জনগণের ‘প্রত্যাশার’ কাছাকাছি যাওয়ার আশা দুদক চেয়ারম্যানের

দুর্নীতির অনুসন্ধান ও তদন্তে যে দীর্ঘসূত্রতা আছে, সে কথা স্বীকার করে নিয়ে ‘জনগণের প্রত্যাশার কাছাকাছি’ যাওয়ার পরিকল্পনা সাজানোর কথা বলেছেন দুর্নীত দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 Dec 2021, 07:14 AM
Updated : 9 Dec 2021, 07:14 AM

তবে অর্থ পাচারের তদন্তের ক্ষেত্রে দুদকের এখতিয়ার যে সীমিত, সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে সরকারের অন্যান্য সংস্থার সহযোগিতাও চেয়েছেন তিনি।  

আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার ঢাকার রমনা এলাকায় দুদকের মানববন্ধনে এ বিষয়ে কথা বলেন মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ।

তিনি বলেন, “আমাদের প্রধান সমস্যা হচ্ছে অনুসন্ধান ও তদন্তে যে দীর্ঘসূত্রিতা আছে, ওইটা কীভাবে কমিয়ে আনা যায় সেই পরিকল্পনা করা। আমরা বাস্তবভাবে পরিকল্পনা করছি যে, জনগণের যে প্রত্যাশা দুর্নীতি বিষয়ে, এর কাছাকাছি যাওয়া।”

সম্প্রতি দুদকের পক্ষে অর্থ পাচারকারীদের যে তালিকা উচ্চ আদালতে জমা দেওয়া হয়ছে, সে বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, অর্থ পাচারের বিষয়টি মানিলন্ডারিং আইনের মধ্যে পড়ে।

“আইনের ২৮টি ধারা আছে, শুধুমাত্র একটি ধারা ঘুষ এবং দুর্নীতির মাধ্যমে যে অর্থ পাচার হয়, শুধু সেই অংশটা আমরা দেখতে পারি। ওইটা দেখার জন্য আমাদের তদন্ত-অনুসন্ধানের জন্য নির্ভরশীল থাকতে হয় বিভিন্ন সংস্থার ওপরে। তারা যদি সময়মতো ও যথাযথভাবে চাহিদা অনুযায়ী কাগজপত্র সরবরাহ করে তবেই আমরা দীর্ঘসূত্রিতা কমিয়ে আনতে পারি।”

এক রিট আবেদনের পরিপ্রক্ষিত গত ২৮ ফেব্রুয়ারি সুইস ব্যাংকসহ অন্যান্য বিদেশি ব্যাংকে বাংলাদেশের কে কত টাকা পাচার করেছে, সে তথ্য জানতে চায় হাই কোর্ট।

এর নয় মাস পর গত রোববার কর ফাঁকি সংক্রান্ত পানামা ও প্যারাডাইস পেপার্স কেলেঙ্কারিতে উঠে আসা দেশের ৪৩ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের নামের তালিকা দেয় দুদক।

মানববন্ধনে দুদক কমিশনার (অনুসন্ধান) মো. মোজ্জামেল হক খান বলেন, “অর্থ ফেরত আনার জন্য বিভিন্ন দেশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট অনেক দেশে এমএলএআর (মিউচুয়াল লিগাল অ্যাসিস্টেন্স রিপোর্ট) পাঠানো হয়েছে।”

আরেক কমিশনার (তদন্ত) মো. জহুরুল হক বলেন, “দুদক আদালতে যে ৪৩ জনের তালিকায় দিয়েছে, সেই তালিকায় দুদকের আইনি যা করার সুযোগ আছে করা হবে। তালিকা আরও বড় হতে পারে।”

‘আপনার অধিকার, আপনার দায়িত্ব: দুর্নীতিকে না বলুন’ প্রতিপাদ্য নিয়ে এবার পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস। এ উপলক্ষে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে মানববন্ধনের আয়োজন করেছে দুদক।

সকালে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় কমিশনের প্রধান কার্যালয়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলন এবং বেলুন উড়িয়ে দিবসটি উদ্বোধন করেন দুদক চেয়ারম্যান মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ।

পরে রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন এলাকা ছাড়াও ঢাকার ইংলিশ রোড, ফার্মগেট, মিরপুর-১০, উত্তরা, মতিঝিল শাপলা চত্বর, মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ, যাত্রাবাড়ী ও মুক্তাঙ্গন এলাকায় এক যোগে মানববন্ধন হয়।

দিবসটি উপলক্ষে দুপুরে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে আলোচনাসভার আয়োজন করেছে দুদক। এতে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান বিচারপতি ভার্চুয়ালভাবে অংশ নেওয়ার কথা। 

আরও পড়ুন