দুই শিশু তাদের জাপানি মায়ের কাছেই থাকবে

হাই কোর্টের সিদ্ধান্তে দুই শিশুকে কাছে রাখার সুযোগ বাংলাদেশি বাবা পেলেও আপিল বিভাগের এক নির্দেশ অমান্যের পর শিশু দুটির হেফাজত আপাতত পেল তাদের জাপানি মা।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 Dec 2021, 07:19 AM
Updated : 15 Dec 2021, 07:19 AM

বুধবার সর্বোচ্চ আদালত দুই শিশুকে আগামী ৩ জানুয়ারি পর্যন্ত মা নাকানো এরিকোর কাছে রাখার সিদ্ধান্ত দিয়েছে আপিল বিভাগ।

একইসঙ্গে বলা হয়েছে, স্কুলে শিশুদের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে। আর এ কয়দিন বাবা ইমরান শরীফ সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টার মধ্যে সুবিধামত সময়ে শিশুদের সঙ্গে দেখা করতে পারবেন।

প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ বুধবার এ আদেশ দেয়। সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশে গত সোমবার থেকে শিশুরা মায়ের কাছেই আছে।

দুই সন্তানের জিম্মা পেতে জাপান থেকে বাংলাদেশে এসে বাংলাদেশি স্বামীর সঙ্গে আইনি লড়াইয়ে রয়েছেন নাকানো। কয়েক মাস ধরে চলছে তার এই লড়াই।

তা রিট আবেদনে গত ২১ নভেম্বর হাই কোর্ট সিদ্ধান্ত দিয়েছিল, জাপান থেকে ঢাকায় নিয়ে আসা দুই মেয়ে তাদের বাংলাদেশি বাবা ইমরান শরীফের কাছেই থাকবে। তবে জাপানি মা সন্তানদের সঙ্গে একান্তে সময় কাটানোর সুযোগ পাবেন।

হাই কোর্টের সেই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করেন শিশুদের মা নাকানো এরিকো। আপিল বিভাগ রোববার এক আদেশে শিশু দুটিকে মায়ের জিম্মায় রাখার নির্দেশ দিলেও বাবা তা না মানায় উষ্মা প্রকাশ করেন বিচারকরা।

আদালতে সোমবার শিশু দুটিকে বাবার হেফাজত থেকে এনে তাদের সঙ্গে কথা বলে। পরে মায়ের হেফাজতে দেওয়ার আদেশ দেয়।

বুধবার সকালে মামলাটি ওঠলে মায়ের জিম্মার মেয়াদ বাড়িয়ে নতুন আদেশ আদেশ দেয় আপিল বিভাগ।  

আদালতে নাকানো এরিকোর পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী আহসানুল করিম, সঙ্গে ছিলেন মোহাম্মদ শিশির মনির। ইমরান শরীফের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ফাওজিয়া করিম ফিরোজ।

২০০৮ সালে বিয়ে করে জাপানে স্বামী প্রকৌশলী ইমরানকে নিয়ে থাকা চিকিৎসক নাকানো এরিকো দাম্পত্য কলহের জেরে চলতি বছরের ১৮ জানুয়ারি বিচ্ছেদের আবেদন করেন।

এরপর ইমরান স্কুলপড়ুয়া বড় দুই মেয়েকে নিয়ে বাংলাদেশে চলে আসেন। ছোট মেয়ে জাপানে এরিকোর সঙ্গে থেকে যান।

মেয়েদের জিম্মা পেতে করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে বাংলাদেশে আসেন এই জাপানি নারী।

তিনি হাই কোর্টে রিট আবেদন করলে তাদের সমঝোতায় আসতে বলে বিচারক। কিন্তু এই দম্পতি সমঝোতায় না আসায় কয়েক দফা শুনানির পর হাই কোর্ট বাবার হেফাজতে রাখার সিদ্ধান্ত দিয়েছিল।