অতীতের দুঃখ, বেদনা, সংকট পেছনে রেখে নতুন বছরে বাংলাদেশ অমিত সম্ভাবনার দিকে এগিয়ে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
Published : 31 Dec 2021, 08:24 PM
নতুন বছর উপলক্ষে আদালা বাণীতে এ আশা প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান।
শুক্রবার ঘড়ির কাঁটা রাত ১২টার পেরোলেই শুরু হবে নতুন বছর। করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে গতবারের মত এবারও খোলা জায়গায় ইংরেজি নববর্ষ পালনে বিধিনিষেধ দিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ।
“বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে, তবে বিশ্বব্যাপী নতুন অতি সংক্রামক ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষাপটে সতর্কতা প্রতিপালনের বিকল্প নেই।”
রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, “একজনের আনন্দ যেন অন্যদের বিষাদের কারণ না হয়, সেদিকে খেয়াল রেখে দেশবাসীকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে নববর্ষ উদযাপনের আহ্বান জানাচ্ছি।
“নববর্ষ সকলের মাঝে জাগায় প্রাণের নতুন স্পন্দন, নতুন আশা, নতুন সম্ভাবনা। বিগত বছরের সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনা পেছনে ফেলে নতুন বছরে অমিত সম্ভাবনার পথে এগিয়ে যাক বাংলাদেশ; খ্রিস্টীয় নববর্ষে এ প্রত্যাশা করি। খ্রিস্টীয় নববর্ষ সবার জীবনে বয়ে আনুক অনাবিল আনন্দ ও কল্যাণ।”
“জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের আদর্শে উন্নত-সমৃদ্ধ ও অসাম্প্রদায়িক চেতনার সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলব। নতুন বছরে মানুষে-মানুষে সৌহার্দ্য ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধন জোরদার হোক, সকল সংকট দূরীভূত হোক এবং সকলের জীবনে বয়ে আসুক অনাবিল সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি- এই প্রার্থনা করি।”
সবাইকে নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, “খ্রিস্টীয় নতুন বছর ২০২২ উপলক্ষে আমি দেশবাসী এবং প্রবাসী বাঙালিসহ বিশ্ববাসীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাই।
“প্রকৃতির নিয়মেই যেমন নতুনের আগমনী বার্তা আমাদের উদ্বেলিত করে, তেমনি অতীত-ভবিষ্যতের সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে পুরনো স্মৃতি সম্ভারে হারিয়ে যাওয়ার চিরায়ত স্বভাব কখনও আনন্দ দেয়, কখনও কৃতকর্মের শিক্ষা নব উদ্যোমে সুন্দর আগামীর পথচলার জন্য অনুপ্রেরণা যোগায়।”
২০২০ এবং ২০২১ সালকে বাঙালি জাতির জীবনে ‘এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক’ হিসেবে বর্ণনা করে সরকারপ্রধান জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের কথা তুলে ধরেন।
সরকারের গৃহীত কর্মসূচির ফলে দেশের উন্নয়নের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, “নানা প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে আমরা বাংলাদেশকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি।
“চলমান করোনা মহামারী পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণের লক্ষ্যে আমি ৩১ দফা নির্দেশনা দিয়েছি, ক্রান্তিকাল উত্তরণে ডাক্তার-নার্স-টেকনিশিয়ান নিয়োগ করেছি। দরিদ্র অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো, অর্থনীতির চাকা সচল রাখা এবং উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে ২৮টি প্যাকেজের আওতায় এক লাখ ৮৭ হাজার ৬৭৯ কোটি টাকার প্রণোদনা দিয়েছি।”
বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার চূড়ান্ত সুপারিশ লাভ করেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বাংলাদেশ ‘এসডিজি প্রোগ্রেস অ্যাওয়ার্ড’ লাভ করেছে। আমরা ২০৩১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উচ্চ-মধ্যম আয়ের এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে দ্বিতীয় প্রেক্ষিত পরিকল্পনা বাস্তবায়ন শুরু করেছি।
“আমরা ‘বাংলাদেশ ব-দ্বীপ পরিকল্পনা-২১০০’ বাস্তবায়ন শুরু করেছি। আমাদের সরকার তারুণ্যের শক্তির সঙ্গে ও অত্যাধুনিক প্রযুক্তিজ্ঞান সমন্বিত করে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে নেতৃত্ব দেওয়ার সক্ষম প্রজন্ম সৃষ্টিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”