোগ দেওয়ার বয়সসীমা শিথিল করে নির্ধারণ করা হলেও সনদে বেশ কিছু শর্ত দেওয়া হয়েছে।
“এই যে ১৪ বছর বয়সে তাদের কাজে লাগানো হল, এই রেফারেন্সটা, সে যে সাবালক হয়েছে, সেই হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না। এটা তার বিয়ের বয়স হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না।
“বিভিন্ন মামলা মোকাদ্দমায় সে সাবালক হিসেবে বিবেচিত হবে না। মামলা মোকাদ্দমায় যদি সে পড়ে তাহলে তাকে শিশু অপরাধী হিসেবেই গণ্য করতে হবে।”
মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, ১৩৮ নম্বর আইএলও কনভেনশনে ১৮৯ দেশের মধ্যে ১৭৩ দেশ স্বাক্ষর করেছে।
সনদে বলা হয়, মূলত শিশু শ্রমের চাইতে সার্বজনীন প্রাথমিক শিক্ষার উপর জোর দেওয়া হয়েছে এবং ন্যূনতম শিক্ষা সম্পন্ন করার পূর্বে যেন কোনো শিশু শ্রমে প্রবেশ না করে, তার উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
সনদে ১৮ বছরের কম বয়সীদের কাজে নিয়োগে মালিক পক্ষকে শ্রমিকদের নাম ও বয়স তালিকাভুক্তির আইনি বাধ্যবাধকতা দেওয়া হয়েছে (আর্টিকেল-৯)। পাশাপাশি আইন ভঙ্গের জন্য শাস্তির সুপারিশ করা হয়েছে।
ঝুঁকিপূর্ণ কাজের (আর্টিকেল-৩) ধরণ সম্পর্কে এই সনদের বক্তব্য সনদ ১৮২ এর অনুরূপ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। বাংলাদেশ ইতোমধ্যে যাতে অনুসমর্থন দিয়েছে।
আর্টিকেল-৩.১ অনুযায়ী ঝুঁকিপূর্ণ কাজে ১৮ বছরের নিচে কোনো শিশুকে নিয়োগ দেওয়া যাবে না তবে ১৬ বছর বা তার ঊর্ধ্বে কোনো শিশুকে এ কাজে নিয়োগ দেওয়া যাবে দুটি শর্তে।
এর মধ্যে প্রথম শর্তে বলা হয়, ঝুঁকিপূর্ণ কাজের ধরণ সম্পর্কে তাদের আগেই জানাতে হবে এবং প্রয়োজনীয় পর্যাপ্ত সুরক্ষার ব্যবস্থা নিতে হবে (আর্টিকেল-৩.৩)।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম জানান, এর আগে আইএলও’র ৭টি মৌলিক সনদে স্বাক্ষর করা হয়েছে। এছাড়া আরও সাবসিডিয়ারি ৩৫টা কনভেনশনেও স্বাক্ষর করেছে বাংলাদেশ।